শেষ আপডেট: 6th November 2024 16:15
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বুধবার সকালে শুনানি হওয়ার কথা ছিল আরজি কর মামলার। সকালেই জানানো হয়, তা পিছিয়ে হবে দুপুর তিনটেয়। এর পরে দুপুরে জানা গেল, বুধবার আদৌ হবে না শুনানি, বৃহস্পতিবার দুপুর দুটোয় সেটি উঠবে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের এজলাসে।
মঙ্গলবার স্থগিত হয়ে যাওয়ার পরে নির্দেশনামায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিল, বুধবার শুনানির তালিকায় সবচেয়ে প্রথমেই এই মামলা শুনবে আদালত। সেই মতো সকাল সকাল শীর্ষ আদালতে নজর ছিল দেশবাসীর। তবে বেলা গড়াতেই জানা গেল, মামলা হবে সকালের বদলে দুপুরে। দুপুর পেরোনোর পরে আরও পিছিয়ে তা চলে গেল পরের দিন।
আদালত সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার দুপুর দুটোয় আরজি কর মামলার শুনানি হবে প্রধান বিচারপতি বিচারপতি চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে।
আগের শুনানিতে হাসপাতাল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো জায়গায় সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলানোর বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়েছিল রাজ্য সরকার। সিভিক ভলান্টিয়ারের নিয়োগ, তাঁদের বেতন ইত্যাদি সম্পর্কিত ছ’টি প্রশ্নের উত্তর তলব করেছিল প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
সেই প্রশ্নগুলির জবাব মঙ্গলবার হলফনামা আকারে জমা দেওয়ার কথা ছিল রাজ্যের। সেই নির্দেশ মেনেই নির্ধারিত শুনানি শুরুর আগের দিন, মঙ্গলবারই হলফনামা আকারে সিভিক ভলান্টিয়ার সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য জমাও দিয়েছে রাজ্য।
সূত্রের খবর, জমা দেওয়া হলফনামায় রাজ্যের তরফে বলা হয়েছে, সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগে রাজ্যের নির্দিষ্ট গাইডলাইন রয়েছে। তাঁদের কাজ পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছেন একজন সিনিয়র পুলিশ অফিসার। পাশাপাশি কী কারণে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ, তার ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, পুলিশকে সহযোগিতার জন্যই সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগের ভাবনা। সিভিক ভলান্টিয়াররা কত বেতন পান, ক'দফায় তাঁদের বেতন বাড়ানো হয়েছে- এসবও উল্লেখ রয়েছে হলফনামায়।
এমনকী রাজ্যের তরফে আদালতকে লিখিতভাবে এও জানানো হয়েছে, সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে ইতিমধ্যে তিন মাসের ট্রেনিংও শুরু হয়েছে। কিন্তু শেষমেশ মঙ্গলবার স্থগিত হয়ে যায় শুনানি।
পাশাপাশি, রাজ্যের হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজগুলিতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যাপারে রাজ্য কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে বুধবার রাজ্যের দেওয়া সেই সংক্রান্ত স্টেটাস রিপোর্ট দেখার কথা প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের।
শীর্ষ আদালতের একটি সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি ভবনের একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিল প্রধান বিচারপতি-সহ অন্য বিচারপতিদের। সে কারণে মঙ্গলবার নির্ধারিত সময়ের আগেই মামলার প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যায়। সেই কারণেই মূলত বুধবার পিছিয়ে দেওয়া হয় আরজি করের শুনানি। সকাল থেকে পিছিয়ে তা বিকেলে করা হয় বুধবার। তার পরেও সেটি হল না। হবে বৃহস্পতিবার দুপুর দুটোয়।
গত ৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ থেকে পড়ুয়া ডাক্তারের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ ওঠে তাঁকে ধর্যণ করে খুন করা হয়েছে। গত তিন মাস ধরে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। নির্যাতিতার জন্য বিচারের দাবিতে পথে নেমেছেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা শুনবে বলে জানায়। তারপর থেকেই শীর্ষ আদালতের তত্ত্বাবধানে ঘটনার তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।
আগামী ১০ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর গ্রহণ করবেন চন্দ্রচূড়। তার আগে শীর্ষ আদালতে এই মামলা কোন দিকে মোড় নেয়, সেদিকেই বৃহস্পতিবার দিনভর নজর থাকবে গোটা দেশের।