শেষ আপডেট: 24th August 2024 09:52
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আদালতের নির্দেশ মেনে নির্ধারিত সময়ের কিছু আগেই আরজি কর সংক্রান্ত সমস্ত নথি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে হস্তান্তর করল রাজ্য।
সূত্রের খবর, সকাল সাড়ে নটার মধ্যেই যাবতীয় নথি হস্তান্তর করা হয়। জানা যাচ্ছে, ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের মামলার পাশাপাশি আরজি করের আর্থিক তছরুপ, ওষুধ, মেডিক্যাল সরঞ্জামের কালোবাজারির মতো গুরুতর অভিযোগের তদন্তএ এবার করবে সিবিআই।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ আরজি কর হাসপাতালের যাবতীয় আর্থিক দুর্নীতি-সহ যা যা অভিযোগ রয়েছে, তার তদন্তও সিবিআইকে করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। শনিবার সকাল দশটার মধ্যে সিবিআইকে যাবতীয় নথি হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি।
সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শুক্রবারই হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিলেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। যদিও শুক্রবার তা গ্রহণ করেনি আদালত।
পর্যবেক্ষকদের মতে, এর ফলে, আরও বিপাকে পড়লেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। আরজি কর হাসপাতালে তরুণী পড়ুয়া-চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পরে একাধিক অভিযোগ উঠতে থাকে এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে। সব অভিযোগেরই কেন্দ্রে ছিলেন প্রাক্তন প্রিন্সিপাল ডক্টর সন্দীপ ঘোষ। তিনিই নানা বিষয়ে হাসপাতালকে দুর্নীতির আঁতুড়ঘরে পরিণত করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল।
এই অভিযোগের পরেই রাজ্যের তরফে গঠন করা বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট। এই সিট কেন আরও আগে গঠন হয়নি, সেই প্রশ্নও আগেই তুলেছিল আদালত। শুক্রবার আরজি করের সব মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দিয়ে সেই সিটকে কার্যত খারিজই করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, ৯ অগস্ট হাসপাতালে মর্মান্তিক খুনের পরেই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ১৪ তারিখ থেকে আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। এই পরিস্থিতিতে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে ইডি-কে তদন্তভার দেওয়ার আবেদন করা হয় হাইকোর্টে। কিন্তু একাধিক সংস্থা তদন্ত করলে বিষয়টি জটিল হয়ে যেতে পারে, সময়ও বেশি লাগতে পারে বলে জানিয়েছে আদালত। সেই কারণে, খুনের ঘটনার সঙ্গে হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির তদন্তও সিবিআই করবে বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের নজরদারিতেই সিবিআই তদন্ত হবে।
আরজি করে আর্থিক দুর্নীতি, দেহ লোপাট সহ একাধিক অভিযোগে ইডির তদন্ত চেয়ে সন্দীপ ঘোষের মামলা দায়ের করেন আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি। তাঁর অভিযোগ, প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ নিয়ে টালা থানায় গেলে পুলিশ এফআইআর নেয়নি। শুধুমাত্র লিখিত অভিযোগ দিয়ে এসেছিলেন তিনি। তারপরেও অবশ্য কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। এরপর থেকেই তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান। তিনি বলেন, "আদালতের শরণাপন্ন হয়ে বিচার চাইছি।''
আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার বলেন, “প্রথমদিন থেকে ওঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। একসময় ছাত্ররা ওঁর বিরুদ্ধে ভুক হরতালও করেছিল। টাকা নিয়ে উনি পাশ করাতেন। টাকা না দিলে খারাপ কেসে ফাঁসিয়ে দিতেন। হুমকি দিতেন। ওঁকে সাসপেন্ড করে দ্রুত হেফাজতে নেওয়া দরকার।” সেই মামলারই শুনানি ছিল শুক্রবার।