শেষ আপডেট: 16th September 2024 16:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অবস্থানরত জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলার ছক করা হচ্ছে। এই দাবি করে শুক্রবার একটি অডিও প্রকাশ করেছিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তারপরই সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই নেতা কলতান দাশগুপ্তকে গ্রেফতার করে বিধাননগর পুলিশ। অভিযোগ, আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের ওপর হামলার ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন এই বাম যুবনেতা।
পুলিশ সাংবাদিক বৈঠক করে পরিষ্কারভাবে জানিয়েছিল, 'অডিও ক্লিপের সত্যতা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। তা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। তদন্তের সময় এঁদের স্বরের নমুনা মিলিয়ে দেখব। আইনানুগ পদ্ধতিতেই হবে তদন্ত।'
কিন্তু পুলিশ ও তৃণমূলের অভিযোগ নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুললেন যুব বাম নেতারা। সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ এদিন বলেন, 'পুলিশ কি তৃণমূলকে অডিও সাপ্লাই করে?' প্রশ্ন তুলেছেন আরও এক বাম নেতা সৃজন ভট্টাচার্য। দ্য ওয়ালকে সৃজন বলেন, 'রবিবার শতরূপদা সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছেন, আগে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের এফআইআর, পরে কুণাল ঘোষ সাংবাদিক বৈঠক করে অডিও ফাঁস করেছেন। আমি যদি ধরেও নিই যে পুলিশের কাছে লিক রেকর্ডিং গিয়েছে, তাহলে পুলিশ এফআইআর করার পরে তা কুণাল ঘোষের কাছে এল কী করে? পুলিশই কি তাহলে কুণালের কাছে লিক করিয়ে দিল? তবে কি পুলিশ যে কোনও তদন্তের তথ্য তৃণমূলের হাতে তুলে দেয়?'
সন্দেশখালির ঘটনায় এলাকার প্রাক্তন সিপিআইএম বিধায়ক নিরাপদ সরদারকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সৃজনের প্রশ্ন, 'নিরাপদ সরদারের গ্রেফতারির ঢঙেই কি এবারও আগে এফআইআর পরে অভিযোগ? বারবার পুলিশের ভূমিকায় অসঙ্গতি থাকছে।'
সৃজন বলেন, কলতানদার সঙ্গে যাঁর কথোপকথনের অডিও পাওয়া গেছে ওই যুবকের বাড়ি ঘটনাচক্রে আমার বাড়ির কাছেই। তাঁর পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের যোগাযোগ, কেউ পুলিশে চাকরিরত এরকমও শোনা যাচ্ছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে 'গড ফাদার' বলেও অভিহিত করে পোস্ট করেছেন। তিনি কোন অতিবাম সংগঠন তা তো বোঝা যায়নি, বরং বোঝা যাচ্ছে তৃণমূল আশ্রিত কেউ।' সবটা মিলিয়েই বামনেতা মনে করছেন কলতানের বিরুদ্ধে একটা ঘৃণ্য চক্রান্ত করা হয়েছে।
কলতানের সঙ্গে সঞ্জীব দাস নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত সঞ্জীব অডিওর কথা স্বীকারও করেছেন। কিন্তু কলতানের গলার স্বর নিয়ে ধন্ধ রয়েইছে। সৃজনের মতে, 'যে কোনও একজন সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারের কাছে যদি রেকর্ডিং তুলে দেওয়া যায়, তিনি বিশ্লেষণ করে পাঁচ মিনিটে বলে দিতে পারবেন যে এই রেকর্ডিং এডিট করা।' এআই, ডিপফেক, সফটওয়্যার ব্যবহার করে এডিট তো বটেই, সৃজন বিশ্বাস করেন, আড্ডার ছলে কলতানের কখনও বলা কোনও কথা কেটে বসিয়েও চক্রান্ত করা হতে পারে।
সুজয় ভদ্রর প্রসঙ্গ টেনে সৃজন বললেন, 'কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর মেলাতে কত সময় নেওয়া হয়েছিল? সেলিমদা বারবার অভিযোগ করেছিলেন, এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে জোর করে কণ্ঠস্বর পাল্টানোর চেষ্টা হয়েছে। এদিকে কলতান দাশগুপ্তরটা এক দিনে বেরিয়ে গেল। পুলিশের এই তৎপরতা বিশ্বাসযোগ্য?'
সৃজন ভট্টাচার্য মনে করছেন, যাঁরাই আরজি করের নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে সোচ্চার হচ্ছেন, তাঁদেরই এভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বাম নেতার কথায়, 'সেকেন্ড ইয়ারের রূপসা মণ্ডল হোক বা বাম যুব নেতা কলতান দাশগুপ্ত, কেউ হার মানবে না।' যদিও রূপসা মণ্ডল কালই জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।