ঘরেই তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী ফ্রিজিং বাক্স। পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে স্কুল কর্তৃপক্ষের অত্যাচারের শিকার হচ্ছিল তাঁদের ছেলে। সেই কারণেই ঘটে গিয়েছে এই মর্মান্তিক পরিণতি।
ছবি- এআই
শেষ আপডেট: 6 July 2025 10:04
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ছেলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় সবরকম চেষ্টা করছিলেন মালদহের দম্পতি। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেছিলেন। স্কুল হস্টেলে (School Hostel) থেকেই পড়াশোনা করছিল শ্রীকান্ত মণ্ডল (১৪)। কিন্তু কয়েকদিন আগেই অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ার মৃত্যুর খবর যায় পরিবারের কাছে। হস্টেল থেকে উদ্ধার হয় পড়ুয়ার দেহ (Students body resued from hostel)। কী কারণে মৃত্যু তা এখনও স্পষ্ট নয়। এদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন মৃতের বাবা-মা। এমনকী বিচার না পেলে শেষকৃত্য করবেন না বলেও জানান। সেইমতোই তিনদিন ধরে ফ্রিজারে দেহ আগলে রেখেছেন তাঁরা।
জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রের বাড়ি মালদহের মানিকচক ব্লকের কেদারটোলা এলাকায়। বেসরকারি স্কুলের হস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করছিল। বুধবার রাতে হস্টেলের ঘর থেকেই শ্রীকান্তর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় (Students body resued from hostel)। ওই ঘরে আরও প্রায় ৪০ জন ছাত্র থাকলেও কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
ছেলের মৃত্যুর পর গভীর শোকে ভেঙে পড়েছেন বাবা প্রেমকুমার মণ্ডল ও পরিবার। তবে শোকের মধ্যেও তাঁরা কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সুবিচার না পাওয়া পর্যন্ত মৃত ছেলের শেষকৃত্য করবেন না। তাই তিনদিন কেটে গেলেও মৃতদেহ বাড়িতেই বরফে মুড়ে রাখা হয়েছে। ঘরেই তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী ফ্রিজিং বাক্স। পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে স্কুল কর্তৃপক্ষের অত্যাচারের শিকার হচ্ছিল তাঁদের ছেলে। সেই কারণেই ঘটে গিয়েছে এই মর্মান্তিক পরিণতি।
পরিবারের সাফ কথা, যতক্ষণ না ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসছে এবং অভিযুক্ত স্কুল মালিক সাজির হোসেনকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, ততক্ষণ শেষকৃত্য করা হবে না। তাঁদের দাবি, এই ঘটনায় সরাসরি স্কুল কর্তৃপক্ষ দায়ী, বিশেষ করে প্রধান শিক্ষক। প্রেমকুমারবাবু জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতেও মানিকচক থানায় তিনি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করেছে, ঘটনার রাতে কিছুটা চিৎকার-চেঁচামেচি করায় শ্রীকান্তকে বকা দেওয়া হয়েছিল ঠিকই, তবে কোনওরকম শারীরিক নিগ্রহ করা হয়নি। স্কুলের এক শিক্ষিকা লক্ষ্মীরানি সরকারের বক্তব্য অনুযায়ী, ছাত্রটিকে কখনও মারধর করা হয়নি।
এখনও পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। তদন্ত চলছে বলে জানানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে পুলিশ ও পরিবার। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।