শেষ আপডেট: 4th February 2025 17:50
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কলকাতা পুলিশকে ঢেলে সাজতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রস্তাবে অনুমোদন দিল রাজ্য মন্ত্রিসভা।
স্বরাষ্ট্র তথা পুলিশ দফতর মুখ্যমন্ত্রীর অধীনে রয়েছে। সূত্রের খবর, রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব কুমারের পরামর্শেই এই সংস্কারের পথে হাঁটলেন মুখ্যমন্ত্রী। ডিজি রাজীব কুমার তাঁর আস্থাভাজন পুলিশ কর্তা। কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদে দীর্ঘদিন ছিলেন তিনি। লালবাজারের তাঁর অধঃস্তন পুলিশ কর্তারা এখনও বলেন, রাজীব কুমার ফোর্সের ব্যাপারে যতটা আন্তরিক ছিলেন হালফিলে কাউকে তেমন দেখা যায়নি। তা ছাড়া তদন্তেও বরাবরই চোখা এই দুঁদে পুলিশ কর্তা।
নবান্ন সূত্রের মতে, কলকাতা পুলিশ আর ডিজির অধীনে নয়। কলকাতা পুলিশের কমিশনার সরাসরি স্বরাষ্ট্র সচিব ও মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট করেন। তবে এ ব্যাপারে ডিজি রাজীব কুমারের মস্তিষ্কই রয়েছে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মার সঙ্গে আলোচনা করে তিনিই এই প্রস্তাব সাজিয়েছেন। এবং সেই প্রস্তাব মতো এবার কলকাতা পুলিশে নতুন ১২টি ডেপুটি কমিশনার পদ তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যে পাঁচ জনের কাজই হবে তদন্তে নেতৃত্ব দেওয়া।
আরজি কর পরবর্তী অধ্যায়ে এই পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বস্তুত আরজি করের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ডিজি রাজীব কুমার পুলিশি ব্যবস্থায় কিছুটা সংস্কার এনেছেন। যেমন, কোনও বড় অপরাধের ঘটনা ঘটে গেলে, দ্রুত তদন্ত করা। এফআইআর লেখা থেকে ময়নাতদন্ত—প্রক্রিয়াগত কোনও ত্রুটি না রাখা। যাতে পরে আদালতে গিয়ে কোনও প্রশ্নের মুখে পড়তে না হয়। এবং তিন, আইনের ধারা মেনে নির্ভুল ভাবে চার্জশিট তৈরি করা। বস্তুত তাঁর পরামর্শেই সম্প্রতি সরকার প্রতিটি জেলায় পুলিশকে সাহায্য করার জন্য আইনি উপদেষ্টা নিয়োগ করেছে।
এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর নবান্ন সূত্রে জানানো হয়েছে, নতুন যে ১২ জন ডেপুটি কমিশনার হবে তাঁরা সবাই নন আইপিএস ক্যাডার অফিসার। কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদ থেকে তাঁরা পদোন্নতির মাধ্যমে উঠে আসবেন। বর্তমানে যে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদ রয়েছে তাকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা হবে। অর্থাৎ গ্রেডেশন লিস্ট বা তালিকা বিভাজনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দুটি পৃথক গ্রেডেশন তালিকায় তাদের বিভক্ত করা হবে—একটি সহকারী কমিশনার AC- I বা ইনভেস্টিগেশন তথা তদন্তকারী ক্যাডার এবং অন্যটি সহকারী কমিশনার AC NI, অর্থাৎ যাঁদের তদন্তের দায়িত্ব থাকবে না, প্রশাসনিক বা প্রশিক্ষণের দায়িত্ব থাকবে।
এই সহকারী কমিশনার AC- I ক্যাডারের অফিসারদের পদোন্নতির মাধ্যমে কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ পদে তুলে আনা হবে। যাঁদের উপর বড় তদন্তের ভার থাকবে। আর এসিপি-এনআই (ACP-NI) ক্যাডার থেকে পৃথকভাবে পদোন্নতির মাধ্যমে ৭ জন অফিসারকে ডেপুটি কমিশনার পদে তুলে আনা হবে। সেই কারণেই ৫টি ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ (নন-আইপিএস) পদ আই (I- Investigation) ক্যাডারের জন্য এবং ৭টি ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ (নন-আইপিএস) পদ এনআই ক্যাডারের জন্য সৃষ্টির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবারের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী তাতে অনুমোদন দিয়েছেন।