শেষ আপডেট: 15th September 2022 15:01
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আগামী ২৫ জুন বিজেপি বিরোধী সমাবেশের মহামঞ্চ হয়ে উঠতে চলেছে হরিয়ানার হিসার। প্রাক্তন উপ প্রধানমন্ত্রী দেবী লালের জন্ম শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে ওই দিন দেশের সমস্ত বিরোধী দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দেবীলাল পুত্র প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমপ্রকাশ চৌতালার (Om Prakash Chautala) ডাকে প্রথমসারির বিরোধী নেতারা প্রায় সকলেই সভায় হাজির থাকতে রাজি হয়েছেন। কিন্তু দেবীলাল পুত্র কিছুতেই ওই মঞ্চে কংগ্রেসকে ডাকতে নারাজ।
সূত্রের খবর, ওই মঞ্চে আবার কংগ্রেসকে হাজির করাই আশু রাজনৈতিক কর্তব্য বলে মনে করেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। কিন্তু দিল্লির বৈঠকে তিনি এই ব্যাপারে চৌতালাকে (Om Prakash Chautala) রাজি করাতে পারেননি। নীতীশ তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতা পবন বর্মাকে দায়িত্ব দিয়েছেন চৌতালাকে রাজি করাতে। প্রাক্তন আমলা পবন মাঝে নীতীশের দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি পুরনো দলে ফিরে গিয়েছেন। পবন দু-দফা চৌতালার সঙ্গে বৈঠক করেও তাঁকে রাজি করাতে পারেননি।
জনতা দল ইউনাইটেড সূত্রে খবর, নীতীশ কুমার একপ্রকার বাজি ধরেছেন ওই মঞ্চে কংগ্রেসকে হাজির করাতে। তিনি মনে করছেন, হরিয়ানার বিজেপি বিরোধী মহা মঞ্চে কংগ্রেসকে ডাকা না হলে দেশের অন্যত্রও সনিয়া গাঁধী, রাহুল গান্ধীদের উপস্থিতি প্রশ্নের মুখে পড়বে। আরও অনেক বিরোধী দল একই রাস্তায় হাঁটতে পারে। ফলে বিজেপি বিরোধী বোঝাপড়া মাঠে মারা যাবে।
কংগ্রেসের জন্যও এই সমাবেশ খুবই অস্বতির কারণ হতে চলেছে। রাহুল গান্ধী বিজেপি বিরোধী অভিযানে ভারত জোড়ো যাত্রা শুরু করেছেন। এই সময় বিজেপির বিরুদ্ধেই বিরোধীদের সমাবেশে দলের ডাক না পাওয়া বিজেপি বিরোধী অভিযানে কংগ্রেসের প্রয়োজনীয়তা, গুরুত্ব আরও হ্রাস পাবে।
নীতীশ কুমারও বিজেপি বিরোধী মহাজোট গড়তে রাজ্য সফরে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঠিক এই সময় হরিয়ানার সমাবেশকে সামনে রেখে ফের বিজেপি ও কংগ্রেস বিরোধী তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছে।
২৫ তারিখের ওই সমাবেশের চৌতালা নাম দিয়েছেন ঐক্য সমাবেশ। গত সপ্তাহে দিল্লিতে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে চৌতালা দীর্ঘ বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে তিনি নীতীশকে ২৫ তারিখের সভায় যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানান। নীতীশ তাঁকে পরামর্শ দেন, সনিয়া ও রাহুল গান্ধীকে সভায় আমন্ত্রণ জানাতে। কিন্তু চৌতালা সাফ জানিয়ে দেন, কংগ্রেসকে তিনি ডাকবেন না। কারণ তাঁর ও প্রয়াত পিতার মূল লড়াই ছিল কংগ্রেসের সঙ্গে। আজও কংগ্রেসকে তারা শত্রু মনে করেন।
আমন্ত্রিতদের তালিকায় আছে ডিএমকে, এসপি, বিএসপি, আরজেডি। আছে কংগ্রেস ভেঙে তৈরি দলগুলিও। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও আছেন চৌতালার তালিকায়।সূত্রের খবর, নীতীশকে চৌতালা বলেন, বাবার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কংগ্রেসেকে বাদ রেখেই বিজেপি বিরোধী দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে চাইছেন তিনি।
হরিয়ানার কৃষক নেতা দেবী লাল ছিলেন জনতা দলের গোড়াকার নেতা। দীর্ঘদিন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। ১৯৮৯ সালে রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারকে হটিয়ে দিল্লিতে ক্ষমতাসীন হয় জনতা দলের সরকার। প্রধানমন্ত্রী হন কংগ্রেস ছেড়ে আসা বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং। উপ প্রধানমন্ত্রী হন দেবীলাল। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী হন দেবীলাল পুত্র ওমপ্রকাশ। পরে জনতা দল থেকে বেরিয়ে গিয়ে চৌতালা গড়ে তোলেন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোক দল।
সূত্রের খবর, নীতীশ কুমার হিসারের বৈঠকে যোগ দিতে রাজি হয়েছেন। কিন্তু তাঁর সামনে কাঁটা হল কংগ্রেসকে একজনও শামিল করতে না পারা। সূত্রের খবর, নীতীশের হয়ে পবন বর্মা চৌতালাকে এমন প্রস্তাবও দেন, সনিয়া, রাহুলের পরিবর্তে তিনি অশোক গেহলট, মল্লিকাজুন খাড়গের মতো কোনও প্রবীণ নেতাকে ডাকুন। তাতেও রাজি হননি দেবীলাল পুত্র।
১৩০ গতিতে গাড়ির ধাক্কা! মর্মান্তিক মৃত্যু দুই ইঞ্জিনিয়ার তরুণীর