দ্য ওয়াল ব্যুরো, কোচবিহার: বিজেপিকে দরকার নেই, তৃণমূলের জন্যই তৃণমূল হারবে বলে প্রকাশ্য সভায় বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি আমাদের কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। ক্ষতি করবেন আমাদের দলে যাঁরা আছেন তাঁরাই।’’
দলের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ জানিয়ে কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামী দল ছাড়ার পরে এখন প্রকাশ্যে বা পরোক্ষে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন অনেক নেতাই। এই নিয়ে কোচবিহারের জেলা রাজনীতি এখন সরগরম। তার ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে রাজ্য রাজনীতিতেও। এই পরিস্থিতিতে রবিবার বিকেলে দিনহাটায় সভামঞ্চে শাসকদলের হেভিওয়েট বিধায়কের এমন বিস্ফোরক মন্তব্যে জেলাজুড়ে আলোড়ন পড়ে যায়।
এদিন উদয়নবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূলের আদর্শ দেখে নয়, আমি দল করতে এসেছিলাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে। বিজেপি থেকে আমার কাছেও অনেক অফার এসেছে। আমি তবেই ওই যাব, যদি আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দেন।’’
এদিনের সভায় তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘‘মাঝখানে দিন দশেক আমি কলকাতায় ছিলাম। এখানে কত কথা রটল। বিজেপিতে যাচ্ছি, এ কথা যেমন রটেছে, তেমনই রটেছে, আমি নাকি দিনহাটা আসনে লড়াই নিশ্চিত করার জন্য টাকা পয়সা নিয়ে রফা করতে গেছি।’’
দলের একশ্রেণির নেতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন,‘‘বিজেপির কেউ আমাদের কোনও ক্ষতি করতে পারবে না, ক্ষতি করবে দলের লোক। এতদিন ডান হাতে কামিয়েছে, এ বার বা হাতেও ভোট দেবে না।’’
অক্টোবরের গোড়ায় দিনহাটার নিগমনগর হাইস্কুলের মাঠে তৃণমূলের এক কর্মীসভায় যোগ দিয়েছিলেন উদয়ন। সেখানে তিনি বলেছিলেন “গত লোকসভা ভোটে আমরা হেরেছিলাম, কারণ আমাদের নেতা-কর্মীরা মানুষের খাবার কেড়ে নিয়েছিল। তার জন্য আমিও কিছুটা দায়ী। কিন্তু একুশের বিধানসভায় জিততে গেলে মানুষের খাবার কেড়ে নিলে চলবে না”।
এখানেই থামেননি দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক। দলের কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমি সব প্রধান-পঞ্চায়েতদের বলব, অনেক খেয়েছেন। ভবিষ্যতে আরও খাবেন। কিন্তু এখন ৬ মাস যদি না খান, মানুষের খাবার মানুষকে দেন, তা হলে পরবর্তী কালে আবার খাবার সুযোগ পাবেন। কিন্তু এখন যদি খান। তাহলে মানুষ আর পরবর্তীকালে খাবার সুযোগ দেবে না।”ওই কর্মিসভার একটি ভিডিও ফুটেজ বাইরে সাংবাদিকদের কাছে আসে। দ্য ওয়াল সেই ভি়ডিওর সত্যতা যাচাই করেনি। তবে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উদয়নবাবু এ কথাগুলো স্পষ্ট করেই বলেছিলেন।
উদয়ন গুহর সেই মন্তব্য নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছিল কোচবিহার তথা রাজ্য রাজনীতি। ফের বিস্ফোরক মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে দিনহাটার বিধায়ক।