শেষ আপডেট: 11th April 2025 16:50
রেজ্জাক মোল্লা চলে গেলেন। সাংবাদিকতার সূবাদে বাংলার রাজনীতির যে নেতা-নেত্রীর সঙ্গে আমার পরিচয়, তাঁদের বেশিরভাগের তুলনায় রেজ্জাক মোল্লার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল অনেকে আগে। নয়ের দশকের গোড়ায়। তিনি তখন ছিলেন রাজ্যের ফল প্রক্রিয়াকরণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী। বসতেন সল্টলেকে ময়ূখ ভবনে। চাকরি-ব্যবসা সংক্রান্ত একটি সাপ্তাহিক প্রত্রিকার রিপোর্টার হিসাবে আমি তখন মাসে এক-দু’বার তাঁর অফিসে যেতাম। গেলে খুশি হতেন। তারপর একরাশ হতাশা ব্যক্ত করে বললেন, ‘ভাই তুমি যে সব খবর চাও তেমন কিছু জানানোর মতো আমার দফতরে নেই।’
আমি জানতে চাইতাম ফল প্রক্রিয়াকরণ সংক্রান্ত ব্যবসার স্কিম। যে সাপ্তাহিক পত্রিকাটির কথা বললাম, সেটায় নিয়মিত ছোট ব্যবসার সুলুক সন্ধান দেওয়া হত। অর্থাৎ অল্প পুঁজিতে কীভাবে নতুন নতুন ব্যবসা করা যায়। ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে কীভাবে লোন পাওয়া যাবে, যন্ত্রপাতি কোথায় মিলবে, এই সব তথ্য দেওয়া হত।
অনেকেই হয়তো মনে করতে পারবেন, রেজ্জাক মোল্লা কেমন হাসিখুশি মজার চরিত্র ছিলেন। সদা স্ফূর্তিতে থাকতেন। অফিসে কাজের ফাঁকেও মজা-ঠাট্টায় মেতে থাকতেন। নিজেকে নিয়ে দেদার মজা, উপহাস করতেন। রেজ্জাক মোল্লার বিশেষ গুণ ছিল কঠিন বিষয় মজার ছলে সহজ করে বলতেন। ফল প্রক্রিয়াকরণ দফতরের কাজকর্ম সম্পর্কে বলতেন, ‘আমি আম-কাঁঠাল কচলানোর দফতরের মন্ত্রী।’
সেই তিনি একদিন ময়ূখ ভবনের অফিসে আমি যাওয়ার পর দফতরের একজন অফিসারকে ঘরে ডাকলেন। তাঁকে বললেন, ‘বলেন তো আমার দফতরের কাজটা কী?’ আমার উপস্থিতিতে মন্ত্রীর অমন প্রশ্ন শুনে অফিসার ভদ্রলোক অস্বস্তিতে পড়েন। আমাকে দেখিয়ে মন্ত্রী তাঁকে বললেন, ‘এই ছেলেটির সঙ্গে বসুন। দেখুন ওরা যে ধরনের স্কিমের কথা বলে সেগুলি আমরা করতে পারি কিনা। তাহলে যদি পাবলিকের জন্য কিছু করা যায়।’ সে কাজ তাঁর দফতর করে উঠতে পারেনি। অফিসারদের জবাব ছিল, স্কিম তৈরি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের কাজ।
সেই সব দিনে রেজ্জাক মোল্লার ক্যানিংয়ের জীবনতলার বাড়ি পর্যন্ত গাড়ি যেত না। সরকারি গাড়ি থেকে নেমে অনেকটা পথ হেঁটে বাড়ি ফিরতেন। সেই কাহিনি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে অনেক কাগজে ছাপা হয়েছে তখন। এর বাইরে রেজ্জাক মোল্লার নাম বছরে বেশ কয়েকবার ছাপা হত দক্ষিণ ২৪ পরগনায় রাজনৈতিক মারামারি, খুনোখুনির ঘটনায়। বিরোধীরা কথায় কথায় ‘রেজ্জাক বাহিনী’র দিকে আঙুল তুলত। সেই রেষারেষি এমন ছিল যে মন্ত্রী নিজেও নিজেকে এলাকায় নিরাপদ মনে করতেন না। তাই পুলিশ দেহরক্ষী থাকলেও জেলায় অনেক জায়গায় নিজের বন্দুকটি সঙ্গে রাখতেন। নিয়ম করে আলিপুরে গিয়ে মন্ত্রী বন্দুকের লাইসেন্স নবীকরণ করিয়ে আসতেন।
