শেষ আপডেট: 20th July 2023 08:54
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: কংগ্রেসের টিকিটে পঞ্চায়েত ভোটে জয়ী হয়েছেন। তারপর থেকেই শান্তি চলে গেছে মিনতি মাণ্ডির। তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ আসছে। আসছে শাসানিও। তবে মিনতিও নিজের জায়গায় স্থির। হুমকি শাসানি যাই আসুক, তিনি বায়রন বিশ্বাসের মতো বিশ্বাসঘাতকতা কংগ্রেস দলের সঙ্গে করতে পারবেন না। মিনতির অভিযোগকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।
রায়না ১ নম্বর ব্লকের নাড়ুগ্রাম পঞ্চায়েতের কুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা মিনতি মাণ্ডি। নাড়ু গ্রাম পঞ্চায়েতের ২২টি আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ১৮টি আসনে জিতেছে। বাকি আসনগুলির মধ্যে তিনটিতে সিপিএম এবং জনজাতি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসনে কংগ্রেসের (Congress) প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জিতেছেন মিনতি মাণ্ডি। আর তাতেই বেকায়দায় পড়ে গেছে তৃণমূল। কারণ মিনতি যে আসনটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জিতে গিয়েছেন সেটি ঘটনাচক্রে প্রধান পদের জন্য সংরক্ষিত আসন। তাই প্রধান পদটি মিনতি মাণ্ডির জন্য পাকা হয়ে গেছে। তাই যে কোন প্রকারে মিনতিকে এখন নিজেদের দিকে টানতে মরিয়া শাসক দল।
মিনতি জানান, ২০১৩ সালে কংগ্রেসের হয়ে নাড়ুগ্রাম পঞ্চায়েতের কুলিয়া গ্রাম থেকে জেতার পরেও তাঁকে এখনকার মতো পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছিল। তখন প্রায় চারবছর তাঁকে ঘরছাড়া হয়ে থাকতে হয়েছিল বলে জানান তিনি।
কুলিয়া গ্রামে মিনতির একতলা পাকা বাড়ি। ভিতরে ছোট ধানের গোলা ও গোয়াল ঘর আছে। মিনতি ও তাঁর স্বামী বাবলু, দু'জনেই খেতমজুরের কাজ করেন। মিনতির অভিযোগ, তিনি পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর থেকেই অশান্তি চলছে। ভোট গণনার দিনেও তাঁকে চুলের মুঠি ধরে মারধর করা হয়। তবু তিনি গণনাকেন্দ্র ছাড়েননি। জয়ের শংসাপত্র নিয়েই গণণাকেন্দ্র থেকে বেরিয়েছেন। তিনি বলেন, “শান্তিতে থাকতে দিচ্ছে না। কারণ সংরক্ষিত আসনে আমার প্রধান হওয়া নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। সেই জন্যেই নানাভাবে আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। একা বাড়ি থেকে বের হতেও পারছি না।” মিনতিদেবীর স্বামী বাবলু মাণ্ডি বলেন, “ভোটের আগে আমাকে শাবল দিয়ে মেরেছিল। এখন আমার স্ত্রী জিতে যাওয়ায় ফের অশান্তি পাকাচ্ছে তৃণমূল।”
মিনতির প্রতিবেশী রামেশ্বর মাণ্ডি ও সুভাষ মাণ্ডি বলেন, “এলাকার তৃণমূলের কয়েকজন সবসময় হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। পাড়ার মুদির দোকানে গেলেও হুমকি দিচ্ছে। সে জন্যে আমরা মিনতির বাড়ি পাহারা দিচ্ছি। আশেপাশের পাড়াও সতর্ক থাকছে।” কংগ্রেস নেতা গৌরব সমাদ্দার বলেন, “হুমকির কাছে নত হননি মিনতি মাণ্ডি। কিন্তু তৃণমূল এখন বেশ বেকায়দায় পড়েছে। তাই ওঁকে দলে টানতে শাসানি চলছে। আমরা চাই প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখুক।”
রায়না ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি বামদেব মণ্ডল বলেন, “নিরপেক্ষ গণনা হয়েছে। সিপিএমও পঞ্চায়েত পেয়েছে। হুমকি-অশান্তি ছাড়াই কী ভাবে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করতে হবে তা আমি জানি। কংগ্রেসের সদস্যের করা অভিযোগ ঠিক নয়। উনি অকারণে ভয় পাচ্ছেন।”
মেমারিতে বোমবাজির অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে, আতঙ্কে নির্দল প্রার্থীর পরিবার