শেষ আপডেট: 24th September 2020 13:57
দ্য ওয়াল ব্যুরো, শিলিগুড়ি: চনমনে তিন সন্তানকে আগলেই কেটে যাচ্ছে শীলার দিন রাত। মায়ের কোলের কাছে সমানতালে খুনসুটি করছে তিনজন। গত একমাসের বেশি সময় শিলিগুড়ি বেঙ্গল সাফারি পার্কে সব থেকে বেশি চর্চার বিষয় এই মা আর তার সন্তানরা। ৪০ দিন আগে সাফারি পার্কের আবাসিক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার শীলা জন্ম দিয়েছে তিন সন্তানের। জন্মের পর থেকে মায়ের ‘সঙ্গে সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছে এই তিন ব্যাঘ্র শাবক। যত বড় হচ্ছে ততই বাড়ছে দুষ্টুমি আর খেলাধুলো। যার ফলে তাদের সামনে যেতেই পারছেন না পার্কের কর্মীরাও। দূর থেকেই ক্যামেরাবন্দি করা হচ্ছে তাদের। জানা গেছে, মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ সফরে এলে তাদের নামকরণ করবেন। তবে তার আগে শাবকদের লিঙ্গ নির্ধারণ প্রয়োজন। যেটা এখনও করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি বেঙ্গল সাফারি পার্কে এসে বনমন্ত্রী রাজীব ব্যানার্জি জানান, ‘‘লিঙ্গ নির্ধারণ করতে শাবকদের কাছাকাছি যেতে হবে। তাদের পরীক্ষা করতে হবে। সেটা এখনও সম্ভব হয়নি। লিঙ্গ নির্ধারণ হয়ে গেলেই আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে এদের নামকরণ করার জন্য আর্জি জানাব।’ তবে পার্কের পশু চিকিৎসক ও অন্যান্য কর্মীদের অনুমান, তিন শাবকই পুরুষ। তাদের দেহের গঠন দেখে এবং ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যালোচনা করে এটাই মনে হচ্ছে। তবে এদের সামনে গিয়ে পরীক্ষা করে নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। এই মুহূর্তে তিন শাবকই ভালো আছে। গত ১২ অগস্ট ভোর ৪টে ৪৫ থেকে ৭টা ২০র মধ্যে শাবকগুলির জন্ম দেয় শীলা। ওড়িশার নন্দনকানন থেকে প্রথম বেঙ্গল সাফারি পার্কে নিয়ে আসা হয়েছিল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার শিলা ও স্নেহাশিসকে। তাদের সন্তান কিকা ও রিকা বর্তমানে বেঙ্গল সাফারি পার্কের জঙ্গলে খেলে বেড়াচ্ছে। আরেক সন্তান ইকা জন্মের কিছুদিন পর মারা যায়। স্নেহাশিস এখন আলিপুর চিড়িয়াখানার বাসিন্দা। তার জায়গায় জামশেদপুর থেকে নিয়ে আসা হয় ভিভানকে। করোনা রুখতে লকডাউন চলায় সাফারি পার্ক এখন বন্ধ। তাই মানুষের যাতায়াত নেই। কাছাকাছি আসার জন্যও এই সময়টাকেই বেছে নেয় শিলা ও ভিভান। ফলস্বরূপ ফের সন্তান প্রসব করে শিলা। এই ঘটনার পর খুশি সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ ও শিলিগুড়িবাসী। এমনিতে সাফারি পার্কে বাঘেদের নতুন ঠিকানা তৈরি হলেও জঙ্গল দেখতে যাঁরা উত্তরবঙ্গে আসেন তাঁরা এখানে থাকেন না বললেই চলে। শিলিগুড়িকে একটু ছুঁয়ে সোজা চলে যান গরুমারা, জলদাপাড়া, চাপড়ামারি, গজলডোবাতে। রয়্যাল বেঙ্গল পরিবারে তিন নতুন সদস্যের আগমনে এবার সেই অভ্যাসে কিছুটা হলেও ছেদ পড়বে বলেই মনে করছেন পার্কের আধিকারিকরা। এখানেও দিন কয়েক থেকে বাঘের বাচ্চার হুটোপুটি দেখবেন পর্যটকরা। লাভবান হবে, নর্থ বেঙ্গলের এই ওয়াইল্ড অ্যানিমেল পার্ক।