শেষ আপডেট: 30th August 2024 12:59
প্রীতি সাহা ও প্রিয়ঙ্কা পাত্র
৯ অগস্ট থেকে ৩০ অগস্ট। ২১ দিন অতিক্রান্ত। আরজি করে নিহত ডাক্তারি ছাত্রীর বিচারের দাবিতে আন্দোলন জারি রেখেছেন আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। সুপ্রিম কোর্টের অনুরোধ, মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানের পরও তাঁদের সাফ কথা, "আমরাও কাজে ফিরতে চাই। কিন্তু যে দাবিতে আন্দোলন সেই দাবি পূরণ না হলে কীভাবে ফিরব কাজে?"
৯ অগস্ট আরজি করের সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয়েছিল ডাক্তারি ছাত্রীর রক্তাক্ত দেহ। আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত শুরু করলেও তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নির্যাতিতার পরিবার থেকে আন্দোলনরত ডাক্তারি পড়ুয়ারা। ঘটনায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করা হলেও তাঁরা মনে করছেন, এঘটনায় আরও কেউ কেউ জড়িত থাকতে পারে। তাঁদের মতে, কারও একার পক্ষে এঘটনা ঘটানো সম্ভব নয়।
বৃহস্পতিবারও নির্যাতিতার মা-বাবা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, "যেভাবে এক একটা দিন চলে যাচ্ছে তাতে মেয়েটা সুবিচার পাবে তো?"
পড়ুয়াদের আন্দোলনের মাঝেই গত ১৪ অগস্ট মধ্যরাতে আরজি করে পড়ুয়াদের আন্দোলন মঞ্চে দুষ্কৃতী হামলার ঘটনা ঘটেছিল। ওই ঘটনায় আদালতের নির্দেশে আরজি করের নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে সিআইএসএফ। তবে তাতেও নিজেদের সুরক্ষিত মনে করছেন না পড়ুয়ারা।
আন্দোলনকারী এক ডাক্তারি পড়ুয়ার কথায়, "সিআইএসএফ থাকলেও আমরা নিজেদের সুরক্ষিত মনে করছি না। কারণ ঘটনাটা একজন ঘটায়নি, একাধিক জন ছিল। বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতার তো দূরে থাক চিহ্নিত করাও হয়নি। অর্থাৎ খুনিরা এই আরজি করে ঘুরে বেড়াচ্ছে এরপরও কীভাবে বলবেন আমরা সুরক্ষিত?"
আর এক পড়ুয়ার কথায়, "আমরাও কাজে যোগ দিতে চাই কিন্তু তার আগে অন্তত দোষীদের চিহ্নিত তো করুক। সেটুকু না হলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?"
জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের ফলে চিকিৎসা পরিষেবা ভেঙে পড়ার যে অভিযোগ উঠেছে তাও খণ্ডন করছেন আন্দোলনকারীরা। এক পড়ুয়ার কথায়, " এই যে বলা হচ্ছে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এই অভিযোগ নয়। কারণ আমরা কাজ না করলেও সিনিয়র চিকিৎসকরা একেকজন টানা ৪৮ ঘন্টাও ডিউটি করছে। তবে এটা ঠিক কর্মবিরতির কিছুটা প্রভাব অবশ্যই পড়েছে চিকিৎসা পরিষেবায়।"
আর এক পড়ুয়ার কথায়, "পরিষেবা দেওয়ার দায়িত্ব তো সিনিয়র চিকিৎসকদের। তাদের পদের ঘাটতি রয়েছে বলেই আমাদের দিয়ে সেটা পূরণ করানো হতো। কিন্তু আদতে আমরা তো শিখতে এসেছি সরকারের তো উচিত শূন্য পদে পূরণের করা।"
সরকারের স্বদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে পড়ুয়াদের। এক পড়ুয়ার কথায়, "দুষ্কৃতীরা দিনের আলোয় ঘুরে বেড়াবে, যারা তথ্য লোপাট করল তাদেরই বা ধরা হচ্ছে না কেন সরকারের অসুবিধেটা কোথায়? আমরা তো কাজে ফিরতে চাই। কিন্তু তার আগে অন্যতম দাবি তো পূরণ করতে হবে। তা না হলে নো সেফটি, নো ডিউটি।"