শেষ আপডেট: 24th August 2024 15:38
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আরজি করে ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় ১৩ অগস্ট কলকাতা পুলিশকে তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তখনই আন্দোলনকারী পড়ুয়া চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, সিবিআই তদন্ত হওয়া মানেই দাবি মিটে গেল তা নয়! দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
সিবিআই তদন্তভার গ্রহণের পর ৯ দিন অতিক্রান্ত। তদন্ত কতদূর এগোল? তা জানতে শুক্রবার বিকেলে আন্দোলনকারী পড়ুয়া চিকিৎসকদের এক প্রতিনিধি দল পৌঁছেছিল সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআইয়ের দফতরে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করার পর বাইরে এসে আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা বললেন, "আদালতের নজরদারিতে তদন্ত চলছে, এই যুক্তিতে তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে কোনও কথা বলতে চাননি সিবিআইয়ের কর্তারা। অথচ আমরা যে কটি দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলাম, তার মধ্যে প্রথমেই ছিল, তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট জানাতে হবে।"
এরপরই আন্দোলনকারী পড়ুয়া চিকিৎসকরা সাফ জানিয়ে দেন, "আমরা বিচারের দাবিতে লড়ছি। সেটা না হওয়া পর্যন্ত কাজে ফেরার প্রশ্নই ওঠে না।" র্থাৎ বাংলাজুড়ে জুনিয়র চিকিৎসক ও চিকিৎসক পড়ুয়াদের কর্মবিরতি চলবে।
প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বৃহস্পতিবারই দিল্লির এইমস-সহ বিভিন্ন হাসপাতালের ডাক্তাররা কাজে ফেরার কথা জানিয়েছেন। তবে সিবিআই তদন্তের গতি প্রকৃতি স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত শীর্ষ আদালতের আবেদন রক্ষা করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে ছিলেন বাংলার জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট।
বৃহস্পতিবার রাতে ফ্রন্টের তরফে জানানো হয়েছিল, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তের গতিপ্রকৃতি ইতিবাচক না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। অল ইন্ডিয়া রেসিডেন্টস অ্যান্ড জুনিয়র ডক্টরস জয়েন্ট অ্য়াকশন ফোরামের তরফেও বৃহসস্পতিবার রাতে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বিচারের দাবিতে আন্দোলন জারি থাকবে।
জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট কথায়, এর আগে রবীন্দ্রনাথের নোবেল চুরি-সহ রাজ্যের বহু মামলার তদন্ত করেছে সিবিআই। তার বেশিরভাগই এখনও অমীমাংসিত। এমনকী হাইকোর্টের নির্দেশে গত ১৩ অগস্ট আরজি করে ডাক্তারি ছাত্রী খুনের মামলার তদন্তভার গ্রহণের পর সিবিআই নতুন করে কাউকে গ্রেফতার করেনি। তদন্তের অগ্রগতিও সন্তোষজনক নয় বলে মত আন্দোলনকারীদের।
আন্দোলনকারীরা মনে করছেন, ৮ অগস্টের মধ্যরাতে ডাক্তারি ছাত্রীকে নৃশংস হত্যা কাণ্ডে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের সঙ্গে আরও কেউ কেউ জড়িত থাকতে পারে। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং কলকাতা পুলিশের একাংশ অভিযুক্তদের আড়াল করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তদন্তভার গ্রহণের পর সিবিআই কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা ছাড়া তদন্তের বিশেষ অগ্রগতি হয়নি।
এরপরই শুক্রবার তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আন্দোলনকারী চিকিৎসক পড়ুয়ারা। কিন্তু সেখান থেকে তদন্তের বিষয়ে কোনও তথ্য না পেয়ে কার্যত হতাশ আন্দোলনকারীরা। তাঁদের সাফ কথা, "আমাদের সহপাঠীকে ধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তির দাবিতে আন্দোলন চলবে। একই সঙ্গে শুধু মৌখিক আশ্বাস নয়, কর্মস্থলে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। তা না হওয়া পর্যন্ত 'নো সেফটি নো ডিউটি' আন্দোলনের পথ থেকে সরে আসার প্রশ্নই নেই।