দ্য ওয়াল ব্যুরো: রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা সম্পর্কে একগুচ্ছ অভিযোগ-সহ স্মারকলিপি জমা দেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখান থেকে বেরিয়েই রাজ্যের নিরাপত্তা প্রসঙ্গ নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধেও।
মূলত ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব হন শুভেন্দু। এ প্রসঙ্গে তিনি দাবি করেন, রাজ্যে মহিলা সাংসদকে হেনস্থা করা হচ্ছে। কয়েক হাজার বিজেপি কর্মী ঘরছাড়া বলেও অভিযোগ করেন তিনি। সেই সঙ্গে বলেন, দলত্যাগ বিরোধী আইন এই রাজ্যে কার্যকর করার কথা রাজ্যপালকে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি অভিযোগ তোলেন, তৃণমূল ব্যক্তিকেন্দ্রিক দল, বিজেপি তা নয়। রাজ্যে বিজেপির ভোট বাড়ার জন্য যদি কারও কৃতিত্ব থাকে তবে তিনি নরেন্দ্র মোদী। সেই সঙ্গে শুভেন্দু জানান, রাজ্যপাল কেন্দ্রের প্রতিনিধি, তাই তিনি বিচার পাওয়ার আশা করছেন।
এদিন রাজভবন থেকে বেরিয়েই সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষুব্ধ শুভেন্দু বলতে থাকেন, এ রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার চূড়ান্ত অবনতি হয়েছে, শাসন বলে কিছু নেই। তাঁর কথায়, "বাম আমলেও অনেক লড়াই করেছি, এমন প্রশাসন দেখিনি। এই প্রশাসন ভাইপোর ভয়ে থরথর করে কাঁপছে। ভোটের ফলের পর থেকেই সন্ত্রাস চলছে। খারাপ অবস্থা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার।"
এর পাশাপাশি শুভেন্দু আরও দাবি করেন, "রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার এমনই অবস্থা, এখানে জনপ্রতিনিধিরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। মহিলা সাংসদের উপর হামলা হচ্ছে। বাংলায় নারী সুরক্ষা বলে কিছু নেই। ভোট পরবর্তী সময়ে ১৭ হাজার কর্মকর্তা বাড়িছাড়া। এসসি-এসটিদের উপর অত্যাচার চলছে। তাই আমরা রাজ্যপালের কাছে এসেছি। রাজ্যপালের কাছে কেন এসেছি, কিছুদিন পরেই বুঝতে পারবেন।"
একই সঙ্গে শুভেন্দু দাবি, "মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে বিরোধীদের খতম করবেন ভাবছেন। বিরোধীদের বাক স্বাধীনতা খর্ব করা যাবে না। ২ তারিখের পর বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে ৩০০০ মামলা হয়েছে। এফআইআর হয়েছে। আমি সব মামলার কাগজ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাব, যাতে সিবিআই তদন্ত হয়। কী কারণে এই সব মামলা, এই মামলাগুলির সত্যতা কী!"
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসায় নিহত দুই বিজেপি কর্মীর আত্মীয়দের আর্জি শুনতে আজই রাজি হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে সাহস পেয়ে বেশ কয়েকজন গণধর্ষিতা শীর্ষ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। তাঁদের আর্জি, গুজরাতে দাঙ্গা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট যেমন নিজে উদ্যোগী হয়ে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট) গঠন করেছিল, পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়েও তাই করা হোক।
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফের 'ভাইপো' বলে নিশানা করেন শুভেন্দু। বলেন, "রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন ভাইপোর ভয়ে কাঁপে। কোনও কাজই তাঁরা করতে পারে না। এসপি-রা ফোন ধরে না।"
এসবের পাশাপাশি এদিন রাজ্যের সংবাদমাধ্যমের প্রতিও রোষ প্রকাশ করেন শুভেন্দু। রাজ্যের বেশ কিছু এলাকা তিনি নিজে ঘুরে দেখেছেন বলে জানান, কথা বলেছেন আক্রান্তদের সঙ্গেও। তিনি দাবি করেন, রাজ্যের নানা প্রান্তে শাসক দল যে অত্যাচার করছে ঘরে ঘরে, সেখানে বুম-ক্যামেরা পৌঁছচ্ছে না।
শুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠকের পরে রাজ্যপাল টুইট করে জানান, বিরোধী দলের পক্ষে শুভেন্দু অধিকারী ডেলিগেশনদের সঙ্গে নিয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করে গেছেন, তাঁকে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বক্তব্য জানিয়ে গেছেন। এই টুইটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ট্যাগ করেন রাজ্যপাল।
https://twitter.com/jdhankhar1/status/1404422206692622338