শেষ আপডেট: 1st April 2020 11:56
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: করোনা রুখতে লকডাউনের জেরে ঘরবন্দি গোটা দেশের মানুষ। কোনও কিছুর পরোয়া না করে কেউ কেউ রাস্তাঘাটে বেরিয়ে আসছেন বটে, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই সরকারি নির্দেশ মেনে নিজেদের আটকে রেখেছেন ঘরে। স্কুল-কলেজ-অফিস কিছুই নেই। সারাদিন সময়টা কী করে কাটাবেন, সেই চিন্তায় অনেকেই। তাঁদের ভাবনার সরিক হতে এগিয়ে এল পাল্লারোডের পল্লিমঙ্গল সমিতি। রসদ নিয়ে দরিদ্রদের পাশে দাঁড়িয়েছেন আগেই। এবার সময় কাটানোর জন্য দাবা আর লুডোর বোর্ড নিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে এই সংগঠনের সদস্যরা। করোনার আশঙ্কা তখন দেখা দিয়েছে সবে। মানুষকে সতর্ক করতে ঘরে ঘরে তাঁরা পৌঁছে দিয়েছেন হ্যান্ড স্যানিটাইজার। গোটা জেলায় সরকারিভাবে যে স্যানিটাইজার সরবরাহ করা হচ্ছে, তার বেশিরভাগটাই তৈরি করছেন এঁরা। এঁদের তৈরি জীবাণুনাশক সরকারি স্তরে সর্বত্র ব্যবহার হচ্ছে। আবার গ্রামে গ্রামে গিয়ে এই স্যানিটাইজার বিলিও করেছেন পল্লিমঙ্গল সমিতির সদস্যরা। এখানেই শেষ নয়, লকডাউনের জেরে যখন রীতিমতো সংকটে দিন আনি দিন খাই মানুষ, তখনও তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে পল্লিমঙ্গল সমিতি। অভাবী মানুষদের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন চাল, ডাল, ময়দা, আটা, বিস্কুট-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস। এর সঙ্গে বারেবারেই হাত ধোয়ার জন্য দিচ্ছেন সাবান আর জীবাণুনাশক। খাবার যোগান তো হলো । স্বাস্থ্য সচেতনতার ব্যবস্থাও নয় করা গেল। কিন্তু এই অখণ্ড অবসর অনেকের কাছে বিরক্তিকর ঠেকছে। একটা ছুটির জন্য হাঁপিয়ে ওঠা অনেক মানুষের কাছেই হঠাৎ পাওয়া এই ছুটিটা দুঃসহ। তাঁদের এই বিরক্তি কাটাতে অভিনব পন্থা নিয়েছেন পল্লীমঙ্গল সমিতির সদস্যরা। প্রত্যেক বাড়িতে একটি করে লুডোর বোর্ড বা দাবার বোর্ড দিচ্ছেন তাঁরা। পল্লীমঙ্গল সমিতির সম্পাদক সন্দীপন সরকার বললেন, ‘‘এরফলে একদিকে যেমন নতুন করে এই বিলুপ্তপ্রায় খেলাগুলোর প্রচলন করা যাবে, তেমনই ঘরে থাকার একঘেয়েমিও কাটবে বলেই আমরা মনে করি। এখন জনগণ কতটা সাড়া দেন সেটাই দেখার।’’ তবে পল্লিমঙ্গল সমিতির এই ভাবনাকে এলাকার মানুষ যথেষ্টই স্বাগত জানিয়েছেন বলেই খবর।