এবার শহর থেকে অনেক দূরে, এক অন্যদেশে, বিদেশি সাউন্ড সিস্টেমে বাজল রবীন্দ্রনাথের গান, গাইলাম আমি।
শেষ আপডেট: 16 May 2025 19:36
এই রবিপক্ষ আমার জন্যে খানিকটা ব্যাতিক্রমী ছিল৷ অলিগলি দিয়ে ভেসে আসা রবিঠাকুরের গানের সুর, তবলার বোল ছিল না, ছিল না সার দিয়ে সাদা লাল পেড়ে শাড়ির ভিড়, জোড়াসাঁকোর অনুষ্ঠান। এবার শহর থেকে অনেক দূরে, এক অন্যদেশে, বিদেশি সাউন্ড সিস্টেমে বাজল রবীন্দ্রনাথের গান, গাইলাম আমি।
ভারতীয় এমব্যাসি আয়োজিত রবীন্দ্রজয়ন্তী এবং পঞ্চকবির গানের অনুষ্ঠানে আমি কয়েকদিন আগে গিয়েছিলাম তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে। এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা সেখানে। মানুষের ভালোবাসা তো আছেই তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল সঙ্গীতপ্রেমী মানুষের সমাবেশ। উপলব্ধি করলাম সাংস্কৃতিক দিক থেকে এরা কতখানি সমৃদ্ধ। সমৃদ্ধ সঙ্গীত নিয়ে তাদের চিন্তায়, ভাবনায়৷
এই প্রথম ওখানে কোনও বাংলা গানের অনুষ্ঠান হল৷ হাফেজ স্কোয়ার নামে সবুজে ঘেরা একটি খুব সুন্দর পার্ক আছে ওখানে, আর আছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রস্তর মূর্তি। তার সামনেই এক শান্ত সকালে পালিত হল রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী। ঘন্টাখানেকের এই অনুষ্ঠানে পাঁচটা গান গাওয়া হল। তাতে মিউজিকের সহযোগী হিসেবে ছিলেন তাজিক মিউজিশিয়ানরা, ছিল ঋদ্ধদেবের মিউজিকও। অবাক হওয়ার আরও অনেক বাকি ছিল ছিল অবশ্য।
পরদিন আমার দ্বিতীয় অনুষ্ঠান। যা আমার পঞ্চকবির গান নিয়ে, তাজিক ড্রামা থিয়েটার লাহৌটি হলে আয়োজন করা হয়েছিল এটি সান্ধ্য অনুষ্ঠান৷ হলটি হেরিটেজ হল। রাশিয়ান আমলে তৈরি, স্বাভাবিক ভাবেই তার ছত্রে ছত্রে রাশিয়ান স্থাপত্যের চিহ্ন। এমন একটি ইতিহাস বিজড়িত, ঐতিহ্যবাহী স্থানে দেশের মাননীয় প্রেসিডেন্ট, মাননীয় কালচারাল মিনিস্টার, ভারতের মাননীয় রাষ্ট্রদূত এবং আরও অনেক মানুষের সামনে পঞ্চকবির কন্যা এই বিষয়ের অগ্রণী হিসেবে আমার গান পরিবেশিত হল। 'যদি তোর ডাক শুনে কেউ' আমার ট্রেনিংয়ে আমার সঙ্গে গাইলেন ওখানকার আইসিসিআরের স্কলাররা৷ এ এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
শহরে ফিরেছি, কাজে ফিরেছি, ফিরেছি প্রতিদিনের চেনা বৃত্তে। কিন্তু এই ক'টা দিনে যে স্মৃতি দু'হাত ভরে নিয়ে এলাম তা এখনও ভীষণ জীবন্ত। আমার সঙ্গীতজীবনের প্রাপ্তি তালিকায় তাজিকিস্তানের নাম লেখা থাকবে স্বর্ণাক্ষরে।