শেষ আপডেট: 15th April 2025 10:31
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সারা বিশ্বে নানান দেশ ও জাতির ক্যালেন্ডার বা বর্ষপঞ্জি বিভিন্ন রকমের। কিন্তু বর্তমানে গোটা পৃথিবীতেই যে ক্যালেন্ডার মেনে সবকিছু চলে তা হল খ্রিস্টাব্দ। জিশু খ্রিস্টের জন্ম ও মৃত্যুর আগে-পরের সময়কে সেই হিসাবেই অঙ্ক কষা হয়। ঠিক তেমনই ভারতেরও বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন ক্যালেন্ডারের মান্যতা থাকলেও ইংরেজদের উপনিবেশ থেকে এদেশে সরকারি ক্যালেন্ডার হয়ে গিয়েছে খ্রিস্টাব্দ।
বৈশাখ মাসের প্রথম দিনটিকে পয়লা বৈশাখ অর্থাৎ নববর্ষ বলে বাঙালিরা। শিখ ধর্মের মানুষ দিনটি পালন করেন বৈশাখী হিসেবে। বঙ্গাব্দের সূচনা হয় ৫৯৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে। অর্থাৎ গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের ৫৯৪ খ্রিস্টাব্দে শুরু হয়েছিল বঙ্গাব্দ। তবে ঠিক কোন দিন থেকে সূর্য সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দিন গণনা হয়, তা এখনও অজানা থেকে গিয়েছে।
কিছু ঐতিহাসিক গৌড়ের রাজা শশাঙ্ক নিজে একটি বর্ষপঞ্জি তৈরি করেছিলেন বলে মত দেন। শশাঙ্ক গৌড়ের অধিপতি ছিলেন ৫৯০-৬২৫ সাল পর্যন্ত। তবে তাঁর চালু করা বর্ষপঞ্জি বঙ্গাব্দ না শকাব্দ তা নিয়েও বহুমত আছে। তবে ঐতিহাসিক নীতিশ সেনগুপ্ত তাঁর ‘ল্যান্ড অফ টু রিভার্স: আ হিস্ট্রি অফ বেঙ্গল ফ্রম দ্য মহাভারত টু মুজিব (২০১১)’ গ্রন্থে লিখেছেন, বাঁকুড়া জেলার দুটি শিব মন্দিরে সর্বপ্রাচীন বঙ্গাব্দের নিদর্শন মেলে। একটি শিব মন্দির হল ডিহারগ্রামে এবং অন্যটি সোনাতপন গ্রামে। দুটি মন্দিরই কয়েক হাজার বছরের পুরনো।
তবে অধিকাংশেরই মত হল, বর্তমানে যে বঙ্গাব্দের হিসাব কষা হয় তার প্রচলন হয়েছিল আকবরের আমলে।ঐতিহাসিক কুণাল ও শুভ্রা চক্রবর্তী ‘হিসটোরিক্যাল ডিকশনারি অফ দি বেঙ্গল (২০১৩)’ গ্রন্থে লিখেছেন, আকবর তাঁর রাজজ্যোতিষী আমির ফতেহউল্লা শিরাজিকে ডেকে বলেন, চান্দ্রবর্ষ হিজরি এবং সূর্য সিদ্ধান্ত মতের হিন্দু পঞ্জিকার মিশ্রণে একটি নতুন পঞ্জিকা তৈরি করতে। যা কিনা শুরু হবে কৃষি মরশুমের পরে পরেই অর্থাৎ নতুন ফসল ঘরে ওঠার সময়। যাকে বলা হবে ফসলি শান বা কৃষি পঞ্জিকা।
আকবরের নির্দেশ মতো মাসগুলির নাম সংস্কৃততেই রাখা হয়েছিল। কিন্তু পঞ্জিকা তৈরি হয় হিজরি ক্যালেন্ডারের মূল্য বজায় রেখে। বঙ্গাব্দেও ৩৬৫ দিন রয়েছে, কোনও মাস ২৯ দিনে কোনও মাস ৩২ দিনে করে চান্দ্র মাসের সময়ের সঙ্গে সূর্য সিদ্ধান্তের ভারসাম্য আনা হয়েছিল।