মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধনের আগেই রাজ্যের দীর্ঘতম ‘জয়ী’ সেতু নিয়ে কোচবিহারে রাজনৈতিক টানাপড়েন
দ্য ওয়াল ব্যুরো, কোচবিহার: সোমবার রাজ্যের দীর্ঘতম সেতুর উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভার্চুয়ালি উদ্ধোধন হবে মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ি ব্লকের সংযোগকারী ‘জয়ী সেতুর’। তার আগে উদ্বোধন ঘিরে রাজনৈতিক টানাপড়েন তুঙ্গে উঠেছে। সংযোগক
শেষ আপডেট: 1 February 2021 02:50
দ্য ওয়াল ব্যুরো, কোচবিহার: সোমবার রাজ্যের দীর্ঘতম সেতুর উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভার্চুয়ালি উদ্ধোধন হবে মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ি ব্লকের সংযোগকারী ‘জয়ী সেতুর’। তার আগে উদ্বোধন ঘিরে রাজনৈতিক টানাপড়েন তুঙ্গে উঠেছে। সংযোগকারী রাস্তা তৈরির আগেই তড়িঘড়ি সেতু উদ্বোধন করে বর্তমান শাসকদল ভোটের রাজনীতি করছে বলে বিজেপির অভিযোগ। এই সেতু কেন্দ্রের টাকায় তৈরি হয়েছে বলেও দাবি করেছে বিজেপি। অন্যদিকে তৃণমূলের দাবি, রাজ্যের সমস্ত উন্নয়নে ভাগ বসানো বিজেপি অভ্যেস করে ফেলেছে।
তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ি ব্লকের সংযোগকারী ‘জয়ী সেতুর’ দৈর্ঘ্য ২৭০০ মিটার। ২২৪০ মিটার দীর্ঘ ফারাক্কা সেতু এতদিন ছিল রাজ্যে দীর্ঘতম। এবার সেই রেকর্ড ভাঙল জয়ী সেতু।
সেতুর কাজ শেষ হলেও এখনও মেখলিগঞ্জের দিক থেকে সংযোগকারী রাস্তা পুরোপুরি তৈরি হয়নি। পূর্ত দফতর ও প্রস্তুতকারী সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, কুয়াশার জন্য সংযোগকারী রাস্তা তৈরির কাজ ব্যাহত হয়েছে। এছাড়াও করোনা পরিস্থিতি ও ভরা বর্ষায় কাজের ক্ষেত্রে নানান সমস্যা সৃষ্টি হয়। বর্ষার সময় সংযোগকারী রাস্তা কেটে বন্যার জল যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়। এখন পুরোদমে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু চলছে।
আজ মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ি থেকে ‘জয়ী’ সেতুর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করবেন। মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি সেতুর উদ্বোধন না করায় মুখ ভার মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ির বাসিন্দাদের একাংশের। মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত না থাকলেও উদ্বোধনের সময় স্থানীয় প্রশাসন ও তৃণমূল নেতৃত্ব ‘জয়ী’ সেতুতে উপস্থিত থাকবেন৷ পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সেতুর উপর তৃণমূল কর্মীরা মিছিল করবেন বলেও জানা গেছে।

বিরোধীদের অভিযোগ, রাস্তার কাজ শেষ না হতেই ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার আগে তড়িঘড়ি সেতুর উদ্বোধন করা হচ্ছে। পাশাপাশি জয়ী সেতু কেন্দ্র সরকারের টাকায় নির্মিত হলেও উদ্বোধনে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও প্রতিনিধি বা স্থানীয় সাংসদকেও আমন্ত্রণ না জানানোয় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির মেখলিগঞ্জ উত্তর মণ্ডল সভাপতি দধীরাম রায় বলেন, ‘‘ছিটমহল বিনিময়ের জন্য বরাদ্দ টাকা থেকে নির্মিত হচ্ছে সেতুটি। কাজেই সম্পূর্ণ খরচের টাকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তৃণমূল নেতৃত্ব মানুষকে ভুল বুঝিয়ে সেতুর কৃতিত্ব মুখ্যমন্ত্রীকে দিচ্ছে। তবে সাধারণ মানুষকে ভুল বোঝানো যাবে না।’’
সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া বিধায়ক মিহির গোস্বামী এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘পুরো টাকাটাই কেন্দ্রের মোদী সরকারের দেওয়া ছিটমহল বিনিময়ের সময়ে। সেই টাকায় তৈরি সেতু নিজেদের নাম দিয়ে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বাংলার সরকার। এসব সাধারণ মানুষ সব জানেন ও বোঝেন।’’
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতীম রায় বলেন, ‘‘এই সেতু নির্মাণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ। রাজ্যের পূর্ত দফতরের উদ্যোগে এই সেতু তৈরি হয়েছে। সংযোগকারী রাস্তার কাজ শেষ করে খুব দ্রুত এই সেতু সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে।’’