শেষ আপডেট: 10th August 2024 00:03
দ্য ওয়া্ল ব্যুরো: মেধাবী কন্যার এমন মর্মান্তিক পরিণতির খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে সন্তান হারা পিতা চোখের জল মুছতে মুছতে বলেছেন, “বোঝা যাচ্ছে রেপ করে মার্ডার করা হয়েছে ওকে।" সন্ধেই হাসপাতালে অদূরে মেয়ের ডেডবডির অপেক্ষায় প্রহর গোনা মায়েরও যেন ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙল। বললেন, "অন ডিউটিতে ছিল আমার মেয়ে। নৃশংসভাবে হত্যা করা হল। আমরা বিচার চাই।" পুলিশি তদন্তে অনাস্থাও প্রকাশ করেন সে সময়।
যদিও ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট সামনে আসার পর আরজিকরের মেডিক্যাল ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় পরে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। লালবাজারের তরফে গঠন করা হয়েছে বিশেষ তদন্ত কমিটিও। এদিকে নিহত ছাত্রীর মা ও বাবাকে এদিন সন্ধে পর্যন্ত দেহ দেখতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় পুলিশের বাড়াবাড়ি দেখছেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ, বিধায়িকা অগ্নিমিত্রা পাল এবং আইনজীবী-নেতা কৌস্তভ বাগচী।
সজল, কৌস্তভরা বলেন, "এরা রেপও করবে, খুনও করবে আবার পুলিশ তাদের বাঁচাতে মৃতর পরিবারকে দেহ পর্যন্ত দেখতে দেবে না।" কামদুনি, হাঁসখালির প্রসঙ্গ টেনে অগ্নিমিত্রার অভিযোগ, "পুলিশ অপরাধীদের শেল্টার দেয়। তাই বাংলায় আইনশৃঙ্খলার এই অবনতি।"
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্নাতকোত্তর স্তরে দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া ওই ছাত্রী বৃহস্পতিবারও রাত ২টো পর্যন্ত হাসপাতালের ওয়ার্ডে ডিউটি করেন। পরে কর্মরত আরও দুই জুনিয়র ডাক্তারের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া সেরে পড়াশোনার জন্য সেমিনার হলে চলে যান ওই তরুণী। শুক্রবার সকালে সেমিনার হল থেকেই দেহ উদ্ধার হয় তাঁর।
এরপরই নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে মেডিক্যালের পড়ুয়াদের মধ্যে থেকে। মৃতর পরিবারও এদিন সেই প্রশ্ন তুলেছে। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্তে সম্ভাব্য সবদিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত ছাত্রীর বাম পায়ে, পেটে, যৌনাঙ্গে, দুচোখ, মুখে এবং ডান হাতের আঙুলেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। যা থেকে পুলিশের একাংশের অনুমান, শারীরিক অত্যাচারের পরই খুন করা হয়ে থাকতে পারে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে এও উল্লেখ করা হয়েছে, রাত ৩ টে থেকে ভোর ৬টার মধ্যে খুনের ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে। দেহে অন্তত ১০টি দাগের চিহ্ন রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, সেমিনার হলের যে ম্যাট্রেস থেকে ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল, সেই ম্যাট্রেসেও রক্তের দাগ মিলেছে। ছাত্রীর যৌনাঙ্গ এবং দুপায়েও রয়েছে রক্তের দাগ। যা থেকে শারীরিক অত্যাচারের অভিযোগও ক্রমেই জোরাল হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
পুলিশের এক কর্তা বলেন, ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট সামনে এলে শারীরিক নির্যাতনের মামলাও যুক্ত করা হতে পারে।