শেষ আপডেট: 9 May 2025 20:00
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: বাংলাকে ভারত সেরা করার পুরস্কার পেলেন রবি হাঁসদা। পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার তিনি কলকাতার ব্যারাকপুরের লাট বাগানে এএসআইয়ের ফাস্ট ব্যাটেলিয়ান পদে যোগ দিলেন। তার আগে গত সাতদিনের প্রশিক্ষণ শেষ করেন রবি হাঁসদা।
মঙ্গলকোট থানার মুশারু গ্রামের আদিবাসীপাড়ায় বাড়ি রবির। বাবা সুলতান হাঁসদার স্বপ্ন ছিল ছেলে একদিন বড় ফুটবলার হবে। সকলের মুখ উজ্জ্বল করবে। অসুস্থ হয়ে পড়ায় শেষের দিকে আর জনমজুরি করতে যেতে পারতেন না। ঋণ নিয়ে একটি টোটো কিনে ভাড়া খাটাতেন সুলতান। কিন্তু ছেলের সাফল্য চোখে দেখে যাওয়া হয়নি বাবার। বছর দুয়েক আগে হৃদ্রোগে মারা যান তিনি। মা তুলসী হাঁসদা জনমজুরি করে সংসার সামলান। তবুও তুলসীদেবী ছেলেকে কখনও মাঠে কাজ করতে পাঠাননি। রবির অনুশীলনে ঘাটতি চাননি তিনি। সন্তোষ ট্রফির ফাইনালে রবির গোলেই কেরলকে হারিয়ে জিতেছিল বাংলা।
রবির মা তুলসীদেবী চেয়েছিলেন, রবি চাকরি পেয়ে সংসারের দারিদ্র্য দূর করবে। সন্তোষ ট্রফি জেতার পরই রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল, রবিদের চাকরি দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে ঘোষণা করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী কথা রাখলেন বলে জানান রবি হাঁসদা। তিনি বলেন, "যত দিন আমি খেলতে পারব, ততদিন পুলিশের চাকরি করলেও খেলার জন্য ছুটি পাব।"
খুশি রবির মা তুলসী হাঁসদা। তিনি বলেন, "এরপর আমাদের দুঃখের দিন শেষ হবে।" ছেলে পুলিশের চাকরিতে যোগ দেওয়ায় তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এক সময় রবির মা কাজে না গেলে বাড়িতে হাঁড়ি চড়ত না। তুলসীদেবীর এক ছেলে এবং এক মেয়ে। রবির বোন রাসমণির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। মুশারু আদিবাসীপাড়া মিলন সংঘ ক্লাবের মাঠে ফুটবলচর্চা করেন রবি। ৬-৭ বছর বয়স থেকেই এই মাঠে ফুটবল খেলা শুরু তার। ১২ বছর বয়সে ভাতারে একাদশ অ্যাথলেটিক্স ক্লাবের ফুটবল কোচিং ক্যাম্পে ভর্তি করে দেওয়া হয় আর্থিক অনটনের মধ্যেই। তখন থেকেই প্রশিক্ষণের শুরু।