দ্য ওয়াল ব্যুরো, উত্তর দিনাজপুর: সিআইডির পেশ করা চার্জশিটে খুশি নন হেমতাবাদের প্রয়াত বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের স্ত্রী চাঁদিমা রায়। অসন্তুষ্ট দলের নেতারাও। ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন তাঁরা।
বিধায়কের মৃত্যু মামলায় শুক্রবার চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি। প্রয়াত বিজেপি বিধায়কের স্ত্রী চাঁদিমা রায়ের অভিযোগের ভিত্তিতেই এই মৃত্যুর তদন্ত শুরু করে পুলিশ। রুজু হয় খুনের মামলা। পরবর্তীতে এই মামলার ভার সিআইডির হাতে তুলে দেয় রাজ্য সরকার। এই ঘটনায় সিআইডি নিলয় সিংহ ও মাবুদ আলি নামে দুজনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা ও প্রতারণার মামলায় আইপিসি ৩০৬/৪২০/১২০ ধারা লাগু করে শুক্রবার রায়গঞ্জ আদালতে চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি। সিআইডির এই চার্জশিট দেওয়া নিয়েই অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রয়াত বিজেপি বিধায়কের স্ত্রী।
গত ১৩ জুলাই বাড়ি থেকে দু’ কিলোমিটার দূরে বালিয়ামোড় এলাকায় একটি বন্ধ থাকা মোবাইলের দোকানের বারান্দায় ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয় হেমতাবাদের বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। পুলিশ প্রাথমিকভাবে এটিকে আত্মহত্যার ঘটনা বলে জানালেও মৃত বিধায়কের স্ত্রী চাঁদিমা রায় খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
প্রয়াত বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথবাবুর জামার পকেট থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে পুলিশ। তাতে নিলয় সিংহ ও মাবুদ আলি নামে দুজনকে তাঁর মৃত্যুর জন্য দায়ী করে যান প্রয়াত বিধায়ক। দলের বিধায়কের হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে হেমতাবাদে ছুটে আসেন বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব। সিবিআই তদন্তের দাবিতে শুরু হয় ব্যাপক আন্দোলন।
ঘটনার কিছুদিন পর বিজেপি বিধায়কের মৃত্যুর ঘটনার তদন্তের ভার সিআইডির হাতে তুলে দেয় রাজ্য সরকার। এরপরেই প্রয়াত বিধায়কের সুইসাইড নোটে উল্লিখিত নিলয় সিংহ ও মাবুদ আলিকে গ্রেফতার করেন সিআইডির গোয়েন্দারা। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। ঘটনার দু’মাসের মাথায় শুক্রবার বিজেপি বিধায়কের মৃত্যুর ঘটনার চার্জশিট দাখিল করল সিআইডি। তারপরেই এই চার্জশিট নিয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রয়াত বিধায়কের স্ত্রী চাঁদিমা রায়।
তিনি বলেন, ‘‘আমার স্বামীকে খুন করা হয়েছে। আমি খুনের মামলা দায়ের করেছিলাম। কিন্তু সিআইডি যে চার্জশিট দাখিল করেছে সেটা ঠিক নয়। তদন্ত ঠিক পথে এগোচ্ছে না।’’ বিজেপির জেলা নেতা তথা আইনজীবী গোপাল মজুমদার বলেন, ‘‘পরিবারের পক্ষ থেকে ৩০২ ধারায় খুনের মামলা রুজু করা হয়েছিল। কীভাবে সিআইডি এটাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা করে চার্জশিট দিল তা আমরা বুঝতে পারছি না। যেহেতু একজন বিজেপি বিধায়কের মৃত্যু হয়েছে তাই তড়িঘড়ি করে চার্জশিট দাখিল করেছে সিআইডি। আমাদের কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃত্ব বিষয়টি দেখভাল করছেন। সিআইডি'র এই চার্জশিটে খুশি নন কেউ।’’