শেষ আপডেট: 5th January 2025 13:19
দ্য ওয়াল ব্যুরো, দুর্গাপুর: মিড ডে মিল নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। সেখানে এই স্কুলের ছবি যেন রূপকথার গল্পকেও হার মানাবে।
সরকারি নিয়মে রয়েছে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রত্যেক পড়ুয়াকে স্কুলে মিডডে মিলের খাবার দিতে হবে। অথচ এখানে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত তো বটেই, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদেরও বাড়ি থেকে টিফিন আনতে হয় না। প্রতিদিন দুপুরে স্কুলেই পাতপেড়ে খাওয়ার আয়োজন রয়েছে।
অসাধ্য সাধনের এই কাহিনী চাক্ষুষ করতে চাইলে আসতে হবে দুর্গাপুরের ফরিদপুর ব্লকের জেমুয়া ভাদুবালা বিদ্যাপীঠে। এখানে এইট নয়, টুয়েলভ পর্যন্ত পড়ুয়াদের স্কুলেই মিডডে মিল খাওয়ানো হয়।
কীভাবে এই অসাধ্যসাধন সম্ভব হল?
তৃপ্তির হাসি হেসে স্কুলের প্রধান শিক্ষক জইনুল হক জানান, স্কুলের অনেকখানি ফাঁকা জমি পড়ে ছিল। একসময় ওই ফাঁকা জমিতে জঙ্গল ভরে গিয়েছিল। গ্রামবাসীদের সাহায্যে সেই জঙ্গল পরিষ্কার করে স্কুলের সেই জমিতেই সবজি চাষ শুরু করা হয়েছে।
কী নেই স্কুলের সবজি খেতে? ফুল ও বাঁধা কপি, টমেটো, পেঁয়াজ, চন্দ্রমুখী আলু, ধনেপাতা, পালং, লালশাক, বিট, গাজর, সর্ষে শাক- হাজারও শাক সবজিতে ভর্তি স্কুলের সবজি খেত। শুধুই সবজি খেতই নয়, স্কুলের পড়ুয়াদের মন ভাল করে ক্যাম্পাসেই রয়েছে চারটি ফুলের বাগান।
প্রধান শিক্ষক জানান, "স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের পাশাপাশি পড়ুয়ারাও চাষাবাদে সাহায্য করে।"
কখন চাষের কাজ করে স্কুল পড়ুয়ারা? ক্লাস এইটের ছাত্রী বাইট প্রীতি চক্রবর্তী জানায়, "স্কুল শুরুর কিছু আগে তাঁরা পৌঁছে যায়। ছেলেরা চাষের জমি তৈরি, বীজ পোঁতা, সার দেওয়ার কাজ করে। আর মেয়েরা জল দেওয়া, প্রয়োজন মতো সবজি তোলার কাজ করে।"
প্রধান শিক্ষক জানান, চাষের কাজে কোনও রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় না। উচ্ছিষ্ট সবজিকে সংরক্ষণ করে, তার সঙ্গে গোবর মিশিয়ে তৈরি করা হয় জৈব সার।
যার নিট ফল, পড়ুয়া এবং শিক্ষকদের পরিশ্রমের বিনিময়ে হরেক রকমা সবজিতে ভরে ওঠে স্কুলের খেত। ফলে ফি-দিনই নিত্যনতুন সবজির তরকারি দিয়ে মিড ডি মিল থুড়ি ভোজ সারেন এই স্কুলের পড়ুয়ারা।