শেষ আপডেট: 20th January 2025 15:10
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অনেকেই ভেবেছিলেন বিরলতম অপরাধ হিসেবে ফাঁসির সাজা শোনাবে আদালত। তবে আরজি কর কাণ্ডে সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি নয়, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। শনিবারই সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করেছিল শিয়ালদহ আদালত।
ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ) ধারা, ৬৬ ধারা (ধর্ষণের এমন আঘাত করা, যে কারণে মৃত্যু হতে পারে) এবং ১০৩ (১) ধারায় (খুন) সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ এনেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যার ভিত্তিতে এদিন সঞ্জয়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে আদালত।
বস্তুত, আরজি করের মতো হাই প্রোফাইল মামলাকে কেন্দ্র করে গত ১২৬ দিন ধরে শিয়ালদহ আদালত সরগরম। এদিনও রায়দানকে কেন্দ্র করে আদালত চত্বর পুলিশে ছয়লাপ ছিল। আইনজীবীদের মতে, অতীতে কখনও এত পুলিশ দেখেনি শিয়ালদহ আদালত চত্বর।
তবে রায় বেরোতেই আইনজীবীদের অনেকের মুখে মুখে ঘুরছে একাধিক প্রশ্ন। সঞ্জয় কি একাই অপরাধী? নাকি আরও একাধিকজন যুক্ত ছিল পুরো নারকীয় কর্মকাণ্ডে। বস্তুত, আরজি কর কাণ্ডে সিবিআইয়ের তরফে একা সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিলের পরই এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন নির্যাতিতা মৃত চিকিৎসকের পরিবার থেকে আন্দোলনরত ডাক্তারি পড়ুয়ারা। এবার সেই একই কথা শোনা গেল শিয়ালদহ আদালত চত্বরের আইনজীবীদের মধ্যে।
বস্তুত, আরজি কর কাণ্ডে যে সেমিনার হল থেকে ডাক্তারি ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয়েছিল, সেটি ক্রাইম সিন নয় বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাবরেটরির রিপোর্ট (Central Forensic Science Laboratory)। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি ঘটনাস্থল অন্য কোথাও, আসল ঘটনা আড়াল করতেই সেমিনার হল কে সাজানো হয়েছে?
তাঁদের প্রশ্ন, শুধু সঞ্জয় রায় একা যদি দোষী হবে তাহলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ কেন ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে এত তৎপর হয়ে উঠেছিল? কেন তড়িঘড়ি শেষকৃত্য করা হল? দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের দাবি জানালেও কেন তা গুরুত্ব দেওয়া হল না? মৃতদেহ উদ্ধারের দীর্ঘক্ষণ পর কেন মৃত ঘোষণা করা হয়, তাহলে কি উদ্ধারের সময় তিনি বেঁচেছিলেন, ইচ্ছাকৃতভাবেই বাঁচানোর চেষ্টা হয়নি?
এমনই একাধিক প্রশ্ন ঘুরছে আইনজীবীদের মধ্যে। তাঁদের একাংশের কথায়, "আইনে মনে হওয়ার কোনও জায়গা নেই। তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই বিচার করতে হয়। তবে সঞ্জয় ছাড়াও আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে, এমন সম্ভাবনা থেকেই সম্ভবত ফাঁসির পরিবর্তে যাবজ্জীবন সাজার কথা শুনিয়েছে আদালত।"