আরজি কর কাণ্ডে অভিযুক্ত সঞ্জয় ও তার মা।
শেষ আপডেট: 24th August 2024 13:06
দ্য ওয়াল ব্যুরো: টিভি খুললেই ছেলের ছবি। ছেলেকে নিয়ে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মুখে একটাই কথা, 'ওর ফাঁসি চাই'! কিন্তু তাঁর ছেলে যে এমন কাজ করতে পারে, তা এখনও বিশ্বাসই করতে পারছেন না সঞ্জয় রায়ের মা মালতী রায়ের।
আরজি করে ছাত্রীকে ধর্ষণ ও নৃশংসভাবে খুনের অভিযোগে ৯ অগস্ট সঞ্জয়কে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার পদে কর্মরত সঞ্জয় যে আরজি কর হাসপাতালে যেত সে খবরও জানা ছিল না মায়ের।
সংবাদ মাধ্যমকে মালতীদেবী বললেন, "টিভিতে ছেলের সম্পর্কে কত কিছু শুনছি। কিন্তু বিশ্বাস করুন, ছেলে আমার এমন ছিল না। ছোট থেকেই ক্লাসে টপার ছিল! কোথা থেকে কী যে হয়ে গেল!"
বৃদ্ধা এখনও মনে করেন, "তাঁর ছেলেকে কেউ বা কারা ফাঁসিয়ে থাকতে পারে।" তবে দেখা হলে ছেলের কাছেও তিনি জানতে চাইবেন, এ বিষয়ে। সঞ্জয়ের মায়ের কথায়, "ছেলেটার জন্য মেয়েগুলোও বাপের বাড়িতে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। এখন টিভিতে যা দেখাচ্ছে তাতে ঘর থেকেও বেরোতে পারছি না। টিভিও খুলতে পারছি না। দেখা হলে সঞ্জয়কে জিজ্ঞেস করব, সত্যি ও এমন কিছু করেছে কি না।"
প্রসঙ্গত, গ্রেফতারের পর সঞ্জয় নাকি পুলিশকে বলেছিল, 'আমাকে ফাঁসি দিয়ে দিন'। ইতিমধ্যে সঞ্জয়ের নানা কুকীর্তি সামনে আনছেন তাঁর প্রতিবেশীরা। সঞ্জয়ের এক দিদি, যিনি কলকাতা পুলিশে চাকরি করেন, তিনিও ভাইয়ের ভূমিকায় বীতশ্রদ্ধ। সম্প্রতি তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, "ওকে নিজের ভাই বলে পরিচয় দিতেও লজ্জা লাগে। ওর এত কুর্কীতি যে বাধ্য হয়েই আমরা ওর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখিনি।"
একই সঙ্গে এ বলেছিলেন, "আরজিকরে ও(সঞ্জয়) যে নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছে তাতে ওর কঠোরতম শাাস্তি হওয়া উচিত। তবে সকলের কাছে একটাই অনুরোধ, আপনারা ওকে নিয়ে যা খুশি করুন, দয়া করে ওর দেহ আমাদের দেবেন না। আমরা নেব না। কারণ, এমন মানুষের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখা যায় না।"
প্রসঙ্গত, সঞ্জয়কে নিয়ে তিতিবিরক্ত তার প্রতিবেশীরাও। তাঁদের কথায়, সারাদিন মদ খেত। একাধিক বিয়েও রয়েছে সঞ্জয়ের। কেউ ছেড়ে চলে গেলে, অন্য মহিলাদের সঙ্গে থাকত সে। এভাবেই চলত। যদিও অভিযুক্তের মা মালতী রায়ের দাবি, ছেলে যে এই ঘটনা ঘটাতে পারে তা বিশ্বাসই করতে পারছেন না তিনি।
এর আগে ছেলের কুর্কীতি শোনার পর সঞ্জয়ের মা আক্ষেপের সুরে বলেছিলেন, 'সন্তানকে সব মা-ই ছোট থেকে বড় করে। পাঁচটা ছেলেমেয়েকে বড় করেছি। এখন শুনছি আমার ছেলে রেপ করেছে, মার্ডার করেছে। আমার জীবনটাই শেষ করে দিল। ছেলের বিপদে এখন কেউ পাশে নেই।" তিনি এও বলেন, "ছেলেটা কিন্তু আমার ভালই ছিল। কেউ ফাঁসাল নাতো!"