শেষ আপডেট: 25th April 2024 13:13
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি চলে গেছে এই নির্দেশের ফলে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধেই অসহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে সমস্ত অভিযোগ খণ্ডন করে দিলেন এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার।
'৫ হাজার জনের জন্য কেন ২৬ হাজার জন ভুগবেন, কেন যোগ্য-অযোগ্যদের বিভাজন করা হল না', মূলত এই প্রশ্নই তুলেছে এসএসসি। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, যোগ্য এবং অযোগ্যদের তালিকা আদালতে জমাই দেয়নি কর্তৃপক্ষ। তবে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এসএসসি চেয়ারম্যান জানান, যোগ্য এবং অযোগ্যদের তালিকা কলকাতা হাইকোর্টে জমা দিয়েছিল এসএসসি। গত ১৩ ডিসেম্বর হলফনামা জমা দেওয়া হয়েছিল। তাতে আদালত সন্তুষ্ট না হওয়ায় ফের ১৮ তারিখ হলফনামা জমা দেওয়া হয়।
এসএসসি চেয়ারম্যান স্পষ্টত জানান, ''গ্রুপ সি, গ্রুপ ডির চাকরি আদালত বাতিল করে দিয়েছিল। এই ক্ষেত্রে আমাদের রুল ১৭-এর মতো সমগোত্রীয় রুল নেই, তাই আমরা সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করতে পারেনি। সেটা জেনে আদালত ওঁদের চাকরি বাতিল করে। পরে আদালত আমাকে তলব করে। ২০ ডিসেম্বর আমরা পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট স্ট্যাটেসটিক্যাল রিপোর্ট জমা দিই। অযোগ্যদের তালিকা বলতে যা বোঝানো হচ্ছে, তা হলফনামা আকারে হাইকোর্টে পেশ করেছিলাম।''
কলকাতা হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, অযোগ্যদের চিহ্নিত করা যায়নি। বেআইনিভাবে যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেনি এসএসসি। সেই প্রেক্ষিতেই গোটা প্যানেল বাতিল করে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে বলেছে আদালত। ইতিমধ্যেই চাকরি বাতিলের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য সরকার। শীর্ষ আদালতে পৃথক ভাবে মামলা করেছে রাজ্যের শিক্ষা দফতর, এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদও।
সোমবার সকালেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ শাব্বার রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালের এসএসসির পুরো প্যানেলের মোট ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি, যারা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের প্রাপ্ত পুরো বেতন বার্ষিক ১২ শতাংশ সুদ-সমেত ফেরত দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যা নিয়ে এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়। যদিও সকলকে টাকা ফেরত দিতে হবে না।
প্যানেল বহির্ভূত চাকরিপ্রার্থী যারা নিয়োগ পেয়েছে, পাশাপাশি যারা ব্ল্যাঙ্ক (ফাঁকা) ওএমআর শিট জমা দিয়েও চাকরি পেয়েছে তাদের চাকরি পাওয়ার পর এতদিন পর্যন্ত বেতন ফেরত দিতে হবে। একই সঙ্গে, কলকাতা হাইকোর্ট সোমবারের রায়ে বলেছে, সংবিধানের ১৪ এবং ১৬ ধারা লঙ্ঘন করে যেসব প্রার্থীর নিয়োগে সম্মতি দেওয়া হয়েছিল তাদের চাকরি বাতিল। অর্থাৎ সকলকে নয়, এইভাবে যারা চাকরি পেয়েছেন তাদেরই বেতন ফেরত দিতে হবে।