শেষ আপডেট: 26th May 2022 12:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: যৌনবৃত্তি বা সেক্স ওয়ার্ককে (Sex Work) বৈধ পেশা বলল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। আজ একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এন নাগেশ্বর রাওয়ের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ বলেছে, প্রাপ্তবয়স্ক কেউ স্বেচ্ছায় এই পেশা বেছে নিলে তা অপরাধ বলে বিবেচিত হবে না।
মামলার বিষয় ছিল যৌন কর্মীদের প্রতি পুলিশ-প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গী। যৌন কর্মীদের বিভিন্ন সংগঠনের অভিযোগ, পুলিশ অকারণে তাদের হেনস্থা করছে। স্রেফ যৌন পেশায় যুক্ত থাকার কারণে পুলিশ তাদের আটকে রাখছে। আদালতে হাজির করছে। সামাজিক অবমাননার শিকার হতে হচ্ছে তাদের।
আদালত আজ বলে আর পাঁচটা পেশার মতো যৌনতা বিক্রিও (Sex Work) একটি পেশা। পেশা বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা সংবিধানে উল্লেখিত মৌলিক অধিকারের অংশ। বিচারপতি বলেছেন, যে কোনও পেশার মতোই যৌনবৃত্তিতে যুক্ত মানুষদের রাষ্ট্র ও সমাজের কাছ থেকে সমান মর্যাদা প্রাপ্য।
বিচারপতি রাওয়ের ডিভিশন বেঞ্চ সংবাদ মাধ্যমকেও সতর্ক করেছে। তারা বলেছে, যৌনবৃত্তিতে যুক্ত কেউ না চাইলে তাঁর পরিচয় ফাঁস করা উচিত নয়। যৌনবৃত্তিতে যুক্ত লোকজনের সামাজিক মর্যাদা রক্ষা সংবাদমাধ্যমেরও কর্তব্য।
সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ আজ এই বিষয়ে সরকারের কর্তব্য স্থির করে দিয়েছে। আদালত বলেছে, যৌনবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত মানুষদের প্রতি পুলিশ ও প্রশাসনের লোকজনের মানসিকতার পরিবর্তন করতে সরকার কী পদক্ষেপ করছে কেন্দ্রীয় সরকারকে ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে তা আদালতকে জানাতে হবে।
প্রসঙ্গত, আইনের চোখে যৌনবৃত্তি বলতে দেহ ব্যবসা ছাড়াও পর্ণোগ্রাফি, যৌনতার উদ্দেশে দেহ প্রদর্শন ইত্যাদিকে ধরা হয়।
কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদালতের এই নির্দেশের সঙ্গে একমত হবে কিনা ত নিয়ে ঘোর সংশয় আছে। এর আগে সংবিধানের ৩৭৭ অনুচ্ছেদ সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করলেও কেন্দ্রীয় সরকার তাতে আপত্তি তোলে। ওই অনুচ্ছেদে সমকামিতাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং অপরাধ বলে ঘোষণা করা হয়েছিল।
কলকাতার সংগঠন দুর্বার দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে যৌনবৃত্তিকে বৈধতা দিতে হবে।দুর্বারের মুখপাত্র মহাশ্বেতা মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘দুর্বারের দীর্ঘদিন যৌনকর্মীদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। সুপ্রিম কোর্টের রায় আমাদের আন্দোলনেরও জয়। সুপ্রিম কোর্টকে ধন্যবাদ। যৌনপেশা আইনি স্বীকৃতি পাওয়ার পথে একধাপ এগিয়ে গেলাম আমরা। এবার থেকে যৌনকর্মীদের আর কেউ অপরাধী বলতে পারবে না। আমরা এবার নতুন স্ট্র্যাটেজি তৈরি করব।
মহাশ্বেতা আরও বলেন, এই পেশা পুরোপুরি আইনি করার বিষয়ে প্রতিটি জেলার সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। বিষয়টি সবাইকে জানাতে হবে। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করেছিলেন দুর্বারের সম্পাদক কাজল বোস। দশদিন আগে তিনি মারা গেছেন। তিনি বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন।’
শহরজুড়ে স্বস্তির বৃষ্টি, সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া! পড়ন্ত বিকেলে কাকভেজা কলকাতা