শেষ আপডেট: 14th August 2024 14:38
প্রীতি সাহা
কামদুনি থেকে আরজিকর হাসপাতাল, দূরত্ব কত? গুগল ম্যাপ অনুযায়ী, ভায়া রাজারহাট রোড ধরে এগোলে ২০.২ কিলোমিটার।
মঙ্গলবার দুপুর, আরজিকরে ডাক্তারি পড়ুয়া খুনের ঘটনায় তখনও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়নি কলকাতা হাইকোর্ট। কামদুনি থেকে আরজিকরে এসেছিলেন প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। কামদুনি প্রাথমিক স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক। আরজিকর চত্বর ঘুরে বোঝার চেষ্টা করছিলেন, সেই রাতে হাসপাতালে ঠিক কী ঘটেছিল?
দেখা হল দ্য ওয়ালের সঙ্গে। একরাশ ক্ষোভ উগরে বললেন, "কিচ্ছু ফারাক নেই, ১৩ বছর আগে ভর সন্ধেয় কামদুনি গ্রামে আমার কন্যাসম ছাত্রীকে খুবলে শেষ করেছিল জানোয়ারগুলো। আজও সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলা চলছে। আরজিকরেও সেই একই ঘটনা ঘটল!"
আক্ষেপের সুরে মাস্টারমশাই বলছিলেন, "কামরুলের ঘটনার সময় প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা আমাদের মাওবাদী তকমা সেঁটে দিয়েছিল। পরে প্রমাণিত হয় যে প্রশাসনের নানা ওই অভিযোগ ঠিক ছিল না। আরজিকরেও দেখুন, মেয়েটিকে নৃশংসভাবে খুন করা হল, অথচ পুলিশ তাঁর বাড়িতে ফোন করে বলল, মেয়েটি সুইসাইড করেছে! প্রশাসনের কর্তারা এরকম কথা বললে বিচার পাওয়া সত্যি খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়!"
কী ঘটেছিল কামদুনিতে? ২০১৩ সালের ৭ জুন। দিনভর বৃষ্টি। সময়ের আগেই সেদিন নেমে এসেছিল সন্ধে। পরীক্ষা দিয়ে গ্রামের রাস্তা ধরে বাড়ি ফিরছিল ডিরোজ়িও কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। আচমকা কয়েকজন পথ আটকে দাঁড়ায়। তারপরের ঘটনা নৃশংস বললেও কম বলা হয়। গণধর্ষণের শিকার হওয়া ছাত্রীর ছিন্নভিন্ন দেহ ঘিরে ক্ষোভের আগুনে জ্বলে উঠেছিল কামদুনি।
১৩ বছরের ব্যবধানে যেন সেই একই ঘটনা ফিরেছে কলকাতার আরজিকরে! যা নিয়ে আন্দোলিত সমাজ। ইতিমধ্যে আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্তও শুরু হয়েছে। কিন্তু কামদুনির মতো আরজিকরের মামলাও বছরের পর বছর বিচারাধীন থাকবে না তো? অপরাধীরা কি সত্যি সাজা পাবে? আশঙ্কায় কামদুনির মাস্টারমশাই প্রদীপ মুখোপাধ্যায়।