দ্য ওয়াল ব্যুরো, কোচবিহার: মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের বদলি বাতিলের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠল কোচবিহারের জেলাশাসকের অফিস চত্বর। সাগরদিঘির পাড়ে জেলাশাসকের দফতরের সামনে জমায়েত হয়েছেন ডাক্তার-নার্স সহ কয়েক হাজার স্বাস্থ্যকর্মী। আন্দোলনের জেরে ভেঙে পড়েছে জেলার স্বাস্থ্য পরিষেবা। জেলা ও মহকুমায় সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগ চালু থাকলেও বন্ধ হয়ে গেছে বাকি সমস্ত কিছু। দলে দলে চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্য কর্মীরা যোগ দিচ্ছেন জমায়েতে।
আন্দোলনকারীদের দাবি, করোনার বিরুদ্ধে প্রাণপণ লড়াই চলছে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে তাঁরা কখনই মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের বদলি মেনে নেবেন না। সকাল থেকে জমায়েত শুরু হয়েছিল। বেলা যত বাড়ছে ততই ভিড় বাড়ছে জমায়েতে। শুধু কোচবিহার শহর নয়, হলদিবাড়ি, চ্যাংড়াবান্দা, শীতলকুচি, সিতাই, বক্সিরহাটের মতো দূরের জায়গাগুলি থেকেও চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা দলে দলে এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। কিন্তু তাঁর আবেদনেও কোনও কাজ হয়নি। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের বদলি রাজ্য সরকার করেছে। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত সকলকে মেনে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি আমি। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমিত গাঙ্গুলির অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর জন্যই তাঁকে উত্তরকন্যা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’’ আন্দোলনকারীরা অবশ্য মন্ত্রীর কথা মানতে নারাজ। মুখে কালো কাপড় বেঁধে জেলাশাসকের দফতরের সামনে আন্দোলনে সামিল হয়েছেন তাঁরা।
কেন হঠাৎ এই বদলির নির্দেশ? তাই নিয়ে চলছে জল্পনা। রাজ্যের মধ্যে কোচবিহার এমন একটি জেলা যেখানে অন্য জেলার তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে টেস্ট হয়েছে। গত মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত টেস্ট হওয়া সব রিপোর্ট উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ থেকে সঠিক সময়েই এসেছিল। কিন্তু এরপর থেকেই রিপোর্ট পেতে প্রায় ১০-১২ দিন সময় লেগে যাচ্ছিল। আর এই কারণে ভোগান্তি বাড়ছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। সম্ভবত সেই কারণেই হঠাৎ করে কোচবিহারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুমিতকুমার গাঙ্গুলিকে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
বুধবার সিএমওএইচের বদলির নির্দেশ আসার পরেই তেতে ওঠে কোচবিহার। ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা পথে নেমে পড়েন। মিছিল করে গিয়ে রাতেই সাগরদিঘিতে জেলাশাসকের দফতরের সামনে ধর্নায় বসেন। আজ দিনভরও স্বাস্থ্যকর্তার বদলি রদের দাবিতে মুখর হল কোচবিহার।