শেষ আপডেট: 16th October 2020 06:09
চাকরির দাবিতে ঝাড়গ্রামে বৈঠক জীবনের মূলস্রোতে ফেরা প্রাক্তন মাওবাদীদের
বুদ্ধদেব বেরা, ঝাড়গ্রাম: জঙ্গলমহলে ফের মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে মাওবাদীরা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর থেকেই এমন সতর্কবার্তা পেয়েছে রাজ্য। তারপরেই ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহলে নজরদারি জোরদার করেছে পুলিশ। সেই পরিস্থিতিতেই শুক্রবার ঝাড়গ্রাম ব্লকের বিরিহাঁড়ি গ্রামে সভা করলেন জঙ্গলমহলে মাওবাদী আন্দোলনের সময় কোনও না কোনও ভাবে এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা নেতা কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাসে জীবনের মূলস্রোতে ফিরলেও এখনও সরকারি কোনও সুযোগ সুবিধা পাননি তাঁরা। ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা মতো জঙ্গলমহলের মাওবাদীদের একটা বড় অংশ বন্দুক ছেড়ে মুলস্রোতে ফিরেছেন। এবং মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের আশ্বাস দিয়েছিলেন মুলস্রোতে ফিরলে তাঁদের চাকরি দেওয়া হবে এবং তাঁরা পুলিশের হয়ে বন্দুক ধরুন এমনটাই চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো অনেক মাওবাদী বন্দুক ছেড়ে আত্মসমর্পণ করে মূলস্রোতে ফিরেছেন। অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া চাকরিও করছেন। কিন্তু অনেকেই ন’বছর আগে আত্মসমর্পণ করেও এখনও মুখ্যমন্ত্রীর সেই প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি বলে অভিযোগ উঠল। এদিন বিরিহাঁড়ি গ্রামে মাওবাদী নেতা উমাকান্ত মাহাতোর শহিদবেদির নীচে বৈঠক করলেন প্রাক্তন মাওবাদী নেতারা। তাঁদের মধ্যে কেউ জয়ন্ত স্কোয়াড, কেউ আকাশের স্কোয়াড, কেউ কিষানজির স্কোয়াড, কেউ শশধরের স্কোয়াড আবার কেউ সুচিত্রা মাহাতোর স্কোয়াডের হয়ে কাজ করতেন। এমন প্রায় ১৫০ জন প্রাক্তন মাওবাদী ওই বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠকে উপস্থিত লক্ষ্মীকান্ত মাহাতো বলেন, ‘‘আমরা বন্দুক ছেড়ে মুলস্রোতে ফিরে এসেছি। আমাদের অনেকের ডিআইবি ফেরিফিকেশনও হয়ে গেছে। কিন্তু কোনও চাকরি পাইনি। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন। তার জন্যই আন্দোলন ছেড়ে সুস্থ জীবনে ফিরেছি। এখন আমাদের কাজ দেওয়া হোক।’’ এখানে উপস্থিত আরেক প্রাক্তন মাওবাদী স্কোয়াড মেম্বার স্বপন হাঁসদা বলেন, ‘‘আমাদের দাবি চাকরি দিলে সবাইকে দেওয়া হোক নয়তো যে কজনকে দেওয়া হয়েছে তাদেরকেও চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হোক। কারণ আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করেছি।’’ বিভিন্ন মামলায় যাঁরা এখন জেলে বন্দি রয়েছেন তাঁদের মুক্তির দাবিও ওঠে এই বৈঠকে।