শেষ আপডেট: 28th April 2020 08:05
অনিক মান্না, পূর্ব মেদিনীপুর: মানুষের ভিড় নেই। সেই জায়গা দখল করে নিল পাখিরা। ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসা পরিযায়ী পাখিদের কলরবে ভরে উঠেছে দিঘা। আশেপাশের এলাকা থেকেও ভেসে আসছে কোলাহল।
লকডাউন শুরু হতেই চেনা ছবি ধীরে ধীরে উধাও হয়ে গেছে দিঘা থেকে। পর্যটক নেই। তাই দূষণও নেই। দিঘার শূন্যতা এখন ভরিয়ে তুলছে হাজার হাজার পরিযায়ী পাখি। ভাটার সময় সমুদ্র তটে ঘুরে বেড়াচ্ছে পাখির দল। মোহনাতেও ভিড় জমছে পাখিদের। ছোট ছোট মাছ, ঝিনুক সহ বিভিন্ন খাবারের সন্ধানে ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে তাদের। আবার জোয়ার এলে মোহনার দিকে সমুদ্র থেকে ঢুকে আসা নাসিকা খালের ভেতরে ঢুকে ভেসে বেড়াচ্ছে তারা। কখনও ছোট-বড় গাছের ডালকে আশ্রয় বানিয়েছে এই পাখির দল। আবহাওয়া খারাপ থাকলে অর্থাৎ বৃষ্টি এলে বা দুপুরে দিকে বেশি গরম পড়লে ঘন ঝাউ জঙ্গলে আশ্রয় নিচ্ছে পাখির ঝাঁক।
স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় মিশ্র বলেন, ‘‘এত বছর এখানকার বাসিন্দা আমি। আগে কোনও দিন এত রঙের পাখির ঝাঁক দিঘায় দেখিনি। পাখিদের ডাকে এখন ঘুম ভাঙে আমাদের। সারা দিন কানে আসে কত যে পাখির ডাক।’’
পরিবেশপ্রেমী সত্যব্রত দাস জানান, দেশি-বিদেশি হরেক জাতের পাখি ব্যাপক হারে এসেছে দিঘাতে। তার মধ্যে রয়েছে গ্রে হেরন, হুইসলিং ডাকের মতো নানা প্রজাতির পাখি । তিনি বলেন, ‘‘এমনিতে মোহনায় লাল কাঁকড়া দেখতে ভিড় করেন পর্যটকরা। এই পাখিদের বাসের উপযোগী পরিবেশ যদি ধরে রাখা যায়, তবে বারেবারেই ফিরে আসবে ওরা। তা হবে দিঘার বাড়তি আকর্শন। এর জন্য অবশ্য পরিবেশের ভারসাম্য অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে। ওদের আশ্রয়ের উপযোগী গাছগুলোকে রক্ষা করতে হবে। প্রয়োজনে খাবারেরও ব্যবস্থা করতে হবে।’’
লকডাউনের দেড় মাসে দূষণের পরিমাণ কমে গেছে অনেকখানি। ফলে শহরাঞ্চলেও দেখা মিলছে নানা ধরণের পাখি। তাই দিঘার সমুদ্রতটে তাদের ভিড় অবাক হওয়ার মতো নয়, কিন্তু পরবর্তীতেও তা ধরে রাখাটাই চ্যালেঞ্জ। বলছেন পরিবেশবিদরা।