শেষ আপডেট: 19th May 2020 06:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব মেদিনীপুর: শক্তি বাড়িয়ে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় আমফান। বদলে যাচ্ছে আকাশের রং। থমথমে পরিস্থিতি জানান দিচ্ছে দুর্যোগের। মেঘে ঢাকছে দিঘার আকাশও। সমুদ্রের চরিত্র যে বদলে যাচ্ছে তা ধরা পড়েছে বিশেষজ্ঞ ও বাসিন্দাদের চোখেও। ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ডে এক থেকে তিনটি ঢেউ ওঠে। এখন ঢেউ আসছে প্রতি সেকেন্ডে। উচ্চতাও বাড়ছে সেই ঢেউয়ের। এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, প্রতি দুর্যোগের আগেই সঙ্কেত দেয় সমুদ্র। এবারও দুর্যোগ যে তীব্র সেই ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। আর সেই আশঙ্কাতেই ক্ষয়ক্ষতি রুখতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে দিঘা উপকূলে। এই মুহূর্তে দিঘা, তাজপুর, মন্দারমণি, শঙ্করপুর, কোথাও কোনও পর্যটক নেই। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের বাঁচাতে হবে। দিঘা থেকে হলদিয়া পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার উপকূল থেকে ১০ হাজার লোককে ইতিমধ্যেই সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আজ সারাদিন ধরে আরও বহু মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলবে। এই এলাকায় রয়েছে মোট ৩৪টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র। সাধারণ অবস্থায় এক একটি কেন্দ্রে তিন থেকে চার হাজার মানুষ থাকতে পারেন। কিন্তু সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য এখন এক একটি কেন্দ্রে দু’হাজারের বেশি মানুষকে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পার্থ ঘোষ জানান, তাই একটু উঁচু এলাকায় একাধিক স্কুলবাড়িকে এ জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে বাকি লোকেদের থাকার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, ‘‘উপকূল এলাকায় এনডিআরএফ এর টিমের সংখ্যা আরও বাড়ানো হয়েছে। যাঁদের দোতলা বাড়ি, তাঁদের নীচের দিকে নেমে আসতে বলা হয়েছে। কারণ উঁচুর দিকে ঝড়ের ঝাপটা বেশি থাকবে। জানলা-দরজা ভেঙে আহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।’’ এ দিকে গ্রামে জল ঢোকা রুখতে দুর্বল সমুদ্র বাঁধগুলি মেরামতির কাজও শুরু হয়েছে। জামড়া শ্যামপুর, শঙ্করপুর, তাজপুর, জলদা, ভোগপুর ও খেজুরির একটা অংশে সোমবার রাত থেকেই পাথর ও বালির বস্তা ফেলে বাঁধ মেরামতির কাজ চলছে। সেচ দফতর ও ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে কাজে হাত লাগিয়েছেন এলাকার মানুষও। তাঁরা জানান, বাঁচতে হবে, তাই যে কোনও মূল্যে বাঁধ বাঁচাতে হবে। তাই স্বেচ্ছায় শ্রম দিতেও তাঁরা রাজি। তবে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সবাইকেই কাজের মজুরি দেওয়া হবে। বুধবার পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ ও বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপের মধ্যে আছড়ে পড়ার কথা এই সুপার সাইক্লোনের। এ সময় ঝড়ের গতিবেগ ১৯৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা। আর তা যদি হয় তবে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।