ফাইল ছবি।
শেষ আপডেট: 4 May 2025 22:29
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ২৬ হাজার চাকরি বাতিল (26,000 Job Cancel) মামলার রায় (SSC Recruitment Scam) পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) রাজ্য সরকার ও স্কুল সার্ভিস কমিশন। সূত্রের খবর, আগামী ৮ মে ওই মামলার শুনানি হতে পারে।
রাজ্যের এই পদক্ষেপে ‘যোগ্য’-তালিকায় যাঁদের নাম আসেনি, তাঁরা যেমন নতুন করে আশার আলো দেখছেন তেমনই সরকারের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ চাকরিহারা শিক্ষকদের সংগঠন ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ'। সংগঠনের আহ্বায়ক মেহেবুব মণ্ডল বলেন, সরকার আমাদের সঙ্গে বৈঠকে যে কথা বলেছিল আর বাস্তবে যা করছে, সেই বলা কথার সঙ্গে কাজের কোনও মিল নেই।
মেহেবুবের কথায়, "পিছনের দরজা দিয়ে যারা চাকরি পেয়েছিল, সরকার তাঁদেরকে বাঁচাতেই ফের সুপ্রিম কোর্টে গেছে। এটা আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হল।" প্রতিবাদে আবারও বৃহত্তর আন্দোলনে নামার ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি। মেহেবুব বলেন, "এভাবে আমাদের চাকরি চলে গেলে আমরাও ছেড়ে কথা বলব না। বিধানসভা ভোট করতে দেব না।"
‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ' এর অভিযোগের সঙ্গে সহমত গেরুয়া শিবির। বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "রাজ্যের রিভিউ পিটিশন থেকেই তো স্পষ্ট, ওরা প্রাতিষ্ঠানিক লুটকে রক্ষা করতে চাইছে। কারণ, যাঁরা চাকরি বিক্রি করেছে আর যাঁরা কিনেছে, তাদের দু'পক্ষকেই রক্ষা করাটাই সরকারের প্রধান মাথাব্যথা।"
পাল্টা প্রতিক্রিয়া ধেয়ে এসেছে শাসক শিবর থেকেও। তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, "রাজ্য সরকার সমস্ত চাকরিহারাদের পাশে রয়েছে, তাঁদের চাকরি রক্ষার চেষ্টা করছে। অথচ রাজনীতি করার জন্য বিজেপি, বামেরা চাকরি খেয়ে নেওয়ার পক্ষে লড়াই করছে। বাংলার মানুষ সবই দেখতে পাচ্ছেন।"
তবে রাজ্যের এই পিটিশনে কোনও লাভ হবে না বলেই মনে করেন এসএসসি মামলার অন্যতম আইনজীবী, সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, "রাজ্য সরকার যে অযোগ্যদের বাঁচাতে চাইছে সেটা স্পষ্ট। তবে এসব পিটিশনে কোনও লাভ হবে না, অযথা সরকাররে টাকা নষ্ট করছে!"
অন্যদিকে সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ‘যোগ্য’-তালিকায় যাঁদের নাম আসেনি, তাঁদের সংগঠন ‘ইউনাইটেড টিচিং অ্যান্ড নন-টিচিং ফোরাম ২০১৬’। সংগঠনের নেতা বিপ্লব বিবার বলেন, ‘‘সরকারের এই মানবিক ভূমিকাকে আমরা সমর্থ জানাচ্ছি।"
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগে গত ৩ এপ্রিল এসএসসির প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট। এ ব্যাপারে আগেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল পর্ষদ। আদালতে পর্ষদ বলে, নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এবং চলতি শিক্ষাবর্ষ শেষ না হওয়া পর্যন্ত, অযোগ্য বলে চিহ্নিত না হওয়া শিক্ষকদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমোদন দেওয়া হোক। তা না হলে রাজ্যের শিক্ষা পরিকাঠামো ভেঙে পড়বে। রাজ্যের সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
এরপর চাকরিহারাদের সঙ্গে বৈঠকও করে রাজ্য। তবে আলোচনা না করে রাজ্য একতরফা ভাবে সুপ্রিমকোর্টে রিভিউ পিটিশ করেছে, এই অভিযোগে ফের বৃহত্তর আন্দোলনের পরিকল্পনা করছেন চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ।