'আটকে থাকা ৬০০ মানুষকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে বের করতে যে টুকু বলপ্রয়োগ একান্ত জরুরি, সেটাই করা হয়েছে।'
সাংবাদিক বৈঠকে এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম এবং এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতীম সরকার।
শেষ আপডেট: 17 May 2025 13:37
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বৃহস্পতিবার রাতে বিকাশ ভবনের (Bikash Bhavan Incident) সামনে থেকে লাঠিচার্জ করে চাকরিহারা শিক্ষকদের হঠিয়ে দেওয়ার যে অভিযোগ উঠছে তা খারিজ করে দিল রাজ্য পুলিশ (West Bengal Police)।
এদিন দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক থেকে এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম এবং এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতীম সরকার পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিলেন, "পুলিশের বিরুদ্ধে বেধড়ক লাঠিচার্জের যে কথা বলা হচ্ছে, সেটা ঠিক নয়। শুরু থেকেই পুলিশ ধৈর্য-সংযমের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়েছে। পরে আটকে থাকা ৬০০ মানুষকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে বের করতে যেটুকু বলপ্রয়োগ একান্ত জরুরি, সেটাই করা হয়েছে।"
চাকরিহারা শিক্ষকদের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ভাঙতে রাত ৮টার পর সাইরেন বাজিয়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। তাতে একাধিক আন্দোলনকারী গুরুতর জখম হয়েছেন। অভিযোগ উড়িয়ে রাজ্য পুলিশের অন্যতম দুই শীর্ষ কর্তা বলেন, "বলপ্রয়োগ করার হলে বেলাতে ওরা যখন বিকাশ ভবনের গেট ভেঙেছিল তখনই তো পুলিশ সেটা করতে পারতো। বরং টানা ৭ ঘণ্টা ধরে পুলিশ ধৈর্য-সংযমের পরীক্ষা দিয়েছে।" তাঁরা এও বলেন, "ওরা তো গত ৯ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন, কই পুলিশ তো কোনও বাধা দেয়নি। বৃহস্পতিবারও পুলিশ শুধু আটকে থাকা মানুষজনকে উদ্ধার করতে গিয়েছিল।"
পুলিশের ওপরেই যে প্রথমে হামলা হয়েছে এবং পুলিশের কাছে সেই হামলার একাধিক ভিডিও ক্লিপিংসও রয়েছে বলেa দাবি করেছেন এডিজি আইনশৃঙ্খলা। এ ব্যাপারে একাংশ সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এডিজি আইনশৃঙ্খলা। জাভেদ শামিমের কথায়, "বলা হচ্ছে পুলিশ প্রোটোকল মানেনি? যাঁরা একথা বলছেন, তাঁদের জানা উচিত, বিকাশ ভবনের ভেতরে ৫৮টি দফতরের ৬০০ কর্মী দিনভর কাজ করার পরও সন্ধে পর্যন্ত সেখানে আটকে ছিলেন। তাঁদেরও বাড়ি ফেরার গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে। পুলিশ নাগরিকদের সেই অধিকার রক্ষা করতে গিয়েছিল।"
কোন পরিস্থিতিতে পুলিশ ন্যূনতম বল প্রয়োগ করতে বাধ্য হয়েছিল, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকার। তিনি বলেন, ভেতরে যাঁরা আটকে ছিলেন তাঁদের মধ্যে একজন সন্তানসম্ভাবা মহিলাও ছিলেন। আরেকজনের মায়ের অবস্থা গুরুতর, ওষুধ দিতে দেরি হয়ে যাচ্ছে, বেরোতে না পেরে তিনি বাধ্য হয়ে ওপর থেকে ঝাঁপ দেন। ওই তরুণীর পা ভেঙে যায়। এরপরই বাধ্য হয়ে পুলিশ যেটুকু বলপ্রয়োগ না করলে নয়, সেটুকুই প্রয়োগ করেছে।"
পুলিশের দাবি, রাত ৮টার পর বারে বারে মাইকে করে আন্দোলনকারীদের বলা হয়, যাঁরা ভেতরে আটকে রয়েছেন, তাঁদের বাইরে বেরোতে দেওয়ার জন্য।
এডিজির কথায়, "ঘণ্টার পর ঘণ্টা সাধারণ মানুষকে এভাবে আটকে রাখা কোনও গণতান্ত্রিক অধিকারের মধ্যে পড়ে না। তাঁদের উদ্ধার করতে গেলে প্রথমে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। এরপরই পুলিশ প্রতিরোধ করে।"
যাঁরা এই বিশৃঙ্খলা করেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানান পুলিশের দুই শীর্ষ কর্তা।