শেষ আপডেট: 8 January 2024 07:42
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতারের পর রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলার তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বালু-বাকিবুরের মাঝেই নতুন সংযোজন বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য। আর তিন ব্যক্তির মাঝে ঢুকে পড়েছে এক রহস্যময় চিঠি। সেই চিঠিকে ঘিরেই বিপদ বেড়েছে শঙ্কর আঢ্য ওরফে ডাকুর।
এদিকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তাঁর মেয়ে প্রিয়দর্শিনী মল্লিককে কেন ‘ডাকু’র কাছ থেকে টাকা আনতে বলেছিলেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে যখন মরিয়া ইডি, তখনই বালুর সঙ্গে সম্পর্কে ছেদের পুরনো গুঞ্জন শোনা গেল খোদ শঙ্করের মুখে।
সোমবার সকালে শারীরিক পরীক্ষার জন্য শঙ্কর আঢ্যকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। সেসময় শঙ্কর যখন জ্যোতিপ্রিয়র সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে পড়েছেন তখনই পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন শঙ্কর। বলেন, “যদি এত ভাল সম্পর্ক থাকত, তাহলে জ্যোতিপ্রিয়বাবু আমাকে সরিয়ে দিলেন কেন? কেন পুরসভায় আমাকে টিকিট দিলেন না?”
গত শনিবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে ইডি দাবি করেন, রেশন দুর্নীতিতে কার কাছ থেকে কত টাকা নিতে হবে এবং কত টাকা দিতে হবে, সংশ্লিষ্ট চিঠিতে সেই উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু গ্রেফতার হওয়ার পর বালুকে চিনতেই অস্বীকার করেছিলেন শঙ্কর। সোমবার এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি সটান লেনদেনের কথা উড়িয়ে দেন। বলেন,“কোনও দিন ১০০ টাকাও আমাকে দেননি জ্যোতিপ্রিয়।” জ্যোতিপ্রিয়র মেয়ে প্রিয়দর্শিনী তাঁকে চিনতেন না বলেও দাবি করেছেন শঙ্কর।
বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন শঙ্কর আঢ্য। কিন্তু ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বনগাঁয় তৃণমূলের খারাপ ফল হওয়ার পর পুর প্রশাসক পদ থেকে শঙ্করকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। শুধু তাই নয়, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনেও বনগাঁয় খারাপ ফল হওয়ার শঙ্করের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন একাধিক কাউন্সিলর। গত পুর নির্বাচনে আর টিকিট পাননি তিনি। এদিকে উত্তর ২৪ পরগনায় যখন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাপট চরমে, তার মধ্যেই পুর প্রশাসকের পদ থেকে সরে যেতে হয়েছিল শঙ্করকে। সেই সময়েই দুই নেতার মধ্যে সম্পর্কে চিড় নিয়ে কানাঘুষোও শোনা গিয়েছিল।
ইডি কর্তাদের দাবি, গত ১৬ ডিসেম্বর কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘর থেকে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা খোলা হচ্ছিল। মেয়েকে ওইদিন হাতে লেখা একটা চিঠি দিচ্ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। এর আগেও বাবা ও মেয়ের মধ্যে এরকম চিঠি চালাচালি হয়েছে বলে সন্দেহ ইডির। তবে সেদিন তাঁদের চিঠি কর্তব্যরত জওয়ানরা দেখে ফেলায় সেটা বাজেয়াপ্ত করা হয়।
ইডি সূত্রের দাবি, ওই চিঠিতে শুধু শঙ্করের নামই ছিল না, সঙ্গে উল্লেখ রয়েছে বিপুল টাকা পয়সা লেনদেনের হিসাব। এমনকী ইতিমধ্যে জেরায় শঙ্কর আঢ্যর সঙ্গে ব্যবসায়িক যোগাযোগের কথা স্বীকার করেছেন বালু।