শেষ আপডেট: 21st February 2024 07:56
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের গ্রেফতার করা হয়েছে ‘মিডিলম্যান’ প্রসন্ন রায়কে। এর আগে সিবিআই গ্রেফতার করেছিল প্রসন্নকে। পরে জামিনে ছাড়া পান তিনি। এবার ফের টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে প্রসন্ন রায়কে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। আদালতে ইডি জানিয়েছে, ‘অযোগ্য’ চাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকা নিয়ে নিয়োগপত্র দিয়েছেন প্রসন্ন রায়। কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে ২ হাজারের বেশি জনকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন দিনি। ১০০ কোটির উপরে টাকা তুলেছেন চাকরি দেওয়ার নামে।
ইডি আদালতে জানিয়েছে, দুশোর বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট প্রসন্নর। মোট ২ হাজার ৮১ জনকে প্রসন্ন রায় চাকরি দিয়েছে অর্থের বিনিময়ে। এর মধ্যে নবম-দশমে প্রায় ১ হাজার ১৩৫ জনকে এবং একাদশ-দ্বাদশে ৯৪৬ জনের চাকরি হয়েছে। অনেক চাকরিপ্রার্থীর উত্তরপত্র (ওএমআর শিট)-এ কারচুপি করা হয়েছে। এ ছাড়াও, ১৮৩ জন প্রার্থীকে প্যানেলের মেয়াদ উর্ত্তীণ হয়ে যাওয়ার পর নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল। ইডির দাবি, এই বেআইনি নিয়োগের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ছিলেন প্রসন্ন। প্রসন্নর বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়ে চারশোর বেশি দলিল ও নথিপত্র পাওয়া গেছে। ইডির অফিসাররা জানিয়েছেন, দুশোর বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা ঢুকেছে প্রসন্ন রায়ের।
প্রসন্ন বর্তমানে জেলে। নিউ টাউনের যে ফ্ল্যাটে সারা দিন ধরে তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই, সেটি তাঁর স্ত্রীর নামে রয়েছে। ওই ফ্ল্যাটেই বুধবার সকালে হাজির হন ইডির অফিসাররা। সেখান থেকে বেশ কিছু নথি উদ্ধার করা হয়েছে। নিয়োগ মামলায় গত বছরও প্রসন্ন গ্রেফতার হন। তাঁর কাছ থেকে নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক নথি উদ্ধার হয়েছিল। সিবিআই সূত্রে খবর, ২০০২ সাল থেকে গাড়ি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত প্রসন্ন। আগে উত্তর কলকাতায় এই সংস্থার দফতর ছিল। পরে সল্টলেকে সরিয়ে নিয়ে যান। প্রসন্ন সংস্থার এক কর্মীকে জেরা করে জানা গেছে, শিক্ষা দফতরেও নাকি গাড়ি ভাড়া খাটাতেন প্রসন্ন। ইডি আরও দাবি করেছে, ২০১৬-২০২১ সালের মধ্যে বহু টাকার সম্পত্তি কিনেছেন প্রসন্নের পরিবারের সদস্যেরা। প্রসন্নর অফিস থেকেই উদ্ধার হয়েছে ৩৯২টি জমির দলিল। এইসব জমি পরিবারের সদস্যদের নামে কেনা হয়েছিল।
ইডি সূত্রের খবর, প্রসন্ন ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ। পার্থর এক আত্মীয়র সঙ্গে বিয়ে হয়েছে প্রসন্নর। ইডি মনে করছে সেই সূত্রেই প্রসন্ন হয়ে উঠেছিলেন এসএসসি-র অন্যতম দালাল। তাঁর অফিস হয়ে উঠেছিল টাকা লেনদেনের কেন্দ্র। যদিও প্রসন্নর আইনজীবী জামিনের আবেদন করে দাবি করেছেন, প্রসন্নের কাছে কোনও টাকা পাওয়া যায়নি। শুধু কিছু নথি পাওয়া গিয়েছে। বছরে ৮-১০ কোটি টাকা ট্যাক্সও নাকি দিতেন তাঁর মক্কেল। তবে জামিনের আর্জি খারিজ করে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রসন্নকে ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।