জেলায়, নিজের বিধানসভায় তাঁর দাপট, দাদাগিরি ছিল মানুষের নিত্য অভিজ্ঞতা। গোটা রাজ্য তা টের পেত বিধানসভা ভোটের দিন। সেদিন রেজ্জাক বাহিনীর রিগিং, ছাপ্পার কাছে বিরোধীরা মাথা তুলতে পারত না। এলাকার নব্বই-পঁচানব্বই ভাগ মানুষের তখন দিন আনি দিন দিন খাই দশা। ভোটের আগের রাতে রেজ্জাক বাহিনী বাড়ি বাড়ি গিয়ে দিনের মজুরির টাকাটা হাতে তুলে দিয়ে সাবধান করে দিত কেউ যেন বুথে না যায়। ভোটের দিন বুথে বুথে চটের পর্দা ঘেরা ব্যালট বাক্সে দেদার ছাপ্পা ভোট চলত।
ঘটনা হল এই অপকর্ম রেজ্জাক মোল্লা কখনও অস্বীকার করেননি। একবার মজা করে বলেছিলেন, ‘কাপড় (পড়ুন চটের পর্দা) তুলে অনেক মহৎ কাজ হয়। ভোটই বা বাদ থাকবে কেন?’ বলতেন, ‘কংগ্রেসিরা তো আগের রাতে ভোট দিয়ে দিত। অনেক কষ্টে ওদের তাড়াতে পেরেছি। আবার ওরা ফিরে এলে গরিব মানুষের জমি-জায়গা, চাষ-আবাদ সব কেড়ে নেবে।’
২০০১-এ মন্ত্রিসভায় রেজ্জাক মোল্লার পদোন্নতি হল। তিনি হলেন, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর মন্ত্রিসভার ভূমি ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রী। সল্টলেকের ময়ূখ ভবন থেকে এলেন রাইটার্স বিল্ডিংসে। তাঁর ঘরে আমার অবাধ যাতায়াত নিয়ে সাংবাদিক বন্ধুদের কেউ কেউ অনুযোগ করলে একদিন বলেন, ‘আমি এবারই প্রথম মন্ত্রী হইনি। যখন ময়ূখ ভবনে বসতাম আপনারা কেউ তখন আমার কাছে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি। যে গিয়েছে তাঁকে তো একটু প্রশ্রয় দেবই। এটা আমার অধিকার।’
সরকারের যে গোটা তিন-চার দফতরকে রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর এবং বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয় ভূমি ও ভূমি সংস্কার তার মধ্যে অন্যতম। যুক্তফ্রন্ট সরকারের সময় হরেকৃষ্ণ কোঙার, বামফ্রন্ট আমলে দীঘ সময় বিনয়কৃষ্ণ চৌধুরীর মতো পার্টি সংগঠনে ওজনদার নেতা ওই দফতর সামলেছেন। দফতরটি শুধু জমি বণ্টন আর পাট্টা, দলিল বিলি করে না, বাড়িভাড়া সংক্রান্ত আইনটিও কার্যকর করে থাকে। ২০০১-এর নতুন বাড়িভাড়া আইনের বিরুদ্ধে রাজ্যব্যাপী বাড়িওয়ালাদের বিক্ষোভ-আন্দোলনের প্রধান কারণ ছিল রেজ্জাক মোল্লা কেন্দ্রের তখনকার কংগ্রেস সরকারের ভাবনার বিপরীতে হেঁটে আইনে ভাড়াটিয়াদের স্বার্থ রক্ষা করেছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেনের সঙ্গে তাঁর মত বিরোধের সুত্রপাত ২০০৫-এ। মুখ্যমন্ত্রী ও শিল্পমন্ত্রী ইন্দোনেশিয়ায় গিয়ে সালিম গোষ্ঠীর সঙ্গে বাংলায় বিনিয়োগ নিয়ে কথা বলে আসার পর। ইন্দোনেশিয়ার সালিম গোষ্ঠী যে সব প্রকল্প করবে বলে জানায় তাতে হাজার হাজার একর জমিতে থাবা বসাতে হত। সেই জমি অধিগ্রহণ করে দেওয়ার দায়িত্ব বর্তেছিল রেজ্জাক মোল্লার উপর। একদিন কথায় কথায় ক্ষোভের সঙ্গে বললেন, ‘বুঝলে ভায়া, বুদ্ধদা যা চাইছেন তাতে এবার বোধহয় দফতরের নাম বদলে ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে।’
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যে প্রচেষ্টা নিয়ে রেজ্জাক মোল্লার আপত্তি ছিল না। আপত্তি ছিল শিল্প-কারখানার নামে শত শত একর উর্বর জমিতে হাত পড়ায়। সিঙ্গুরে টাটাদের কারখানার জন্য ৯৭৭ একর জমি কেন লাগবে, এ প্রশ্ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগে রেজ্জাক মোল্লা তুলেছিলেন। ভূমি মন্ত্রীর নোট পেয়ে চমকে উঠেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রীর দফতরের বাঘা বাঘা অফিসারেরা। শোরগোল পড়েছিল সিপিএমের অন্দরে।
