শেষ আপডেট: 4th November 2020 12:42
করোনা আবহে কাটোয়ার কার্তিক পুজোতেও এবার হরেক বিধিনিষেধ
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: শ্রীচৈতন্যের দীক্ষাভূমিতে কার্তিক পুজো কীভাবে প্রধান উৎসব হয়ে উঠল তা নিয়ে রয়েছে নানা মত। গবেষকদের দাবি নদী তীরবর্তী এই শহরে বারবণিতাদের হাত ধরেই শুরু হয়েছিল কার্তিক পুজো পরে বনিক বা বাবুদের পৃষ্ঠপোষকতায় যা সর্বজনীন রূপ পায়। ইতিহাসের পথ ধরে আজও প্রতি হেমন্তে কার্তিক পুজোয় মাতে এই শহর। কার্তিক পুজোর আড়ম্বরের কাছে দুর্গোৎসবও ম্লান। কার্তিক ঠাকুর বিসর্জনের শোভাযাত্রাকে স্থানীয়ভাবে বলা হয় কার্তিক লড়াই। বিসর্জনের সময় স্বল্প পরিসর রাস্তায় কোন বাবুর ঠাকুর আগে যাবে এই নিয়ে শুরু হত প্রতিযোগিতা। সেই প্রতিযোগিতায় কালক্রমে লড়াই নামে পরিচিতি পায়। এই কার্তিক লড়াই দেখতে এখনও মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, নদিয়া জেলা থেকে লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থী ভিড় জমান কাটোয়া শহরে। গোটা শহর জুড়ে ৮৪ টা পুজো হয়। তারমধ্যে ১৪টা হয় থিমের পুজো। পুজোর ক’টা দিন বাহারি মণ্ডপ, রকমারি আলো, বাজনা, শোভাযাত্রার আনন্দে মশগুল থাকেন কাটোয়ার মানুষ। চারদিন ধরে চলে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কাটোয়াবাসীর এই প্রাণের পুজোতেও এবার করোনার থাবা। করোনার আবহে কার্তিক লড়াইয়ে নানান বিধিনিষেধ আরোপ করল কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন। পুজো কমিটির সভাপতিদের সঙ্গে কার্তিক পুজোর নিয়মাবলী নিয়ে বৈঠক করেন কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন। এই বৈঠকে সমস্ত করোনা বিধি মেনে পূজো কমিটিকে কার্তিক পূজো করার অনুমতি দেয় কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন। এই বছর কাটোয়ার কার্তিক পুজোয় করোনার প্রকোপ সামলাতে মাস্ক ছাড়া মণ্ডপে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ছোট পুজো মণ্ডপে এক সঙ্গে ১০ জনের এবং বড়ো পুজো মণ্ডপে এক সঙ্গে ২৫ জনের দশর্নাথীর বেশি প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রত্যেক মণ্ডপে স্যানিটাইজার ট্যানেল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শহর জুড়ে সমস্ত রকম শোভাযাত্রাও এবার বন্ধ রাখল কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন। এই সমস্ত বিধি নিষেধের মধ্যে দিয়ে এবছরের কার্তিক লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন। কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জী বলেন, ‘‘এই বছর করোনা আবহে কার্তিক পুজো কীভাবে করা হবে তাই নিয়ে সমস্ত পূজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়। সংক্রমণ রুখতে সমস্ত নিয়ম মেনে পুজো করার অনুরোধ করা হয়েছে। ভিড় কম হলে করোনা ছড়ানোর সম্ভাবনাও কমবে।’’ কাটোয়ার মহকুমা শাসক প্রশান্তরাজ শুক্লা বলেন, ‘‘এ বছর আর কার্তিক লড়াই নয়, শুধুই কার্তিক পূজো হবে।’’ কার্তিক মাসের শেষ দিনে কার্তিক পুজোয় মেতে ওঠেন কাটোয়ার মানুষ।