শেষ আপডেট: 29th October 2024 00:36
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মহিলা সাংবাদিককে হেনস্থার অভিযোগে সোমবার দুপুরেই সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যকে ডেকে পাঠিয়েছিল বরাহনগর থানা। খবর পেতেই বেশি দেরি না করে পুলিশের সঙ্গে দেখা করতে পৌঁছেও যান। বেশ কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পর বাড়ি ফিরে সাংবাদিক সম্মেলন করে তন্ময় কোনও রাজনৈতিক দলের দিকে সরাসরি আঙুল না তুললেও তিনি বুঝিয়ে দেন ‘এটা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত কুৎসা।’
সিপিএম থেকে সাসপেন্ডেড বর্ষীয়ান এই নেতা জানিয়ে দেন, ওই মহিলা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন। কারণ হিসাবে তিনি জানান, রবিবার সকালে বাম নেতার সাক্ষাৎকার নেওয়ার পর সকাল ১০টা ৪০ নাগাদ হাসিমুখেই তাঁর বাড়ি ছাড়েন মহিলা সাংবাদিক। আমার এক স্থানীয় বন্ধু তাঁকে হাসিমুখেই চলে যেতে দেখেন।’
তন্ময় এরপরই বিস্ফোরক অভিযোগ করেন। তিনি জানান, ডাক্তারদের নতুন সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য শ্রীশ চক্রবর্তীর একটি সাক্ষাৎকার নিতে যাওয়ার কথা ছিল মহিলা সাংবাদিকদের। সেই মতো উনি আমার থেকে একাধিক প্রশ্নের উত্তরও জানতে চেয়েছিলেন। নতুন সংগঠনের ডাক্তারকে কি প্রশ্ন করা উচিত নিয়ে দুজনের মধ্যে আলোচনাও হয়েছিল। পাশাপাশি অভিযোগকারিনী শ্রীশের সাক্ষাৎকার নেওয়ার পর নিজের অফিসে গিয়ে পুরো বিষয়টি জানান।
সোমবারই তন্ময়কে প্রায় তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। দুপুর দেড়টা নাগাদ থানায় গিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ বাড়ি ফিরেছেন। বুধবার ফের বরাহনগর থানায় তাঁকে তলব করেছে পুলিশ।
এদিন বিকেলে বাড়ি ফিরে সাংবাদিক সম্মেলন করে তন্ময় ভট্টাচার্য প্রশ্ন তোলেন, মহিলার ওজন যেখানে মাত্র ৪০ সেখানে তাঁর ওজন ৮৩! বাম নেতার আরও অভিযোগ, ‘ভাবুন তো সত্যি আমি যদি ওঁর কোলে বসে পড়তাম তাহলে কী উনি সুস্থ থাকতেন?’ তন্ময় বলেন, আমি কোনও রাজনৈতিক দলকে দায়ী করছি না। কিন্তু মহিলা সাংবাদিক আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর কীভাবে উনি ‘ট্রমাটাইজড’ অবস্থায় কীভাবে এত কাজ করলেন?
তন্ময় মনে করিয়ে দেন, ‘মহিলা যে সময়ে ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করছেন, তার প্রায় ২৫ মিনিট পরেও আমার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। এটা সুপরিকল্পিত কুৎসা ছাড়া আর কিছুই নয়।’ এদিকে অভিযোগ উঠতেই রবিবার সন্ধেয় সিপিএম তাঁকে সাসপেন্ড করে। তবে দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম যে বিবৃতি দিয়েছেন, তার সঙ্গে তিনি সহমত বলেই জানিয়েছেন তন্ময়। পরিষ্কার জানিয়ে দেন, 'এই ঘটনার জন্য দল তাঁকে দোষী বললেও তিনি বামপন্থী থাকবেন, দোষী না বললেও থাকবেন। কিন্তু দল পরিবর্তন কোনওভাবেই সম্ভব নয়।'
রবিবারই সিপিএম নেতার বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তোলেন এক মহিলা সাংবাদিক। সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করে হেনস্থার ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আনেন তিনি। লেখেন, 'চার বছর সাংবাদিকতা করছি কিন্তু এত খারাপ অভিজ্ঞতা আমার কখনও হয়নি। আসলে পোটেনশিয়াল রেপিস্ট এরাই। এদের চিনে রাখা দরকার।'
সাংবাদিকের অভিযোগের পর সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্য ওয়াল। তিনি বলেন, 'দ্য ওয়ালের যে সাংবাদিকরা আমার কাছে এসেছেন এর আগে তাঁদের যদি জিজ্ঞেস করেন, দেখবেন তাঁদের সঙ্গেও আমি ইয়ার্কি করেছি।' একাধিক সংবাদমাধ্যমের মহিলা কর্মীদের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, 'তাঁদের সঙ্গেও আমি ইয়ার্কি করেছি।'