ভূমিমন্ত্রী রেজ্জাক তখন প্রায়ই বলতেন, ‘আমরা হলাম জমি বিলনোর পার্টি। সরকারের হাতে এখন জমি নেই, তাই বিলোতে পারি না। সেই আমরা যদি জমি কেড়ে নিতে শুরু করি তাহলে মানুষ আমাদের সঙ্গে থাকবে কেন?’ আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি, সেই সব দিনে সিপিএমের আশি-নব্বুই ভাগ নেতা এবং মুখ্যমন্ত্রী ও শিল্পমন্ত্রী বাদে গোটা মন্ত্রিসভা আড়ালে রেজ্জাক মোল্লার পাশে ছিলেন। তবে মুখ ফুটে কারও বলার সাহস ছিল না। সিপিএমে তখন বুদ্ধ-অনিল-নিরুপম জমানা চলছে। বুদ্ধদেববাবুর আগল আলগা হতে শুরু করে ২০০৬-এর বিধানসভা ভোটের মুখে অনিল বিশ্বাস আচমকা মারা যাওয়ায়। বুদ্ধদেববাবুর কাছে তা ছিল বিনা মেঘে বজ্রাঘাতের মতো।
জমি নিয়ে বুদ্ধদেববাবুর সঙ্গে রেজ্জাক মোল্লার বিরোধ অনেক দূর গড়িয়ে গিয়েছিল। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রীর বারে বারে মুণ্ডপাত করেছেন ভূমি মন্ত্রী। ২০১১-তে বামফ্রন্ট সরকারের পতনের পর বুদ্ধদেববাবু সম্পর্কে বিদ্রুপ করে বলেছিলেন, ‘হেলে ধরতে পারে না, কেউটে ধরতে গেছে।’
কিন্তু রেজ্জাক মোল্লার বিরোধিতা শুধু জমির প্রশ্নে ছিল না। তাঁর সঙ্গে নানা সময়ে কথা বলে আমি বুঝেছি, পার্টি ও সরকারের বিরুদ্ধে তাঁকে ক্ষিপ্ত করে তুলেছিল সাচার কমিটির রিপোর্ট। যে রিপোর্টে বলা হয়েছিল, বেশিরভাগ রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে মুসলিমদের অবস্থা খারাপ। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সরকারি চাকরি, কর্মসংস্থানে মুসলিমদের পশ্চাৎপদতা রেজ্জাক মোল্লাকে ভাবিয়ে তুলেছিল। সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যই বাংলার মুসলিম সমাজের উন্নতির জন্য এমন কিছু পদক্ষেপ করেন যা কালজয়ী। পিছিয়ে থাকা মুসলিমদের ওবিসি তালিকাভুক্ত করা ছিল তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। বিলম্ব হলেও উচ্চশিক্ষায় ওবিসি সংরক্ষণ তাঁর সময় চালু হয় যার সুবিধা সংখ্যালঘুরাও পাচ্ছে।
অন্যদিকে, রেজাক মোল্লা বাংলার মুসলিমদের একটি মৌলিক সমস্যা সরকার ও পার্টির সামনে তুলে ধরছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল বাংলার মুসলিমদের বেশিরভাগ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চাষআদারের সঙ্গে যুক্ত। তিনি হাতিয়ার করেছিলেন জনগণনা এবং ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভে অর্গানাইজেশন বা এনএসএসও-র রিপোর্ট। তিনি বলতেন, জমি চলে গেলে মুসলিমর, ওবিসি’রা না খেয়ে মরবে। সাচার কমিটির রিপোর্ট তুলে ধরে বলতেন, কলকারখানা হলেও উচ্চশিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা না থাকায় সেখানে মুসলিম ঘরের ছেলেমেয়েরা চাকরি পাবে না।
