শেষ আপডেট: 21st June 2023 16:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করতে গিয়ে একবার ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের স্পেশাল লিভ পিটিশন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর বুধবার হাইকোর্ট আরও কঠোর নির্দেশ দিয়েছে। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের নির্দেশ, ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটে যে পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল, তার চেয়েও বেশি মোতায়েন করতে হবে এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে। অর্থাৎ ৮২ হাজারেরও বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে।
এখন কৌতূহলের বিষয় হল, বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে তাকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন কি ফের সুপ্রিম কোর্টে যাবে?
এদিন বিকেলে হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পর আন্দোলিত হয়ে গিয়েছে রাজ্য সচিবালয় তথা নবান্ন ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আমলাদের মধ্যে অনেকের প্রাথমিক মত হল, এর পর সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে লাভ হবে না। ফের মুখ পুড়তে পারে। কিন্তু পাল্টা মৌলিক প্রশ্নও তুলেছেন কিছু প্রবীণ কর্তা। সেগুলো কী?
তাঁদের বক্তব্য—
• মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর রাজ্য নির্বাচন কমিশন প্রাথমিক ভাবে সব জেলার জন্য ১ কোম্পানি করে বাহিনী চেয়েছিল। কিন্তু কখনওই কমিশন বলেনি, এই সংখ্যা চূড়ান্ত। পঞ্চায়েত ভোট হবে ৮ জুলাই। এখন থেকেই বেশি সংখ্যায় বাহিনী চাওয়ার দরকার নেই বলে কমিশন তাদের মূল্যায়নে মনে করেছিল। সেই মূল্যায়নের ভিত্তি ছিল, জেলাশাসকদের পাঠানো রিপোর্ট। যাতে মোট ১৮৯টি বুথকে স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল। হতেই পারে যে ভোটের আগে কমিশন পুনরায় মূল্যায়ন করে আরও কিছু বাহিনী চাইতে পারত।
• কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ এদিনের নির্দেশে বলেছে, ২০১৩ সালে তৎকালীন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য ৮২ হাজার বাহিনী মোতায়েন করেছিলেন। অর্থাৎ প্রায় ১ হাজার কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে ১ লক্ষ ৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।
• মীরা পাণ্ডে নিশ্চয়ই সেই সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে তার ভিত্তিতে আধা সামরিক বাহিনী চেয়েছিলেন। নবান্নের একাংশ কর্তার প্রশ্ন হল, সেই সময় পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে হিংসার ঘটনা ও অশান্তি এবং এবারের পরিস্থিতি কী এক? তখন মীরা পাণ্ডের যদি পরিস্থিতি মূল্যায়নের অধিকার থাকে এবং তা যদি আদালতের মান্যতা পায়, তা হলে এবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পরিস্থিতি মূল্যায়নের অধিকার থাকবে না কেন?
• রাজ্য নির্বাচন কমিশনের মধ্যে অনেকের আশঙ্কা রয়েছে যে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মতো একসঙ্গে ৮২ হাজারের বেশি বাহিনী চাইলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক অপারগতার কথা জানাতে পারে। কেন্দ্র তা করলে সেটা হাইকোর্টকে জানাতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। ঘটনা হল, প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এদিন নির্দেশ পাঠ করতে গিয়ে বলেছেন, ২০১৩ সালে পাঁচ দফায় ভোট হয়েছিল। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আশঙ্কা, এক লপ্তে ৮২ হাজারের বেশি বাহিনী পাওয়া না গেলে ভোটকে কয়েক দফায় ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ আসতে পারে। তাতে উল্টে চাপে পড়ে যেতে পারে কমিশন।
এই সব বিষয় নিয়ে বুধবার সন্ধের পর রাজ্য নির্বাচন কমিশনে দীর্ঘ বৈঠক হয়। সুপ্রিম কোর্টে মামলা করার ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এ ব্যাপারে দোলাচল রয়েছে। তবে একাংশ কর্তার মতে, কমিশনের উচিত সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া। নইলে এই পরিস্থিতি আগামী দিনের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
ফের ডিগবাজি হুমায়ুনের, মমতার কাছে ক্ষমা চাইলেন, তবে নির্দলদের খোলা সমর্থন