শেষ আপডেট: 20th August 2023 10:46
দ্য ওয়াল ব্যুরো: একেই বলে তাড়াহুড়োর বিপদ। এতক্ষণ চাঁদের কক্ষে ল্যাজেগোবরে অবস্থায় ছিল রাশিয়ার চন্দ্রযান লুনা-২৫ (Luna-25)। এবার ভেঙেচুরে হুড়মুড়িয়ে চাঁদের মাটিতেই আছড়ে পড়ল রুশ চন্দ্রযান।
ঝপাং করে চাঁদে নামতে গিয়ে ধপাস করেই আছড়ে পড়ল রুশ চন্দ্রযান। শর্টকাটে তাড়াতাড়ি চাঁদে যেতে গিয়ে একেবারেই খেল খতম হয়ে গেল লুনার। উৎক্ষেপণের ১০ দিনের মাথাতেই রাশিয়ার চন্দ্রযান একেবারে ধ্বংস হয়ে গেল।
রুশ মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমস খোলসা করে কিছুই বলছে না। শুরুতে তারা জানিয়েছিল, যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়েছে লুনার। তাই নির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী যে পথে তাড়াতাড়ি গিয়ে চাঁদে নামার কথা, সেই পথ দিয়ে আর নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না লুনাকে। ফলে আপাতত সে থমকে গেছে চাঁদের সর্বশেষ কক্ষেই। সফট ল্যান্ডিংয়ের প্রক্রিয়া আর শুরু করা যায়নি। এরপর খবর এল একেবারে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে লুনা-২৫।
ভারতের চন্দ্রযান একেবারে নিয়ম মেনে ধীরেসুস্থে চাঁদের কক্ষপথ ধরে এগিয়েছে। চাঁদের সবকটা কক্ষে পাক খেয়ে দুবার ডিবুস্টিং করে গতি কমিয়ে সময় মেপে চাঁদের (Luna-25) দিকে এগোচ্ছে। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের বাধাও কাটিয়েছে নিয়ম মেনেই ধীরে ধীরে। রুশ মহাকাশযান এত নিয়মের ধার ধারেনি। হুশ করে উড়ে ঝপাং করে চাঁদে নামার লক্ষ্যে ছিল তারা। এই বেশি তাড়াহুড়োই কাল হয়েছে। চাঁদের নামার আগে শনিবার ল্যান্ডার লুনা ২৫-র শেষ ল্যাপের কক্ষপথে প্রবেশের কথা ছিল। যার পোশাকি নাম প্রি ল্যান্ডিং ওরবিট। কিন্তু সেখানে ঢোকার মুখেই লুনা ২৫-এ যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। এর পরই সেটি নিয়ন্ত্রণ হারায় বলে অনুমান।
তাছাড়া বিজ্ঞানীরা বলছেন, শর্টকাটে তাড়াতাড়ি ভারতের আগে চাঁদে মহাকাশযান নামানোর লক্ষ্য ছিল রাশিয়ার। বিপদ হয়েছে সেখানেও। একেই লুনার (Luna-25) জ্বালানি ভারতের চন্দ্রযানের থেকে কম, তার উপরে ডিবুস্টিং করে গতি কমানোর প্রক্রিয়াতেই যায়নি রাশিয়া। সরাসরি থ্রাস্ট দিয়ে চাঁদের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছিল লুনাকে। সেখানেই গলদটা হয়েছে। চাঁদের আকর্ষণের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরেই হয়ত যান্ত্রিক গোলযোগ হয়েছিল রুশ চন্দ্রযানে।
আরও পড়ুন: বিক্রমকে আদর করে কাছে টানল চাঁদ, দ্বিতীয় 'ডিবুস্টিং' শেষে চাঁদের আঙিনায় চন্দ্রযান
বিজ্ঞানীরা এখন বলাবলি করছেন, ভারতের চন্দ্রযান অনেক বেশি উন্নত। এতে লুনার থেকেও বেশি আধুনিক যন্ত্রপাতি আছে। ইসরোর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, যদি গতিবেগে কোনও গোলমাল হয় বা চাঁদের পিঠে নামতে দেরি হয়, তাহলেও যাতে পর্যাপ্ত জ্বালানি থাকে সেই জন্য অতিরিক্ত জ্বালানি ভরে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে বিকল্প কোনও জায়গাতেও নামতে পারে ল্যান্ডার বিক্রম। সেই সঙ্গেই আছে নতুন সেন্সর যার নাম লেসার ডপলার ভেলোসিটি মিটার। তিনটি ভেলোসিটি ভেক্টরও আছে ল্যান্ডারে। আছে উন্নতমানের ক্যামেরা ল্যান্ডার হরাইজন্টাল ভেলোসিটি ক্যামেরা (LHVC) এবং ল্যান্ডার পজিশন ডিটেকশন ক্যামেরা (LPDC)। মোট ১৩টি ‘থ্রাস্টার’ রয়েছে, যা সফট ল্যান্ডিং করতে সাহায্য করবে।