শিল্পের নামে জমি নেওয়ার কারণে সামগ্রিক গরিব মানুষ সরে যাচ্ছে সে কথাও পার্টিকে বলেছেন বারে বারে। ২০০৮-এর পঞ্চায়েত ভোটের সময়ের একটি ঘটনার কথা মনে আছে। মনোনয়ন পেশের সময় একদিন রাইটার্সে এসে রেজ্জাক মোল্লা সাংবাদিকদের সামনেই সিপিএমের রাজ্য দফতরে পার্টির এক বড় নেতাকে ফোনে বললেন, ‘গরিব মানুষ এবার সিপিএমের পাছায় লাথি মারবে।’ আমাদের বললেন, বিডিও অফিসে দেখে এলাম, সিপিএম সব স্নো-পাউডার মাখা চকচকা লোকেদের প্রার্থী করেছে। তারা সব নব্য সুবিধাভোগী। বাড়ি, ব্যবসা হাঁকিয়েছে। এলাকার মানুষ যাদের ত্যাগ করেছে। তৃণমূলের প্রার্থীরা সব বঞ্চিতের দল।’
সাচার কমিটির রিপোর্ট নিয়ে রেজ্জাক মোল্লা তখন পার্টি, পার্টির বাইরের বহু লোকের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেন। কিছু ঘনিষ্ঠজনের পরামর্শে মুসলিম স্বার্থে সরব হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সঙ্গে জুড়েছিলেন তফসিলি জাতি, ওবিসি’দের। ওই পর্বেই নিজের ‘চাষার ব্যাটা’ পরিচয় সামনে এনে কাঁধে গামছা রাখা শুরু করেন, যা সেই ষাট-সত্তরের দশকে সিপিএমেক কৃষক নেতা হরেকৃষ্ণ কোঙার রাখতেন।
রেজ্জাক মোল্লা এভাবেই গরিব চাষি, পিছিয়ে থাকা হিন্দু ও মুসলিম সমাজকে বার্তা দিতে চেয়েছিলেন। প্রায়ই এই বলে আক্ষেপ করতেন, ‘বাংলায় কোনও নেতাই বাঙালি মুসলমানের অভাব-অভিযোগের কথা তুলে ধরার চেষ্টা করেননি।’
কথাটা ভুল ছিল না। কাজটা মুসলিম নেতারাও করেননি। কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা গণিখান চৌধুরী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু গোটা বাংলার নেতা হওয়ার চেষ্টা ছিল না। কংগ্রেসের অন্য মুসলিম নেতারাও নিজেদের মূলত নির্বাচনী এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রেছেছিলেন। ৩৪ বছর বাংলা শাসন করা সিপিএম বাঙালি মুসলমানদের সামনের সারিতে আসতে দেয়নি। উর্দুভাষীরাই বরাবর পার্টির মুখ।
এসব নিয়ে রেজ্জাক মোল্লার খেদের কথা সিপিএমে জানতেন দু’জন, বর্তমান বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু আর পার্টির প্রয়াত রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাস। কিন্তু তাঁরাও দল ও সরকারের অভিমুখ ঘোরাতে পারেননি। ফলে একটা সময় নিজের ধর্মীয় স্বত্ত্বাকে সামনে আনা শুরু করেন ভূমিমন্ত্রী রেজ্জাক। ইদের নমাজে অংশ নিতে শুরু করেন। বলেন, কমিউনিস্ট পার্টি করি বলি সমাজ থেকে আলাদা হতে পারব না। আমি মুসলমান। ইদ মুসলমানের সবচেয়ে বড় উৎসব।
এই সবের মধ্যে আমাকে এক সাক্ষাৎকারে মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির রাজ্য কমিটির সদস্য রেজ্জাক মোল্লা বলেছিলেন, ‘মার্কসের থেকে মহম্মদ বড়।’ সেই সাক্ষাৎকার পরের দিন হিন্দি, ইংরিজি ও অন্যান্য ভাষার বেশ কিছু কাগজ অনুবাদ করে ছাপে। রেজ্জাক মোল্লার ওই বক্তব্য পার্টি থেকে বহিষ্কারের রাস্তা প্রসস্ত করেছিল। তিনিও আর সিপিএমে থাকতে চাইছিলেন না।
তৃণমূলে গিয়েছিলেন, মন্ত্রী হয়েছিলেন এই আশা নিয়ে তিনি বাঙালি মুসলিম আর পিছিয়ে থাকা হিন্দুসমাজের মুখ হবেন। কাস্তে-হাতুড়ি ছেড়ে জোড়াফুল হাতে তুলে নিলেও সে আশা পূরণ হয়নি। বেশি বয়সে দীর্ঘ অসুস্থতার কারণে মৃত্যুর একটা দিক হল, স্মৃতি এতটাই মলিন হয়ে আসে যে শেষের দিনগুলিতে আর জীবনে না পাওয়ার যন্ত্রণা তাড়া করে বেড়ায় না। রেজ্জাক মোল্লাকেও আশাকরি তা তাড়া করেনি।