শেষ আপডেট: 2nd November 2020 08:51
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: চরম বিপাকে শস্যগোলার কৃষকরা। মমতা স্বর্ণ প্রজাতির ধান চাষ করে তাঁদের সর্বসান্ত হতে বসেঠেন বলে অভিযোগ করছেন গলসির কৃষকরা।
গলসি ১ নম্বর ব্লকের লোয়াপুর ও কৃষ্ণরামপুর অঞ্চলের চাষিরা প্রায় চারশো বিঘে জমিতে মমতা স্বর্ণ ধান চাষ করেছিলেন । এখন তাঁরা দেখছেন ধানের ভিতরে চাল তৈরি হয়নি। বিঘের পর বিঘে জমিতে একই অবস্থা। অধিক ফলনের আশায় কেউ পাঁচ বিঘে তো কেউ দশ বিঘে আবার কেউ বা ১৫ বিঘে জমিতে মমতা স্বর্ণ ধান চাষ করেছেন। কেউ ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে, কেউ মহাজনের থেকে দাদন নিয়ে চাষ করেছেন খরিফ মরসুমে। মরসুমের শেষে ফলন দেখতে না পেয়ে হতাশ এলাকার চাষিরা। সময়মতো সব পরিচর্যা করার পরও বা জমিতে নাগাড়ে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করেও ধানের ফলন একেবারে নেই। তাই এখন মাথায় হাত এলাকার কয়েকশো চাষির।
ধানের ফুল আসার পর চালের পরিবর্তে আগরা অর্থাৎ ফাঁকা শিস তৈরি হয়েছে। বেশিরভাগ জমির ধানই বগা পড়েছে মানে সাদা শিস হয়েছে। মাঠের দিকে তাকালে চোখ ছলছল করছে চাষিদের। কৃষ্ণরামপুরের বাসিন্দা সেখ নুর হোসেন বলেন, ‘‘ভালো ফলনের জন্য চড়াদামে ভাল জাতের মমতা স্বর্ণধানের বীজ কিনে জমিতে চাষ করেছিলাম। এখন ফলন তো ভাল হলই না। উল্টে কী করে সংসার চলবে তা ভেবেই পাচ্ছি না।’’ এলাকার আরেক চাষি ওসমান আলি বলেন, ‘‘বগা আটকানোর জন্য প্রায় প্রতিদিনই জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে। তবুও কিছুতেই কিছু করা যাচ্ছে না। ধারদেনা করে চাষ করা হয়েছে। সেই দেনা কী ভাবে শোধ করা হবে আর সংসার চলবে কী করে তা জানি না।’’
একদিকে করোনা ও তারজন্য লকডাউনের জেরে সব কাজকর্মই শিকেয়। বাইরে থেকে উপার্জনের রাস্তা এখন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় প্রকৃতির মারে যেন সর্বসান্ত হয়ে পড়েছেন এলাকার চাষিরা। কী করে যে পেট চলবে আর কী করে যে ঋণ থেকে মুক্তি পাবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এলাকার ছোট-বড় সব চাষিই। বিঘের পর বিঘে জমি দূর থেকে দেখলে মনে হচ্ছে কাশফুলের বন। কী করবেন ভেবে কুল কিনারা পাচ্ছেন না চাষিরা। এই অবস্থায় তারা সরকারি সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।
গলসি ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি অনুপ চ্যাটার্জ্জী বলেন, ‘‘আমিও মাঠে গিয়ে দেখে এসেছি। মাঠের অবস্থা খুবই খারাপ। ধানের ফলন একেবারেই মার খেয়েছে। সরকারি ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া যায় কি না তা৪ অবশ্যই দেখা হবে।’’