শেষ আপডেট: 18th February 2025 13:26
রাজনীতিতে নাটকীয়তা বরাবরই ছিল। পেট্রল, ডিজেলের দাম বাড়ায় একবার অটলবিহারী বাজপেয়ী গরুর গাড়ি চড়ে সংসদে এসেছিলেন। আবার পেঁয়াজের দাম বাড়ায় একবার বিরোধী দলের এক সাংসদ গলায় পেঁয়াজের মালা পরে এসেছিলেন। যা দেখে শাসক দলের সাংসদ টিপ্পনি কেটে বলেছিলেন, জুতোর দাম বাড়লে কী করবেন!
রাজনীতিতে সেই নাটকীয়তার আবহমান ধারা যে জিইয়ে রয়েছে, মঙ্গলবার তা বেশ ঠাওর করা গেল রাজ্য বিধানসভায়। সভার মধ্যে সু-আচরণ না করায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ চার বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তার প্রতিবাদে এদিন বিধানসভার সিঁড়িতে ধর্নায় বসেন বিজেপি বিধায়করা।
কিন্তু শুধু তো ধুপ করে বসে পড়া নয়, সেই অবস্থান বিক্ষোভের প্রাক প্রস্তুতিও ছিল দেখার মতো। বিধানসভায় বিরোধী দলনেতার ঘর হয়ে উঠেছিল যে গ্রিন রুম। শোভাবাজার থেকে বাপন সাফাওয়ালাকে ডাকা হয়েছিল গেরুয়া পাগড়ি পরাতে। কলকাতায় অবাঙালি বিয়ের অনুষ্ঠানে বর ও কনে পক্ষকে পাগড়ি পরানোর কাজ করেন এঁরা। পাগড়ি পরানোর কেতায় বলে দিচ্ছিল, এঁরা বেশ পেশাদার। পটাপট পাগড়ি পরিয়ে দিচ্ছেন। প্রথমে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার পর অগ্নিমিত্রা পল সহ অন্তত ৫০ জন বিধায়ককে পাগড়ি পরান তাঁরা।
এই সাফা তথা পাগড়ি পরাতে আসা সন্দীপ সিং বলেন, “এত বড় বড় লোককে পাগড়ি পরাতে এসে একটা ভাল এক্সপিরিয়েন্স হল। আমাদের মালিককে বরাত দিয়েছিল। আমরা পাগড়ি পরাতে এসেছি”।
শুধু কি পাগড়ি। বিজেপি বিধায়কদের জন্য এদিন সাদার উপর প্রিন্ট করার টি শার্টও এসেছিল। স্বামী বিবেকানন্দর বাণীকে উদ্ধৃত করে তাতে লেখা ‘গর্ব করে বলো আমি হিন্দু’।
মোদ্দা বিষয় হল, বিজেপি বাংলায় আরও কড়া পাকের হিন্দু রাজনীতির স্রোতে ভাসতে চাইছে। তবে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, এই যে নাটকীয়তা, পাগড়ি পরা, গেরুয়া বসন, হিন্দু স্লোগান—তার মোড়কে সরকার প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার বিষয়আশয়গুলো আদৌ দেখা যাচ্ছে নাকি হারিয়ে যাচ্ছে?
এই পাগড়ি কি সত্যিই বাঙালিয়ানার প্রতীক! নাকি এই পাগড়ি প্রমাণ করে যে বিজেপি আদতে হিন্দিবলয়ের পার্টি। বাংলায় তাদের আবেদন দুর্বল।