শেষ আপডেট: 13th August 2024 20:28
প্রীতি সাহা ও প্রিয়ঙ্কা পাত্র
আরজিকরে ছাত্রীকে ধর্ষণ-খুন কাণ্ডে মঙ্গলবারও উত্তাল রাজ্য। ইতিমধ্যে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তারপরেও সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা কী স্বাভাবিক হবে? কোন পথে পড়ুয়া-চিকিৎসকদের আন্দোলন? দিনভর কী কী হল, রইল এক নজরে।
আরজিকর কাণ্ডে এদিন কলকাতা পুলিশ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর ভূমিকায় রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কলকাতা হাইকোর্টে। পুলিশের তরফে মৃত ছাত্রীর পরিবারকে প্রথমে কেন কেন আত্মহত্যার ঘটনা বলা হয়েছিল? আরজিকর কর্তৃপক্ষ কেন পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেননি, অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে ছুটিতে না পাঠিয়ে কেন ন্যাশনাল মেডিক্যালের অধ্যক্ষর পদে বসিয়ে বদলির নামে ‘পুরস্কার’ দেওয়া হল, শুনানিপর্বে এমনই একাধিক পর্যবেক্ষণ সামনে আনল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
এরপরই কলকাতা পুলিশের হাত থেকে তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে স্থানান্তর করেছে হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশ পেয়ে সন্ধেয় টালা থানায় মামলার নথিপত্র নিতে হাজির হন সিবিআই আধিকারিকরা। আদালতের নির্দেশ মেনে সন্দীপকে ছুটিতে পাঠিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যালের দায়িত্বে পুনর্বহাল করা হয়েছে পূর্বতন অধ্যক্ষ অজয় রায়কে।
তবে এখনই আন্দোলনের পথ থেকে সরে আসছেন না ডাক্তারি পড়ুয়ারা। তাঁরা জানিয়েছেন, সিবিআই তদন্ত মানেই তো সমস্যার সুরাহা হয়ে যাওয়া নয়। মামলার অগ্রগতি দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্তের কথা জানানো হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
এদিন সকালে আরজিকরে আসেন মহিলা কমিশনের সদস্যরা। মানবাধিকার কমিশনের তরফেও বিবৃতি দিয়ে আরজিকর কাণ্ডের তীব্র নিন্দা করা হয়। অপর্ণা সেন-সহ বুদ্ধিজীবীরা মঙ্গলবার বিকেলে শ্যামবাজার থেকে মিছিল করে আরজিকরে আসেন। মিছিল করে বামপন্থী বু্দ্ধিজীবীরাও। আরজিকর কাণ্ডে পুলিশ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর তীব্র নিন্দা করেন তাঁরা। পুলিশকেও যেন তদন্তের বাইরে না রাখা হয় প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। এদিকে অর্পনা সেন ওখানে যেতেই তাঁকে লক্ষ্য করে গো ব্যাক স্লোগান এবং তীর্যক মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে একাংশের বিরুদ্ধে।
শিয়ালদহ কোর্টের বার কাউন্সিলের সদস্যরা প্রতিবাদ মিছিল করেন। এসএফআইয়ের কিছু সদস্য হঠাৎই আরজিকরের এমাজেন্সিতে ঢুকে পড়ে। হুলস্থুল পরিস্থিতি তৈরি হয়। সে সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন ডিসি নর্থ অভিষেক গুপ্তা। পরে অবশ্য আন্দোলনকারীরা নিজেরাই বাইরে বেরিয়ে আসেন এবং জানান আন্দোলন জারি থাকবে।
এদিকে যে সেমিনার হলে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল আরজিকরের তরুণী চিকিৎসককে, সেই সেমিনার হলটি ভেঙে ফেলার অভিযোগকে ঘিরে এদিন সন্ধেয় ফের উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরেই তথ্য প্রমাণ লোপাটের জন্য সেমিনার হলটাই ভেঙে ফেলার পথে কর্তৃপক্ষ। যদিও কর্তৃপক্ষ ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে সরব হয়েছেন বিভিন্ন দেশে থাকা বাঙালি চিকিৎসকেরাও। আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ মঞ্চ ‘চেঞ্জ.ওআরজি’র মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী স্বাক্ষর সংগ্রহ শুরু হয়েছে। মহিলা চিকিৎসকদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আর্জি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে সোশ্য়ালল মাধ্যমে পোস্ট করেথেন ব্রিটেন, আমেরিকা এবং কানাডায় বসবাসকারী বাঙালি চিকিৎসকরা। এদিকে আরজিকর কাণ্ডের প্রতিবাদে আগামীকাল বুধবার রাজ্যজুড়ে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত সরকারি হাসপাতালের আুউটডোর ও বেসরকারি হাসপাতালের ওপিডিও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিকিৎসকদের সংগঠন জয়েন্ট ফোরাম।