শেষ আপডেট: 21st January 2025 20:52
প্রীতি সাহা
আরজি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের মামলায় সঞ্জয় রায়ের ফাঁসির সাজা না হওয়ায় অনেকেই যেমন সিবিআইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তেমনই আলোচনায় উঠে এসেছে সঞ্জয়ের হয়ে মামলা লড়া দুই আইনজীবী সেঁজুতি চক্রবর্তী ও কবিতা সরকারের প্রসঙ্গও। তীক্ষ্ণ সওয়ালে সঞ্জয়ের ফাঁসি রুখে দিয়ে রাতারাতি নজর কেড়েছেন তাঁরা। ক্রিমিনাল ল’ইয়ার হিসাবে নিশ্চয়ই এটা তাঁদের কেরিয়ারে মাইলফলক।
কলকাতা তো বটেই দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও যখন 'জাস্টিস ফর আরজি কর' স্লোগান উঠছিল, তখন কোর্টের চার দেওয়ালের মধ্যে সঞ্জয়ের হয়ে লড়াই করা কতটা কঠিন ছিল? কোন কোন যুক্তিতে আরজি করের নৃশংস ঘটনাকে 'বিরলের মধ্যে বিরলতম নয়' প্রমাণ করতে সমর্থ হলেন তাঁরা? রায় বেরানোর পর দ্য ওয়ালের মুখোমুখি হয়ে এসব প্রশ্নেরই জবাব দিলেন সঞ্জয়ের অন্যতম আইনজীবী সেঁজুতি চক্রবর্তী।
বলে রাখা ভাল, আরজি কর মামলা শিয়ালদহ আদালতে ওঠার পর সঞ্জয়ের হয়ে কোনও আইনজীবী দাঁড়াতে চাননি। সঞ্জয়ের পরিবারের তরফেও কোনও আইনজীবী দেওয়া হয়নি। এসব ক্ষেত্রে সরকারের লিগ্যাল ফোরামের তরফে আসামীর হয়ে আইনজীবী দেওয়া হয়। সেঁজুতি চক্রবর্তী ও কবিতা সরকারও সরকারি ফোরামেরই আইনজীবী।
এদিন দ্য ওয়ালকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আইনজীবী সেঁজুতি চক্রবর্তী বলেন, "একটা মামলা দিয়ে আমাদেরকে সেলিব্রিটির মতো ট্রিট করবেন না প্লিজ, আমরা সেলিব্রিটি নই!"
একই সঙ্গে বলেন, "একটা দুটো ফাঁসির সাজা দিয়ে সমস্যার সুরাহা হবে না, মহিলাদের কর্মক্ষেত্রের সুরক্ষার জন্য সিস্টেমের বদল দরকার। তাই ফাঁসি নিয়ে চর্চা না করে আসুন মহিলাদের কর্মক্ষেত্রের সুরক্ষার জন্য সিস্টেমের বদল নিয়ে আলোচনা করা জরুরি"
সঞ্জয়ের ফাঁসি না হওয়ায় অনেকেই হতাশ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেছেন, আমি তো মনে করি এটা বিরলের মধ্যে বিরলতম। ফাঁসিই হওয়া উচিত এদের। আবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, "এতবড় ঘৃণ্য অপরাধের পরও কেন জনগণের টাকায় আজীবন বসিয়ে বসিয়ে খাওয়ানো হবে।"
এ প্রসঙ্গে সঞ্জয়ের আইনজীবীর সাফ কথা, "এভাবে সত্য মিথ্যে বলা যায় না। কারণ, নিম্ন আদালতের রায়ের পর হাইকোর্ট এবং সুপ্রিমকোর্টে যাওয়ার জায়গা রয়েছে।"
একই সঙ্গে সরকারের উদ্দেশেই পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়েছেন সেঁজুতি, "সংশোধনাগার মানে তো সংশোধন করা। বহু বন্দি ২০ , ৩০, ৩৫ বছর ধরে জেলে পড়ে রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকে নিজেদের সংশোধনও করেছে। তাদের কেন মুক্তি না দিয়ে জনগণের করের টাকায় বসিয়ে বসিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে, এই প্রশ্নটাও তুলতে পারি, নয় কি?" এরপরই সেঁজুতির আহ্বান, "আসুন সমাজকে অপরাধ মুক্ত করতে হলে আমরা আরও বেশি করে সিস্টেম নিয়ে কথা বলি। তবেই সম্ভব, অপরাধের সংশোধন।"