শেষ আপডেট: 30th June 2023 09:54
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আমাদের ছায়াপথ বা মিল্কিওয়েজুড়ে ছুটে বেড়াচ্ছে ভুতুড়ে কণা!
তারা থামছেই না। আচমকা আসছে, আবার মিলিয়ে যাচ্ছে। তীব্র গতিতে ছায়াপথের এদিক থেকে ওদিকে দৌড়ে বেড়াচ্ছে। এই ভূতুড়ে কণাদের (Ghost Particles) দেখা পেতে এতদিন হন্যে হয়ে ঘুরছিলেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা। টেলিস্কোপ তাক করে, মহাকাশযান পাঠিয়ে যত্রতত্র অশরীরীদের খোঁজ চলছিল। অবশেষে তাদের কয়েকটিকে দেখা গেল আমাদের ছায়াপথেই।
ঈশ্বরকণা’র পর এ বার ধরা দিল ‘ভূতুড়ে কণা’ও। এই প্রথম কোনও পার্থিব প্রযুক্তির জাঁতাকলে ধরা দিল অশরীরী কণারা। মহাকাশ বিজ্ঞানের ইতিহাসে এই ঘটনাকে নতুন মাইলফলকই বলছেন বিজ্ঞানীরা।
ভূতুড়ে কণারা কিন্তু ভুত নয়। তারা দব্যি ছটফটে, উজ্জ্বল কণার স্রোত। শুধু তাদের দেখা পাওয়া যায় না, অথবা দেখা দিয়েই মিলিয়ে যায়, তাই এমন নাম। প্রায় ১৪০০ কোটি বছর আগে বিগ ব্যাং বা মহা-বিস্ফোরণের পর এই ব্রহ্মাণ্ডে আদিমতম কণাদের জন্ম হয়েছিল। কীভাবে এই কণারা এল, কীভাবেই বা তাদের সৃষ্টি হল তার সবটা এখনও জানা যায়নি। বিগ ব্যাং-এর মতোই তা রহস্য হয়ে রয়ে গেছে।
সার্ন-এর এলএইচসি-তে প্রথম ধরা দিয়েছিল ঈশ্বরকণা। পদার্থবিজ্ঞানের পরিভাষায় যার নাম- ‘হিগ্স বোসন’। যা পরমাণুর নিউক্লিয়াসে থাকা প্রোটনের চেয়ে বহু গুণ ভারী। এতদিন কোনও পার্থিব প্রযুক্তিতেই নাগাল পাওয়া সম্ভব হয়নি এই ভূতুড়ে কণার। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আগামী দিনে এই কণাদের খুঁটিনাটি আরও সঠিক ভাবে জানা গেলে, ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির রহস্য ভেদ হবে। ভূতুড়ে কণাদের নাম নিউট্রিনো। এরা অশরীরীদের মতো যে কোনও বস্তুর মধ্যে দিয়েই চলে যেতে পারে। সম্প্রতি এক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, নিউট্রিনো কণা নাকি ইলেকট্রনের চেয়ে ১ কোটি ভাগ হালকা।
পৃথিবীতে এমনি জল ছিল না, মহাকাশ থেকে শুষে নিয়ে এত নদী নালা সাগর
এদের কোনও আধান নেই। ভর প্রায় নেই বললেই চলে। এরা ছোটে আলোর গতিবেগে। ব্রহ্মাণ্ডের সর্বত্র আলোর বেগে দৌড়ে বেড়াচ্ছে এরা। সামনে আসা যে কোনও বস্তুকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়ে এরা বেরিয়ে যেতে পারে। হঠাৎ করে উধাও হয়ে যেতে পারে, আবার প্রকাশ্যে আসতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমাদের শরীর ভেদ করে প্রতি সেকেন্ডে কয়েক লক্ষ কোটি ভূতুড়ে নিউট্রিনো কণা বেরিয়ে যাচ্ছে, আমরা টেরই পাচ্ছি না। এরা খালি চোখে ধরা দেয় না। তেমন কোনও প্রযুক্তি নেই যা অত্যন্ত উচ্চশক্তিসম্পন্ন মহাজাগতিক ভূতুড়ে কণাদের ধরে রাখতে পারে। মহাকাশবিজ্ঞানের আধুনিক গবেষণায় আমাদের ছায়াপথে আচমকা ধরা দিয়েছে তারা। আর সেই মুহূর্তটাই ঐতিহাসিক হয়ে গেছে।