শেষ আপডেট: 21st April 2023 05:51
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে কোভিড (Covid) সংক্রমণ? বিজ্ঞানীদের নতুন গবেষণায় দাবি এমনটাই। হাইপারটেনশন ডায়াবেটিসের রোগীদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি, এমন দাবি আগেই করেছিলেন গবেষকরা। সম্প্রতি ব্রিটিশ কলম্বিয়া সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল ও সেন্ট পলস হাসপাতালের ডাক্তাররা দাবি করলেন, হাসপাতালে আসা অন্তত ২০ জন কোভিড রোগীর শরীরে ডায়াবেটিসের (Diabetes) লক্ষণ দেখেছেন তাঁরা। অথচ তাঁদের কারোরই আগে তেমন লক্ষণ দেখা যায়নি, এমনকী পরিবারেও ডায়াবেটিসের ইতিহাস নেই।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও ক্রনিক রোগের কারণে ভাইরাসের (Corona) সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে শরীরে। ডায়াবেটিস, কিডনির রোগ বা ক্রনিক ফুসফুসের রোগ যাদের আছে তারা খুব তাড়াতাড়ি সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটারি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হতে পারে।
ডায়াবেটিস আর হাইপারটেনশনের সঙ্গে করোনার সম্পর্ক নিয়েও নানা মত আছে। এই দুই রোগের প্রভাবে ভাইরাসের সংক্রমণ চটজলদি ধরতে পারে এমন দাবি করা হয়েছে, আবার ভাইরাসের সংক্রমণের কারণেও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
ডায়াবেটিস এমন একটা রোগ যেখানে রক্তে শর্করা বা সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়। এই অতিরিক্ত শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করে ইনসুলিন নামে একটি হরমোন যা প্যানক্রিয়াসের বিটা সেল থেকে নিঃসৃত হয়। সাধারণত, ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খেলে সেটি লিভারে গিয়ে গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয়। ইসুলিন এই গ্লুকোজকে দেহকোষের মধ্যে প্রবেশ করতে সাহায্য করে। কোষের ভেতরে গ্লুকোজ অক্সিডাইজড হয়ে অ্যাডিনোসিন ট্রাই ফসফেট (এটিপি)তৈরি করে যার থেকে শক্তি আসে। এই শক্তিই কোষের পুষ্টি যোগায়। টাইপ-১ ডায়াবেটিস তখনই হয় যখন প্যানক্রিয়াসের বিটা কোষ থেকে ইনসুলিন হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়। ইনসুলিনের ঘাটতি হলে দেহকোষে গ্লুকোজ ঢুকতে পারে না, ফলে শক্তিও তৈরি হয় না।
আর্কটুরাস হানা দিয়েছে দেশে, করোনার এই নতুন প্রজাতির জন্যই কি আক্রান্ত এত বাড়ছে?
বিজ্ঞানীরা বলছেন, সার্স-কভ-২ ভাইরাসের সংক্রমণ হলে প্যানক্রিয়াস থেকে এই ইনসুলিন হরমোন ক্ষরণের মাত্রাই কমে যায়। সেটা কীভাবে? গবেষকরা বলছেন, আরএনএ ভাইরাল স্ট্রেন বিটা কোষগুলিকেই নষ্ট করে দিতে থাকে। যার কারণে হরমোন বাধা পায়। সাধারণত দেখা যায় সার্স-কভ-২ ভাইরাস কোষের এসিই-২ (ACE-2) রিসেপটর প্রোটিন (অ্যাঞ্জিওটেনসিন-কনভার্টিং এনজাইম-২)-এর সঙ্গে জোট বেঁধে দেহকোষে ঢুকে পড়ে। এই রিসেপটর প্রোটিন শরীরের যেসব অঙ্গের কোষে রয়েছে সেখানেই প্রবেশ করে প্রতিলিপি তৈরি করতে পারে ভাইরাস। সেটা হার্ট, কিডনি, লিভার, ফুসফুস, অগ্ন্যাশয় এমনকি অন্ত্রের কোষেও হতে পারে। গবেষকরা বলছেন, এই ভাইরাস প্যানক্রিয়াসে সরাসরি ঢুকে বিটা-কোষকে সংক্রামিত করছে। যার কারণে ইনসুলিন হরমোন বের হতে পারছে না। ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ছে।