শেষ আপডেট: 8th July 2024 16:17
দ্য ওয়াল ব্যুরো, শিলিগুড়ি: শুধু কালিম্পং নয়, এবার ভরা বর্ষায় পরের পর ধস নামছে দার্জিলিঙেও। প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ধসের জেরে বিপর্যস্ত হচ্ছে পাহাড়বাসীর জীবন। রবিবার ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কের পাগলাঝোরার কাছে ফের রাস্তা ধসে যায়। ধস নামে সেবক এবং ২৭ মাইলের রাস্তাতেও। সিকিমগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের পর বন্ধ হয়ে যায় দার্জিলিংগামী ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরিকল্পিত নির্মাণের জেরে পাহাড়ের খাঁজে জল আটকে পাহাড়কে দুর্বল করে তুলছে। এরই জেরে বিপদ ঘনাচ্ছে পাহাড়ে।
এবার বর্ষার মরশুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই বারবার ধসে বিধ্বস্ত হয় ১০ নম্বর ও ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক। শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং ও প্রতিবেশী রাজ্য সিকিমের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের মাধ্যম এই সড়ক। কালিম্পং ও সিকিমের লাইফ লাইনও বলা হয় একে। এই রাস্তায় ধস নামার পাশাপাশি দার্জিলিংগামী ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কের প্রায় ৪৫ মিটার লম্বা অংশজুড়ে ভেঙে যাচ্ছে রাস্তা।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক রঞ্জন রায় সংবাদমাধ্যমকে জানান, পাহাড়ের তলদেশ লাগাতার ক্ষয় করছে তিস্তা। এই চোরা ভাঙন উপর থেকে বোঝার উপায় নেই। হঠাৎ করেই ধসে যাচ্ছে বিশাল অংশ। অপরিকল্পিতভাবে নদীতে বাঁধ তৈরি সহ আরও নানা নির্মাণের কারণেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জাতীয় সড়ক- সহ কালিম্পংয়ের বিস্তীর্ণ অংশ রক্ষা করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
অন্যদিকে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের শিক্ষক রূপককুমার পালের বক্তব্য, "রাস্তার গার্ডওয়াল নির্মাণের সময় ফুটো না রাখায় সমস্যা হচ্ছে। পাহাড়ের খাঁজে আটকে থাকা জল তীব্র গতিতে পাহাড় ধসিয়ে দিচ্ছে।" অনেকের মতে,পাহাড়ের ঝোরাগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়াও ধসের অন্যতম কারণ।
কয়েক দিনের মধ্যে দার্জিলিং ও কার্শিয়াং পাহাড়ে প্রায় ১৫টি জায়গা ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ধস বিশেষজ্ঞ প্রভাকর রাওয়ের বক্তব্য, "টানা বর্ষণ পাহাড়ে নতুন কোনও ঘটনা নয়। কিন্তু শহরের মাঝে এত ধস নামার কারণ অন্য। এর মূলে রয়েছে একের পর এক বড় বিল্ডিং নির্মাণ। তাছাড়া বৃষ্টির সময় পাহাড়ে বিপদ ডেকে আনছে নিকাশি ব্যবস্থাও।"
এই পরিস্থিতিতে পাহাড় নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ পরের পর ধস বিপদ সঙ্কেত দেখাচ্ছে দার্জিলিং ও কালিম্পং দুই শহরেই।