দ্য ওয়াল ব্যুরো : কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছিল, পেগাসাস রিপোর্ট নিয়ে বিরোধীরা সরব হলে জোরালোভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করবে তারাও। সেইমতো এদিন নতুন তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো পাল্টা আক্রমণ করলেন বিরোধীদের। লোকসভায় তিনি বলেন, সংসদের অধিবেশন বসার ঠিক একদিন আগেই পেগাসাস রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এই ঘটনা কাকলালীয় হতে পারে না। এদিন লোকসভার অধিবেশনের শুরু থেকেই তুমুল চিৎকার করেন বিরোধীরা। তারই মধ্যে মন্ত্রী বলেন, পেগাসাস রিপোর্টের পক্ষে কোনও প্রমাণ নেই।
মন্ত্রীর কথায়, "গত রাতে একটি ওয়েব পোর্টালে অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ করা হয়েছে। সংসদে বাদল অধিবেশন শুরুর ঠিক আগেই এই রিপোর্ট প্রকাশিত হল। এই ঘটনা কাকতালীয় হতে পারে না।"
পরে অশ্বিনী বৈষ্ণো বলেন, "অতীতেও অভিযোগ উঠেছিল, পেগাসাস স্পাইওয়ার ব্যবহার করে হোয়াটস অ্যাপে আড়ি পাতা হচ্ছে। ওই রিপোর্টের কোনও ভিত্তি ছিল না। কোনও দলই সেকথা বিশ্বাস করেনি। ১৮ জুলাইয়ের ওই রিপোর্টও ভারতের গণতন্ত্রের বদনাম করার জন্য প্রকাশিত হয়েছে।"
কয়েকদিন আগেই মন্ত্রিসভায় রদবদল করেছেন মোদী। বাদল অধিবেশনের শুরুতে তিনি লোকসভায় নতুন মন্ত্রীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু পেগাসাস কাণ্ড নিয়ে বিরোধীদের তুমুল চিৎকারে ডুবে যায় তাঁর গলা।
অধিবেশন শুরুর আগে মোদী বলেছিলেন, বিরোধীরা নিশ্চয় কঠিন প্রশ্ন করবেন, কিন্তু সরকারকেও তার জবাব দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। কিন্তু এদিন নিয়মমাফিক নতুন মন্ত্রীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সুযোগই পাননি প্রধানমন্ত্রী।
বিরোধীদের তুমুল চিৎকারের মাঝে এদিন লোকসভার অধিবেশন বেলা দু'টো পর্যন্ত স্থগিত হয়ে যায়। পরে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, হয়তো কেউ কেউ চায় না, মহিলা, ওবিসি এবং কৃষক পরিবারের সন্তানরা মন্ত্রী হন। তাই তাঁরা নতুন মন্ত্রীদের পরিচয় করাতে দিলেন না।
রবিবার সর্বদলীয় বৈঠকে সরকার প্রস্তাব দিয়েছিল, সংসদের সংযোজিত ভবনে দুই কক্ষের যৌথ অধিবেশন হোক। সেখানে প্রধানমন্ত্রী কোভিড নিয়ে বক্তব্য পেশ করবেন। কিন্তু বিরোধীরা তাতে আপত্তি করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, এভাবে সংসদের রীতিনীতি ভাঙা উচিত হবে না। তৃণমূল, সিপিএম সহ বিভিন্ন বিরোধী দলের এমপি বলেন, কোভিড সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয় নিয়ে সংসদের মধ্যেই আলোচনা হওয়া উচিত। তার বাইরে যাওয়ার দরকার নেই।
সর্বদলীয় বৈঠকে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশি বলেন, ২০ জুলাই প্রধানমন্ত্রী কোভিড নিয়ে ভাষণ দেবেন। কিন্তু তিনি সংযোজিত ভবনের কথা বলতেই অসন্তুষ্ট হন বিরোধীরা। তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ওব্রায়েন বলেন, "এভাবে সংসদকে পাশ কাটানো হচ্ছে। সাংসদরা শৌখিন পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন চান না। সংসদের অধিবেশন চলছে। সরকারকে যা বলার সংসদের অভ্যন্তরেই বলতে হবে।"