শেষ আপডেট: 8th March 2025 19:16
দ্য় ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: অল্প জায়গায় কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষের দিশা দেখিয়ে গোটা বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছেন মৎস বিজ্ঞান নিয়ে গবেষনারত বঙ্গকন্যা রিনা চক্রবর্তী। নারী দিবসের প্রাক্কালে তাঁকে সম্মানিত করলেন রাষ্ট্রপতি।
বাঙালিদের মাছে-ভাতে বাঙালি বলা হয়ে থাকে। সেই মাছ অর্থাৎ মৎস চাষ নিয়ে গবেষণায় গোটা বিশ্বে সাড়া ফেলে দেওয়া বাঙালি কন্যা রিনা চক্রবর্তীকে সম্মানিত করলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রাক্কালে বাংলার এক চাষির কন্যার এই সাফল্যে গর্বিত গোটা জেলা।
রাজ্যের শস্যগোলা হিসাবে পরিচিত পূর্ব বর্ধমান জেলা ।এই জেলার খণ্ডঘোষ ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম শাঁকারী।অখ্যাত এই গ্রামের চাষি প্রশান্ত চক্রবর্তীর কন্যা ডঃ রিনা চক্রবর্তী। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুরু হয় তাঁর শিক্ষা জীবন। বর্তমানে তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে ’মৎস্য বিজ্ঞান’ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান।তাঁর গবেষণার মূল বিষয় হল, জলের অপচয় না করে,অল্প জায়গায় কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ। শুধু এই পদ্ধতিতে মাছ চাষই নয়, মাছ চাষ করে লাভের দিশাও দেখা গিয়েছে রিনা চক্রবর্তীর গবেষণায়।
মৎস বিজ্ঞান নিয়ে রিনা চক্রবর্তীর এই গবেষণা শুধু ভারতে নয়, বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছে। দেশের এমন এক প্রতিভাবান গবেষককে সম্মান জানাতে ৩ মার্চ দিল্লিতে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সম্মান জানান রিনা চক্রবর্তীকে। পুরস্কৃতও করেন। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডঃ সুকান্ত মজুমদার ছাড়াও দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী কর্তৃক সম্মানিত হওয়া কৃষি বিজ্ঞানী ডঃ দিলীপ চক্রবর্তীও উপস্থিত ছিলেন। দিলীপবাবু হলেন গবেষক রিনা চক্রবর্তীর দাদা।
সম্মান পেয়ে রিনা বলেন, "পড়াশোনার সময় আমার বাবা-মা আমায় প্রেরণা যোগাতেন। আমি যখন পড়ুয়া ছিলাম তখন এত সুযোগসুবিধা ছিল না। লেখাপড়া শেখার জন্য তাই আমাকে অনেক স্ট্রাগেল করতে হয়েছে। সেই স্ট্রাগেলের ফল হিসেবেই এই সম্মান লাভ সম্ভব হয়েছে।"
গবেষক রিনা চক্রবর্তী জানান, নিজের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে তিনি দিল্লির নয়ডার মুরাদ নগরের কাছে ১৪ বিঘা জমি কিনেছেন। অল্প জায়গায় অল্প জলে বিজ্ঞানসম্মতভাবে মাছ চাষ করে কীভাবে নিজের পায়ে দাঁড়ানো যায়,সেটাই দেখাবেন তিনি। সেখানে মাছ চাষে উৎসাহী নারী ও পুরুষ সকলকে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদের অধ্যক্ষ অপার্থিব ইসলাম হলেন খণ্ডঘোষের বাসিন্দা। রিনা চক্রবর্তীর সাফল্যে তিনিও গর্বিত। অপার্থিববাবু বলেন, "মাছ চাষে বাংলা প্রভূত উন্নতি করুক, মাছ উৎপাদনে বাংলা সম্বৃদ্ধ হোক,এটাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান। আমিও চাই আমাদের খণ্ডঘোষের শাঁখারীর রিনা চক্রবর্তী এই কাজে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়ান ।
তাতে মাছ চাষে বাংলায় নতুন দিগন্ত তৈরি হবে।"