শেষ আপডেট: 27th August 2023 01:31
দ্য ওয়াল ব্যুরো: উচ্চশিক্ষার (West Bengal Higher Education) জন্য বাংলার ছাত্রদের ঋণের ব্যবস্থা করতে সরকার যে যত্নশীল তা স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সূত্রের খবর, সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীতে সম্প্রতি বেশ কিছু ফোন এসেছে স্টুডেন্টস ক্রেডিটের (West Bengal Students Credit Card) ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়ে। মূল অভিযোগ হল, দুয়ারে সরকারে (Duare Sarkar) আবেদন জানিয়ে ক্রেডিট কার্ডের জন্য অনুমোদন পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু বেশ কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ও বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখায় ওই ক্রেডিট কার্ড বা অনুমোদন পত্র নিয়ে যাওয়ার পর তারা ঋণের টাকা দিতে চাইছে না। বা টালবাহানা করছে।
স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড নিয়ে এই ধরনের অভিযোগ পুঞ্জীভূত হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) এ ব্যাপারে দ্রুত সমাধানের জন্য মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে নির্দেশ দিয়েছেন। শনিবার জেল শাসকদের সঙ্গে রিভিউ বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্য সচিব। ওই বৈঠকে তিনি সমস্যার প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি জেলাশাসকদের কাছে জানতে চান, এ ব্যাপারে সমস্যা ঠিক কোথায় হচ্ছে?
অধিকাংশ জেলাশাসক বলেন, ডকুমেন্টেশন নিয়ে সমস্যা করছে ব্যাঙ্ক। ছাত্রছাত্রীদের ঋণ দেওয়ার আগে তাদের পারিবারিক আয়, আয়ের উৎস ইত্যাদি জানতে চাইছে। অর্থাৎ অভিভাবকদের সিবিল স্কোর (CIBIL Score) জানতে চাইছে। তা পর্যাপ্ত না হলে হয় ঋণ দিচ্ছে না। মুখের উপর তা জানিয়ে দিচ্ছে। বা ঝুলিয়ে রাখছে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ছাত্রছাত্রীরা যে পরিমাণ ঋণ চাইছে তা না দিয়ে তার একটা শতাংশ অনুমোদন করছে। ধরা যাক, কেউ ঋণ চাইছে ৫ লক্ষ টাকা। তাকে ১ লক্ষ টাকা অনুমোদন করছে।
সিবিল (CIBIL) হল একটি নিরপেক্ষ আর্থিক সংস্থা। কোনও ব্যক্তির আয়, তাঁর পুরনো ঋণ ফেরত দেওয়ার ধরণ ইত্যাদি থেকে এই সংস্থা স্কোর নির্ধারণ করে। প্রতিটি ব্যাঙ্ক উপভোক্তাদের সিবিল স্কোর জানতে পারে। সিবিল স্কোর নির্দিষ্ট মাত্রার না হলে ব্যাঙ্ক ঋণ দেয় না। বা কত টাকা ঋণ দেবে তা স্কোর দেখে স্থির করে।
সামগ্রিকভাবে জেলাশাসকদের থেকে এই অভিযোগ শোনার পর মুখ্য সচিব জানিয়েছেন, যারা ঋণ পাচ্ছে না, তাদের আপনারা ডাকুন। কী সমস্যা তা জানতে চান। তার পর ব্যাঙ্ক বা তাদের শাখার সঙ্গে কথা বলুন। দরকার হলে তাদেরও ডেকে পাঠান। তার পর কেস ধরে ধরে তা নিষ্পত্তি করার বন্দোবস্ত করুন।
একুশের ভোটের সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, তৃণমূল ফের ক্ষমতায় এলে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড চালু হবে। উচ্চশিক্ষার জন্য ঋণ নেওয়ার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা রয়েছে। মমতার লক্ষ্য ছিল, গ্রাম ও মফস্বলের ছেলেমেয়েদের সেই সুযোগ করে দেওয়া। কারণ, শহরের ছেলেমেয়েরা ও তাদের অভিভাবকরা তুলনায় সচেতন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এই প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে প্রশাসনিক জটে বারবার আটকে যাচ্ছে। সমস্যা হচ্ছে ব্যাঙ্কের থেকে। সেই কারণেই এবার মাইক্রো লেবেলে নেমে সেই সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হচ্ছে সরকার।