শেষ আপডেট: 23rd October 2024 00:26
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কথায় বলে, সাবধানের বিকল্প নেই। ঘূর্ণিঝড় দানার মোকাবিলায় সময় থাকতে বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছে রাজ্য। মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক থেকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ২৪ অক্টোবর রাত থেকে ২৫ অক্টোবর সকালের মধ্যে সাগরদ্বীপে বা পুরীতে ল্যান্ডফল করতে পারে ঘূর্ণিঝড় দানা। তখন ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিমি।
মুুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমরা একদিন আগে থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। ২৩ তারিখ থেকেই সমুদ্র সংলগ্ন এলাকায় গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। বন্ধ রাখা হবে ফেরি সার্ভিসও। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সাত জেলায় পাঠানো হচ্ছে প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারিদের।"
ঘূর্ণিঝড় দানার দাপটে জেলায় জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। দুর্গা পুজোর মুখে ভারী বৃষ্টির সময়ে ডিভিসি জল ছাড়ায় জেলায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।
এদিন সেই প্রসঙ্গ টেনে ডিভিসিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "যখন বৃষ্টিতে ভাসব, তখন তোমরাও জল ছেড়ে আরও ভাসিয়ে দেবে বললে হবে না। আমি আগে থেকেই জানিয়েছি, এই ক'দিন যেন ডিভিসি জল না ছাড়ে।"
রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান জানান, ঘূর্ণিঝড় দানার দাপটে দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এর পাশাপাশি কলকাতা হাওড়া, হুগলি বাঁকুড়া , পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলায় আংশিক প্রভাব পড়তে পারে। ভারী বৃষ্টির সঙ্গে প্রবল ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস।
মমতার কথায়, "কখন কী হবে তো বলা যায় না, তাই আগামীকাল থেকেই আমরা সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি।" সতর্কতা হিসেবে বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সাত জেলায় স্কুল বন্ধ রাখার ঘোষণাও করেছে রাজ্য।
নবান্নের নির্দেশে এদিন থেকেই সাত জেলায় তৈরি থাকছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী সহ স্থানীয় প্রশাসন। মনিটরিংয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলাগুলিতে পাঠানো হচ্ছে একজন করে প্রিন্সিপাল সেক্রিটারিকে। দুর্যোগের মোকাবিলায় জেলা ও রাজ্যে ২৪ ঘণ্টার জন্য খোলা থাকছে কন্ট্রোল রুম।
এদিকে পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ২৪ তারিখ মন্ত্রিসভার বৈঠক আছে। তবে সমুদ্র উপকূলবর্তী জেলার মন্ত্রীদেরকে এলাকায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
যেকোনও বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় চলে যাওয়ার পরও ফের আর একবার প্রভাব পড়ে। এ ব্যাপারেও প্রশাসনিকস্তরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অতীতে আমপানের সময় চার/পাঁচ লাখ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে ছিল রাজ্য। সেই প্রসঙ্গ টেনে এবারেও উপকুলবর্তী এলাকায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমরা মানুষকে সতর্ক করতে পারি। কিন্তু কেউ যদি এই বার্তা জানার পরেও পুরীতে থাকেন তাহলে আমরা আর কী করতে পারি।"