শেষ আপডেট: 21st October 2024 17:39
দ্য় ওয়াল ব্যুরো, বীরভূম: পুজোর আগেই তিহাড় জেল থেকে বাড়ি ফিরেছেন বীরভূমের 'বাঘ' অনুব্রত মণ্ডল। সংগঠন চাঙা করতে কর্মিদের সঙ্গে সভাও করছেন। কয়েকদিন আগেই মুরারইয়ের সভা থেকে কর্মীদের একজোট হতে বলেছিলেন। কিন্তু এবার তাঁর গলা শোনা গেল অন্য সুর। তৃণমূল জেলা সভাপতির পদ ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে ফেললেন অনুব্রত। তবে এই মুহূর্তেই নয়। ২০২৬ সালের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চতুর্থবার মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসিয়ে তবেই জেলা সভাপতির পদ ছাড়বেন কেষ্ট।
সোমবার সিউড়ির পুরন্দরপুর এলাকার বিজয়া সম্মেলন ছিল। সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। সেখানে বক্তব্য় রাখতে গিয়ে কেষ্ট বলেন, "নুরুল খুব ভালো ছেলে। আমরা একসাথে রাজনীতি করেছি এবং একসাথে কাজ করেছি। আমি নুরুলকে বলব এখনই পদ না ছাড়ার কথা। আরেকবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করে দেওয়ার পর ছাড়তে হলে, একসাথে দুই দাদা ভাই মিলে ছাড়ব।"
বীরভূমে অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত নুরুল ইসলাম। দুজনেই প্রায় একই সঙ্গে রাজনৈতিক জীবনে পথ চলা শুরু করেছিলেন। অনেকেই নুরুল ইসলামকে 'ছোট কেষ্ট' নামে ডাকেন। নুরুল সিউড়ি ২ ব্লকের সভাপতি। চলতি বছরের জুলাই মাসে তিনি পদত্যাগ করার ইচ্ছে প্রকাশ করে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ও শতাব্দী রায়কে চিঠি লিখেছিলেন। তাঁর পদ ছাড়ার নিয়ে রাজনৈতিক শোরগোল পড়ে যায় সেই সময়ে। পদ ছাড়ার কারণ প্রসঙ্গে নুরুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, তিনি পরবর্তী প্রজন্মের হাতে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চান। তিনি মেন্টর হয়ে থাকতে চেয়েছিলেন। যদিও বিজেপির দাবি ছিল নুরুল ভয়ে পেয়েই পদ ছাড়তে চাইছেন। কারণ তাঁর নামে ভুয়ো অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছিল সিবিআই।
তিহাড় থেকে ফিরে অনেকটাই ঝাঁঝ কমেছে অনুব্রত মণ্ডলের। এখনও পর্যন্ত তিনি যতগুলো কর্মী সভায় উপস্থিত হয়েছেন, সেখানে তাঁকে নরম সুরে কথা বলতে শোনা গিয়েছে। অনুব্রতের এমন ইঙ্গিতে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, গরুপাচার মামলা থেকে জামিনে মুক্ত অনুব্রত। মামলা এখনও চলছে। তাই এখন কোনও কিছুতে ঝুঁকিতে নিতে চাইছেন না বীরভূমের দাপুটে নেতা। অন্য দিকে তিনি অনেকটাই অসুস্থ। ভাঙা শরীর নিয়েই তিনি কর্মিদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। আলগা হয়ে যাওয়া সংগঠনের রাশ শক্ত হাতে বাঁধতে চাইছেন। তাই হয়ত এই ভাবে বীরভূমের মাটিতে অন্তর্দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নব প্রজন্মের হাতেই সংগঠনের দায়িত্ব তুলে দিতে চাইছেন বীরভূমের এই দাপুটে নেতা।